প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মাওবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটিঃ নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টির বিজয় দেশে তীব্রতর হওয়া শোষণ, নিপীড়িন ও ফ্যাসিবাদের ইঙ্গিত ! ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ফ্যাসিবাদীদের হুমকির বিরুদ্ধে সকল বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করুন! ব্যাপক সংগ্রাম গড়ে তুলে একে মোকাবেলা করুন! (১৯ মে ২০১৪)

[সিপিএমএলএম বাংলাদেশ কর্তৃক অনুদিত]
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
১৯ মে ২০১৪
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মাওবাদী)
কেন্দ্রীয় কমিটি ।

নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টির বিজয় দেশে তীব্রতর হওয়া শোষণ, নিপীড়িন ও ফ্যাসিবাদের ইঙ্গিত !
ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ফ্যাসিবাদীদের হুমকির বিরুদ্ধে সকল বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করুন! ব্যাপক সংগ্রাম গড়ে তুলে একে মোকাবেলা করুন!

redindia

তথাকথিত বিশ্বের সর্ব বৃহৎ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হিসাবে ১৬তম লোক সভা নির্বাচন এক অভূতপূর্বভাবে নয়টি পর্যায়ে সমাপ্ত হলো। প্রায় ৭০ লক্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তা আর লক্ষ থেকে কোটি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল উক্ত কর্ম সম্পাদনের জন্য। এই কর্মযজ্ঞ অনুষ্ঠানের জন্য জনগণের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন দাবী করেছে তা নাকি করা হয়েছে “একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য”। দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে এই ধরনের অর্থহীন সংসদ নির্বাচনের জন্য মারাত্মক ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। আমাদের পার্টি সিপিআই (মাওবাদী), কাশ্মীরের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনসমূহ এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিশেষ করে মনিপুর এলাকার কিছু শক্তি এই মেকী নির্বাচন বয়কটের আহবান জানিয়েছিল । কেবল মাত্র এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে মানুষের বাড়ন্ত রোষ থেকে রক্ষার জন্য সারাদেশে এবং নির্দিষ্টত যে সকল এলাকায় জনগণের সংগ্রাম চলছে সেই সকল এলাকায় বিশাল সশস্ত্রবাহিনী নিয়োজিত করা হয়েছিল। ভারতের সশস্ত্রবাহিনীসমূহের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণাধীনে তথাকথিত গণতন্ত্রের নির্বাচনী মহড়াকে একটা যুদ্ধের মত করে চালানো হয়েছে। নজিরবিহিন ভাবে নির্বাচন কমিশন সশস্ত্রবাহিনী ব্যবহার করে ২০০৯ সালের ১৫তম লোক সভা নির্বাচনের সময় থেকে তখনকার মত এবারও ভোট দানের জন্য ও তার হার বৃদ্বির জন্য দেশের সাধারণ জনগণকে প্রলুব্ধ করার অনেক নয়া নয়া ছলনা করেছে। পর্দার আড়লে ছিলো সাম্রাজ্যবাদি এজেন্সীগুলোর সব ধরণের সহায়তা, আর একে কাজে লাগিয়ে দেশের কর্পোরেট সেক্টর সরাসরি নির্বাচনী কসরতে প্রবেশ করেছে “ভোটের অধিকার” এর গুরুত্বকে তুলে ধরতে ঢোল ডপকি নিয়ে মাঠ গরম করেছে। কর্পোরেট মিডিয়াকে