লিন পিয়াও পার্টি বিরোধী চক্রের সামাজিক ভিত্তি সম্পর্কে — ইয়াও ওয়েন-ইউয়ান (বাংলা ১ম পর্ব)

লিন পিয়াও পার্টি বিরোধী চক্রের সামাজিক ভিত্তি সম্পর্কে

–ইয়াও ওয়েন-ইউয়ান

ইয়াও ওয়েন-ইউয়ান

ইয়াও ওয়েন-ইউয়ান

বাংলা ১ম পর্ব

[মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের একটি দলিল। সাংস্কৃতিক বিপ্লবে সভাপতি মাওয়ের প্রধান চার সহযোগীর একজন ইয়াও ওয়েন-ইউয়ান কর্তৃক রচিত এ দলিলটি প্রথম প্রকাশ করে ১০ মার্চ ১৯৭৫ পিকিং রিভিউ। শীঘ্রই তা পাম্ফলেট আকারে প্রকাশিত হয়। আমরা ইংরেজী কপিটি মার্কসিষ্ট ইন্টারনেট আর্কাইভ (https://www.marxists.org/) থেকে নিয়ে বাংলা অনুবাদ করছি—সর্বহারা পথ]

criticize lin poster 1

বুর্জোয়াদের ওপর একনায়কত্ব পরিচালনার প্রশ্নে একটা পরিষ্কার উপলব্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে সভাপতি মাও সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেনঃ “লিন পিয়াওয়ের মতো লোকেরা যদি ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে তাদের পক্ষে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা প্রবর্তন করা খুবই সহজ হবে। তাই আমাদের কিছু মার্কসবাদী-লেনিনবাদী রচনা অধ্যয়ন করা উচিত।” এটা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশ্ন জন্ম দেয়ঃ লিন পিয়াওয়ের মতো লোকেদের শ্রেণী প্রকৃতি কী? কোন শ্রেণী ভিত্তি লিন পিয়াও পার্টি বিরোধী চক্র জন্ম দিয়েছে? নিঃসন্দেহে এই প্রশ্নে পরিষ্কার উপলব্ধি প্রয়োজন সর্বহারা একনায়কত্বকে সুসংহত করতে, পুঁজিবাদী পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে প্রতিরোধ করতে, সমাজতন্ত্রের ঐতিহাসিক পর্যায়কাল জুড়ে পার্টির মৌলিক লাইন দৃঢ়ভাবে প্রয়োগ করতে আর ধাপে ধাপে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে যাতে বুর্জোয়াদের অস্তিত্বমান হওয়া বা নতুন বুর্জোয়াদের আবির্ভাব অসম্ভব হয়।

সকল সংশোধনবাদীদের আর সংশোধনবাদী চিন্তাধারারার ধারার ক্ষেত্রে যা ঘটে, সেই একইভাবে লিন পিয়াও ও তার সংশোধনবাদী লাইন আকস্মিক কোন ব্যাপার নয়। লিন পিয়াও ও তার চক্র সমগ্র পার্টি, সমগ্র সৈন্য বাহিনী ও সমগ্র দেশের জনগণ থেকে অতি বিচ্ছিন্ন ছিল; কিন্তু সমাজে এক গভীর শিকড়যুক্ত শ্রেণীভিত্তি আছে যা এই অতি বিচ্ছিন্ন লোকদের দঙ্গলকে উৎপাদন করেছে যারা নিজেদেরকে বর্ণনা করেছে “আকাশে উড়ন্ত মুক্ত একাকী স্বর্গীয় অশ্বাবলী হিসেবে”।

এটা খুব ভালভাবেই পরিষ্কার যে লিন পিয়াও পার্টি বিরোধী চক্র উচ্ছেদ হওয়া ভুস্বামী ও পুঁজিবাদী শ্রেণীসমূহের স্বার্থ ও উচ্ছেদ হওয়া প্রতিক্রিয়াশীলদের কর্তৃক সর্বহারা একনায়কত্বকে উচ্ছেদ করে বুর্জোয়া একনায়ত্বকে পুনপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্খার প্রতিনিধিত্ব করত। লিন পিয়াও পার্টি বিরোধী চক্র মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লবকে বিরোধিতা করে আর আমাদের দেশে সর্বহারা একনায়ত্বধীনে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি ঘৃণা পোষণ করত, একে “সামন্ত স্বৈরাচার” বলে একে চরত্রে কলংক লেপন করত আর একে অভিশাপ দিত “সমকালের চিন শিহ হুয়াং” বলে। তারা চাইত ভুস্বামী, ধনী কৃষক, প্রতিবিপ্লবী, খারাপ উপাদান আর দক্