ব্যবহার করে, পার্লামেন্টারী পার্টিগুলো বরাবরের মতই জনগনের সামনে নানা মিথ্যা আশ্বাস ও প্রতিজ্ঞা করে নির্বাচনী রাজনীতিতে তাদেরকে সম্মোহিত করার প্রয়াস চালিয়েছে, আর একে কেন্দ্র করে একটা ঢেউ তোলা হয়েছিল। যে সকল এলাকায় জনগণ সংসদীয় ব্যবস্থার প্রতি অধিকতর সমালোচনামুখী, সেই সকল এলাকায় জনগণের উপর ভোট প্রদানের জন্য প্রবল চাপ প্রয়োগ করা হয়। অথচ দাবি করা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন নাকি নির্বাচন সফল করতে প্রবল প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অর্থ ও পেশি শক্তির প্রভাব কমিয়েছে। এই ধরনের দাবীর ভ্রান্তি প্রমাণ করে সকল পার্টি জনগণের সামনে নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে শীর্ষ লুটপাটের কেলেংকারীর হোতা, গ্যাংস্টার এবং অপরাধীদের হাজির করে। দেশের ব্যাপক অধিকাংশ মানুষ যে মূল সমস্যায় জর্জরিত সেইসব সমস্যা সম্পর্কে একটি দলও কোন বক্তব্য তুলে ধরেনি। নির্বাচনী প্রচারনার সময় প্রতিদ্বন্দ্বী দল ও প্রার্থীগন পরস্পরকে আক্রমনে কেন্দ্রীভূত হয়ে একে অপরের গণবিরোধী চরিত্র, প্রতিক্রিয়াশীল ও স্বজনপ্রীতির তৎপরতা, লুটপাটের কেলেংকারী ও দুর্নীতির অনুশীলনকে উন্মোচিত করেছে। সকল পার্টি ও প্রার্থীগণ বিপুল্ভাবে কালো টাকা, পেশিশক্তি, ধর্ম, বর্ণ, আঞ্চলিকতাবাদ, মাদক, নেশাদ্রব্য ও নানা জোর জবরদস্তি অথবা বলপ্রয়োগের আশ্রয় নিয়েছে। উদাহরন হিসাবে উল্লেখ্য যে, সেই সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২০০ কোটি নগদ টাকা ও প্রায় ২ কোটি লিটার মদ নির্বাচনে প্রার্থীদের দখল থেকে উদ্বার করে যা ভোটারদের মাঝে বিতরণের জন্য মজুদ করা ছিল। আসলে এটা তো কিছুই না। এটা হলো সমূদ্রে ডুবন্ত বিশাল বরফ খন্ডের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। কর্পোরেট মিডিয়া নিজেই ফাঁস করেছে যে ৩০,০০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে কেবল নরেন্দ্র মোদির পক্ষে প্রচার ও তাকে এগিয়ে নিতে। যদিও প্রতিটি প্রার্থীর জন্য কর্তৃপক্ষ ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করার সীমা দিয়েছিল কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল প্রতি প্রার্থী গড়ে ৮ কোটি টাকা খরচ করেছেন তাদের নির্বাচনী লড়াইয়ে। এই তথাকথিত বৃহত্তম নির্বাচনের অন্তসারশূন্য চরিত্র এসব উন্মোচিত তথ্য থেকে বোঝা যায়।
বিগত দশ বছর কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকা কালিন সময়ে অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল, গণবিরোধী ও বিশ্বাসঘাতক ভূমিকা পালন করেছে আর ব্যাপক আগ্রাসীভাবে সাম্রাজ্যবাদিদের ও শাসক শ্রেনীর স্বার্থ রক্ষা করেছে। দেশ ও জনগণের বিরুদ্বে সর্বপ্রকার অপরাধ সংঘটিত করেছে। ফলে তাদের আসন সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এমন কি তা কমে ৫০ এর নিচে নেমে এসেছে। এটা তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ নির্বাচনী পরাজয় ।
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ জনগণের রয়েছে তাকে ব্যবহার করে মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মত এক অকংগ্রেসী পার্টি হিসেবে সংসদে আবির্ভূত হয়েছে। তার দল এককভাবেই পেয়েছে ২৮২ আসন এবং এনডিএকে নিয়ে জোটবদ্বভাবে ৫৪৩ আসনের মধ্যে পেয়েছে ৩৩৪ আসন। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগেই বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত আধা সামরিক বাহিনী নিয়োযিত করা হয়েছে, এর সশস্ত্র বাহিনী ঘেরাও ও অনুসন্ধান অপারেশন তীব্রতর করেছে ১৪টি রাজ্যের বিপ্লবী এলাকাসমূহে, জাতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামরত কাশ্মীর, উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ও অন্যান্য অঞ্চলের যে সকল এলাকায় জনগণের গণপ্রতিরোধ চলমান সেখানে। প্রথম দেশব্যাপী ২৬শে ডিসেম্ভর ২০১৩ থেকে ১লা জানুয়ারী ২০১৪ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী ৯ রাজ্যে ৪০,০০০ অতিরিক্ত আধাসামরিক বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ বাহিনী দ্বারা দমন অভিযান পরিচালিত হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ ২০১৪ দমন অভিযান পরিচালিত হয় মাওবাদী আন্দোলন সক্রিয়ভাবে চলমান ৬টি রাজ্যে যাতে ৭০ ইন্সপেক্টর জেনারেলের নেতৃত্বে অংশ নেয় ১,০০,০০০ আধা সামিরিক বাহিনী এবং ৪ টি ইস্রাইলি গোয়েন্দা বিমান সহ ৬০০০ কমান্ডো, রাডারযুক্ত বিপুল মাইন সনাক্ত করতে সক্ষম যান। এইসব প্রতিবিপ্লবী অভিযানের লক্ষ্য ছিলো আন্দোলনকে দমন করা আর তাদের তথাকথিত ‘গণতান্ত্রিক’ নির্বাচন করার জন্য জনগণের মধ্যে শ্বেতসন্ত্রাস কায়েম করা। এই বাহিনীগুলো বিপ্লবী ও জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের এলাকাসমূহে শত শত রাজনৈতিক কর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। বিরাট সংখ্যক জনগণ ও রাজনৈতিক কর্মীকে আটক করে নির্যাতন চালিয়েছে, যা থেকে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ কেউই রেহাই পায়নি। গ্রামগুলি আক্রমণ করে তার অধিবাসিদের সমবেতভাবে নির্মম প্রহার করেছে। ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে বন্দুকের ডগায় নির্বাচন করা হয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকায় ভোট বয়কটের ডাক দেয়ায় হুরিয়াত কনফারেন্সের নেতাদের ডিটেনশনের প্রতিবাদে রাজ্যব্যাপী ২১ এপ্রিল যে বন্ধ পালিত হয় তাতে ব্যাপক সাড়া পড়ে ও সফল হয় এবং তাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য রাজ্য বাহিনীগুলোর নির্যাতন ও নিপীড়নের ও সেইসাথে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসসমেত কারফিউএর প্রতিবাদ জানান মানুষ। অস্ত্র উচিয়ে রাখা সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে কাশ্মিরীরা পাথর নিক্ষেপ করে রাস্তায় খণ্ডযুদ্ধ করেন কারফিউ ও অন্য সকল নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে। এত বলপ্রয়োগ ও ভীতিপ্রদানসত্ত্বেও এবং সন্ত্রাসের এক পরিবেশ তৈরি করার পরও, নির্বাচন কমিশনের ৯০% ভোট পড়ার লক্ষ্য থেকে অনেক কম ভোট পড়েছে। অফিশিয়াল রিপোর্ট মতে কেবল ৬৬% ভোট পড়েছে। জাল ভোট প্রদান ও কেন্দ্র দখল করে ভোট আদায় ধরলে সত্যিকার ভোট পড়ার হার হবে অনেক অনেক কম, টাকা দিয়ে ভোট ক্রয় করা, শক্তি প্রয়োগ, রাষ্ট্রযন্ত্র ও সশস্ত্র বাহিনীকে যথেচ্ছ ব্যবহার করা হয়েছে এই নির্বাচনী ভণ্ডামিতে, যাতে সকল প্রধান পার্লামেন্টারি পার্টি যুক্ত ছিল। সেদিন নির্বাচনী কর্মকর্তা ও জিনিসপত্র পরিবহন করার জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনীর আর ভারতীয় ও বিদেশী প্রাইভেট কোম্পানীগুলোর অসংখ্য হেলিকপ্টার ও বিমান নিয়োজিত করা সত্ত্বেও বিপ্লবী ও জাতীয় মুক্তি আন্দোলন শক্তিশালী এমন সব এলাকায় অনেক নির্বাচনী বুথকে পুলিশ স্টেশনসমূহে ও আধা সামরিক বাহিনীর ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়েছে এই অযুহাতে যে ঐ সকল এলাকায় ভোট করা কঠিন হবে। ঐ বুথগুলোতে ব্যাপকভাবে জাল ভোট প্রদান করা হয়েছে। এত কিছুর পরও ৫-২০% এর বেশী ভোট পড়েনি দণ্ডকারণ্য, বিহার-ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, অন্ধ্র-ঊড়িষ্যা সীমান্ত এবং অন্য এলাকাসমূহে যেখানে বিপ্লবী গণকমিটি অস্তিত্বশীল এবং মাওবাদী আন্দোলন শক্তিশালী। আর কাশ্মীরে নির্বাচনপূর্ব রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পরও কর্তৃপক্ষীয় দাবি মতেই মাত্র ২৭% ভোট পড়েছে। নির্বাচনের প্রেক্ষিতে উপত্যকায় আজাদ কাশ্মীরের শ্লোগান পুনরায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ‘নির্বাচিতদের ফেরত পাঠানোর’ জনগণের অধিকারকে অস্বীকার করার জন্য না ভোট দেয়ার ‘বিকল্প’ নিয়ে আসা হয়েছে। কোন বিকল্প না পেয়ে আর রাজনৈতিক পার্টিসমূহ ও সশস্ত্র বাহিনীগুলির হুমকির কারণে এক কোটিরও বেশি ভোটার না ভোট দিয়েছেন। এটা প্রধানতঃ এ কারণে যে যারা ভোট দিতে চান না তাদের প্রায়শঃই সন্ত্রাসবাদী অথবা মাওবাদী হিসেবে অভিহিত করা হয়। ভোট বয়কটের আহবানে সাড়া দিয়ে বিপ্লবী ও জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের এলাকাসমূহে জনগণ, আর গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও বিতাড়ণ বিরোধী আন্দোলন চলমান এমনসব এলাকার জনগণ তাৎপর্যপূর্ণ সংখ্যায় সরকারের গণবিরোধী নীতি ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এই ভুয়া নির্বাচন বর্জন করেছেন। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)র কেন্দ্রীয় কমিটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শত হুমকি ও ভয়ভীতি মোকাবেলা করে বিদ্রোহ এবং ভোট বয়কটের সাহসিকতার জন্য তাদের সকলের প্রতি বিপ্লবী অভিনন্দন জানাচ্ছে। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিসমূহের বিরুদ্ধে আমাদের পিএলজিএ (গণমুক্তি গেরিলা বাহিনী – বাংলা অনুবাদক টিম)র লাল যোদ্ধারা দণ্ডকারণ্য (ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র), বিহার, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, অন্ধ্র-ওড়িষ্যা সীমান্ত এলাকা ও অন্যান্য অঞ্চলে অনেক বীরত্বব্যাঞ্জক আক্রমণ পরিচালনা করেছেন আর শত্রু বাহিনীর বেশ কিছু ক্ষতিসাধন করেছেন ও অনেক অস্ত্র-গোলাবারুদ দখল করেছেন। খুবই দুঃখজনকভাবে, আমাদের পিএলজিএ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বহনকারী কিছু গাড়িকে পুলিশের গাড়ী মনে করে এমবুশ করে যাতে নির্বাচনী কাজে জড়িত কিছু কর্মচারী ভুলভাবে নিহত অথবা আহত হন। আমাদের পার্টির সম্পর্কিত ইউনিট ইতিমধ্যেই জনগণের কাছে এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এজন্য আমরা আবারো জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি আর নিহতদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের প্রতি পার্টি গভীর সমবেদনা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।
এই ভূয়া ও হাস্যকর নির্বাচনে বিজেপি দাবী করেছে তারা নাকি অভূতপূর্ব এক ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করেছে। তবে মজার বিষয় হলো তারা যে ভোট ভাগে পেয়েছে তা ৩৫% এর বেশি নয় । তথাকথিত বিশ্বের বৃহত্তম এই গণতান্ত্রিক দেশের প্রদত্ত ভোটের স্রেফ ৩৫% ভোট প্রাপ্তিকে একটা পার্টি যখন ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে তাকে দেউলিয়াত্ব না বলে এর কী বলা যাবে? এই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে আরো একবার দুর্নীতির কেলেংকারীর নায়ক, গ্যাংস্টার ও অপরাধীরা ক্ষমতায় আসীন হলো পার্লামেন্টারি ব্যবস্থার অন্তসারশুণ্যতা উন্মোচিত করে। সঙ্ঘ পরিবারের সৌজন্যে ও নির্বাচনে পুর্ণ অংশগ্রহণসমেত তাদের কর্তৃক নরেন্দ্র মোদি বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হয়েছে। যেভাবেই হোক, মোদির নেতৃত্বে বিজেপি এক অভূতপূর্ব বিজয় পেয়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএকে অপমানজনক ভাবে পরাজিত হতে হয়েছে। ইউপিএ সরকারের শাসনামলে নয়া উদারনৈতিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগত নানা কর্মনীতি ব্যাপকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, অভূতপূর্ব দুর্নীতি ও প্রতারণা দৃশ্যমান হয়েছে, দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুঁয়েছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় জনগণের প্রবেশের সুযোগ শোচনীয়ভাবে কমেছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়া, উচ্চহারের বেকারত্ব, শ্রমিক ছাঁটাই, কৃষকদের আত্মহত্যা, নারীদের ওপর বর্বরতা ও নির্যাতন, সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধি, অনাহার, ব্রাহ্মণ্য জাতপাতবাদী শক্তিগুলি কর্তৃক দলিতদের ওপর অত্যাচার, নিপীড়িত জাতিসমূহের অধিকার দাবিয়ে দেয়া, আদিবাসী ও নিপীড়িতদের তাদের জল–জংগল-জমিন, হক-অধিকার আওউর ইজ্জত ( জল-জংগল-জমি এবং ন্যায়, অধিকার ও সম্মান ) থেকে বঞ্চিত করা, বিতাড়িতকরণ বিরোধী আন্দোলন ও পৃথক রাজ্যের জন্য আন্দোলনের ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ণ বিশেষত তেলেঙ্গানা ও গোর্খাল্যান্ডে, ব্যাপক পরিবেশ ধ্বংস করা প্রভৃতি ছিল কংগ্রেস ও তার মিত্রদের ওপর জনগণের ক্রোধ ঘনীভূত হওয়ার প্রধান কারণ। ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে গণরোষ এবং আন্না হাজরে-আম আদমি পার্টি সূচিত দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনকে বিজেপি নির্বাচনী বিজয় লাভে সফলভাবে ব্যবহার করেছে। পর্দার আড়ালে থেকে বিজেপি–আরএসএস মুসলিম বিরোধী আক্রমণ সংগঠিত করে আর সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে হিন্দু ধর্মীয় উগ্রবাদকে উস্কে দেয়, বিশেষত উত্তর প্রদেশের মুজাফফরাবাদ ও সামিলি এলাকায় হামলা করে, যাতে আরএসএস কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। উত্তর পূর্বাঞ্চলে, নির্দিষ্টত আসামে বিজেপি কথিত বাংলাদেশী মুসলিম অভিবাসিদের বিরুদ্বে হিন্দুদের কিছু পরিমাণে সমাবেশিত করে তাদের ভোট টানতে সক্ষম হয়েছে। উপরের তথ্যগুলো বিজেপির এই দাবির অসারতা প্রমাণ করে যে তারা ধর্ম, বর্ন, সম্প্রদায় ও লিঙ্গগত সকল বিভাজন নির্বিশেষে ভোট পেয়েছে। বস্তুত, মুসলিম ও দলিতদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট বিজেপি পায়নি। বিজেপির জয়ের পেছনে সমগ্র ভারতে যে কোন ‘মোদি ঢেউ’ নেই তা কেরালা, উড়িষ্যা, বাংলা, তামিলনাড়ু, তেলাঙ্গানা, সীমান্ধ্র ইত্যাদি এলাকার নির্বাচনী ফলাফল থেকে দেখা যায় যেখানে বিজেপি ভাল ফল করেনি। ত্রিপুরা, অরুনাচল প্রদেশ এবং সিকিমেও এনডিএর প্রতিপক্ষ পার্টিগুলো জিতেছে। তথাকথিত মোদি ঢেঊ হল বৃহৎ কর্পোরেশনসমূহ ও তাদের কর্পোরেট মিডিয়ার যৌথ সৃষ্টি। সাম্রাজ্যবাদীরা, বহুজাতিক কর্পোরেশনসমূহ, বৃহৎ মুৎসুদ্দি আমলাতান্ত্রিক বুর্জোয়ারা ও বৃহৎ ভুস্বামীগণ নরেন্দ্র মোদিকে তুলে ধরেছে শাসক শ্রেণীর নয়া উদারনৈতিক পলিসির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য এবং হিটলারের মত ফ্যাসিবাদকে নিয়ে আসতে চাইছে তাদের স্বার্থকে অধিকতর কার্যকরভাবে সেবা করতে। বস্তুত, কংগ্রেস সমগ্রভাবে উন্মোচিত ও মান হারিয়েছে এক আপাদমস্তক গণবিরোধী, প্রতিক্রিয়াশীল ও দুর্নীতিগ্রস্ত পার্টি হিসেবে। জনগণের ক্ষোভকে লক্ষ্য করে, ভারতীয় শাসকশ্রেণী ও সাম্রাজ্যবাদীরা বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর আকারে আরেকটা শাসক শ্রেণীকে তুলে ধরেছে মনমোহন সিং এর জায়গায় জনগণের কাছে এক বিকল্প হিসেবে কেবল তাদের আরেক পাঁচ বছরের জন্য পার্লামেন্টারি মরীচিকায় বেঁধে রাখতে। এই নির্বাচনে ইউপিএ সাংসদরা বিশেষত কংগ্রেস রাজস্থান, গুজরাট, সীমান্ধ্র, দিল্লী এবং আরো কিছু এলাকা থেকে উচ্ছেদ হয়েছে। প্রায় সকল অন্যান্য রাজ্যে কংগ্রেস অতি অল্প আসনে নেমে গেছে। কিছু সংস্কারবাদী বোলচাল সত্ত্বেও, এএপি ভাল করতে পারেনি কারণ জনগণের ও দেশের মৌলিক সমস্যার ব্যাপারে ও এমনকি জনগণ কর্তৃক মোকাবেলা করা কিছু জ্বলন্ত ইস্যুর ব্যাপারেও এর কোন পরিষ্কার অবস্থান নেই। এসপি, বিএসপি, আরজেডি, জেডি(ইউ), ডিএমকে ও সিপিআই(এম) এর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট ও অন্যান্য আঞ্চলিক পার্টিগুলো যারা মনোমোহন সিং সরকারের একই পলিসিসমূহের প্রবক্তা ছিল, যা ছিল দুর্নীতি, শোষণ, নিপীড়ণ ও সুবিধাবাদের পংকে নিমজ্জিত, তাদেরকে একই লজ্জাজনক পরাজয় বরন করতে হয়েছে। ডিএমকে, বিএসপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্স ধুয়ে মুছে গেছে পার্লামেন্টে কোন উপস্থিতি না রেখে। উড়িষ্যায় বিজেডি চতুর্থ বারের মত ক্ষমতায় এসেছে পার্লামেন্টে কোন কার্যকর বিরোধি না থাকায়। অন্ধ্র প্রদেশে তেলেগু দেশম পার্টি ও টিআরএস কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভের সুযোগ নিয়ে বিজয় হস্তগত করেছে। কাশ্মীরে ন্যাশনাল কনফারেন্সকে কংগ্রেসের সাথে ঘোঁট বাঁধা ও কাশ্মীরের জাতীয় মুক্তি আন্দোলন ধ্বংস করা ও বিলোপ করার লক্ষ্যযুক্ত পলিসির মূল্য দিতে হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে পার্লামেন্টে সাধারণ সংখ্যারিষ্ঠতা নিরাপদ করার পর বিজেপি বৃহৎ মানসিকতার অভিনয় করছে এবং তার সহযোগী এনডিএর সহায়তায় দেশ পরিচালনার অঙ্গীকার করছে। তারা এই প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে যে যেসকল ভোটার ও সামাজিক গোষ্ঠী তাদেরকে ভোট প্রদান করেননি তাদের জন্যও তারা কাজ করবে। মোদি নিজে তার নির্বাচনী বিজয়ী ভাষনে বলেছে, “এই বিজয় ভারতের বিজয়”, আর “ভারতকে স্বনির্ভর করা হবে” এবং “আচ্ছা দিন আনে ওয়ালি হ্যায়” (সুখের দিন আসছে)। তা শুনে কিছু লোক বিভ্রমে পড়েছেন যে এটা বুঝি ‘ভাল সরকার’ এর শুরু, আর মোদি ‘পরিবর্তন’ নিয়ে আসবে।
অনেকে আবার সরলতাবশতঃ বিশ্বাস করছেন যে মোদি গুজরাটে যেমনটা করেছিল সেই একইভাবে হিন্দু ফ্যাসিবাদি কায়দায় সরকার পরিচালনা করবে না বরং তিনি উন্নয়ন কর্মসূচির ভিত্তিতে করবেন। অনেকেই এ ও আশা করেন যে, ২০০২ সালের গুজরাট কর্মসুচির দিন গত হয়েছে এবং সকল গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের প্রতি সমান আচরণ করা হবে, দূর্নীতি দেখা হবে, বেকারদের চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে মোদির শাসনাধীনে প্রভৃতি। যাহোক, মোদি ও ব্রাহ্মন্যবাদী হিন্দুত্ববাদের অন্যান্য প্রবক্তারা কখনোই ঐসব আকাঙ্খা পুরণ করবেনা। বিপরীতে, ইউপিএ সরকারের প্রযুক্ত নয়া উদারনৈতিক পলিসিগুলো এখন মোদির নেতৃত্বে এনডিএ সরকার এমনকি আরো আগ্রাসীভাবে বাস্তবায়ন করবে। সকল ক্ষেত্রে জনগণের জীবনযাত্রার আরো অবনতি ঘটবে।
পার্লামেন্টে মোদির নেতৃত্বে এনডিএর পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা, পার্লামেন্টে কোন শক্তিশালী বিরোধীর অনুপস্থিতি, এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই যে আরএসএস/বিজেপির হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা হচ্ছে আসন্ন ফ্যাসিবাদী আক্রমণ অভিযানের ইঙ্গিত। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার বেশি সময় নেবেনা তার ফ্যাসিবাদী, সাম্রাজ্যবাদপন্থী, ফেডারেল বিরোধী ও ভারতীয় সম্প্রসারণবাদী চেহারা উন্মোচন করতে, যখন একইসাথে তারা জনগণের ম্যান্ডেটকে তাদের গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের ন্যায্যতা প্রতিপাদন করতে ব্যবহার করবে।
শ্রমিক, কৃষক, মুসলিম, দলিত ও অনান্য নিপীড়িত জনগণ শীঘ্রই নিজেদের বাড়ন্ত নির্যাতনের মধ্যে খুঁজে পাবেন বিজেপি সরকার তার ফ্যাসিবাদি চেহারা উন্মোচিত করার সাথে সাথে। মোদি চক্র, বৃহৎ মুৎসুদ্দি ও বৃহৎ ভুস্বামীরা তার ‘গুজরাট মডেল’ বিরাটাকারে তুলে ধরছে জনগণের মধ্যে বিভ্রম সৃষ্টির তাদের প্রচেষ্টা হিসেবে। গুজরাট মডেলের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে যাকে বলা হয়েছে ‘হিন্দুত্ববাদের গবেষণাগার’, তা হচ্ছে সকল ধরণের ভিন্নমতের দমন – যার মধ্যে রয়েছে শ্রমিক, কৃষক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষত মুসলমানরা এবং সমাজের অন্যান্য শোষিত ও নিপীড়িত অংশ। এর অর্থ হচ্ছে বিরোধী শিবির এমনকি নিজেদের শিবিরের ভেতর থেকে আসা ভিন্নমতকে দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা, আর বৃহৎ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কর্পোরেশনগুলির জন্য দরজা খুলে দেয়া যাতে তারা ইচ্ছেমত লুটপাট করতে পারে, এবং অন্যান্য একইরকম পদক্ষেপ। এর সাথে যুক্তভাবে, ‘গুজরাট মডেল’ বৈশিষ্টমণ্ডিত হয়েছে গোয়েবলসীয় কায়দায় বৃহৎ মিডিয়াগুলোর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করে জনগণের সকল সমস্যা সমধান করতে সক্ষম এক লৌহ কঠিন নেতা ও এক শক্তিমত্ত পার্টির ইমেজ তৈরি করার মধ্যে। মোদির ফ্যাসিবাদী শাসনের গুজরাট মডেল এখন সমগ্র দেশে সম্প্রসারিত, আর তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি সম্প্রসারণবাদী হুমকি তীব্রতর করেছে। বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহার তার মুসলিম বিরোধী, কাশ্মীরি জাতি বিরোধী ও হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা তুলে ধরতে ভুলে যায়নি।
অন্যান্য বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা, একই ‘সিভিল কোড’ চালু করা, রাম মন্দির স্থাপন করার তাদের প্রতিশ্রুতি। এটা ভারতের জনগণের জন্য এক হুমকি, সেইসাথে এটা অস্তিত্বশীল হুমকি সশস্ত্র কৃষি বিপ্লবী যুদ্ধ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও নিপীড়িত জাতিসমূহ, দলিত ও অন্যান্য নিপীড়িত সম্প্রদায়সমূহের জন্য।
বর্তমান কালের বিশ্বব্যাপী এক বাড়ন্ত ধারা হিসেবে ফ্যাসিবাদের উদ্ভব হয়েছে গভীরতর হওয়া সাম্রাজ্যবাদী সংকটের প্রেক্ষাপটে, এই সংকটকে ও বাড়ন্ত বিপ্লবী, জাতীয় মুক্তি ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করতে। নয়া উদারনৈতিক পলিসিসমূহকে কার্যকরীভাবে প্রয়োগ করতে সাম্রাজ্যবাদী ও তাদের মিত্ররা নয়া ফ্যাসিবাদী ধরণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটা ভারতেও লক্ষ্যনীয়। এটা আমাদের দেশের বিপ্লবী, গণতান্ত্রিক শক্তি ও জনগণের সামনে এক চ্যালেঞ্জ। তাই, ভারতের নিপীড়িত জনগণ, নিপীড়িত জাতিসমূহ, দেশপ্রেমিক, জনগণের পক্ষের ব্যক্তি ও সংগঠনসমূহ, ছাত্র ও যুব, বুদ্ধিজীবি ও অন্যান্য প্রগতিশীল শক্তিসমূহকে অনুধাবন করতে হবে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ফ্যাসিবাদের বৃদ্ধি যে হুমকী সৃষ্টি করেছে তাকে। সকল বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক সংগঠন, শক্তি, ব্যক্তি এবং ব্যাপক জনগণকে সকল শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্টত গেরুয়া ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করে ব্যাপকভিত্তিক ও প্রচণ্ড গণ আন্দোলন গড়ে তোলা আমাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। পাশাপাশি জনগণের দৈনন্দিন মৌলিক সমস্যাগুলি সমাধানে সংগ্রাম একইসাথে চালাতে হবে। সংগ্রাম বিনা জনগণের কোন অধিকারই জয় করা যায়না। কেবলমাত্র সকল সংগ্রামী শক্তিসমূহকে ঐক্যবদ্ধ করে, দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধকে রক্ষা, তীব্রতর ও বিস্তৃত করে, সশস্ত্র কৃষি বিপ্লবকে অক্ষে রেখে নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লবকে সম্পাদন করে আমাদের জনগণের ও দেশের মৌলিক সমস্যাসমূহের সমাধান করা সম্ভব, আর সম্ভব সকল প্রতিক্রিয়াশীল, ফ্যাসিবাদী ও প্রতিবিপ্লবী আগাছা উৎপাটিত করা।
(অভয় )
মুখপাত্র
কেন্দ্রীয় কমিটি
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)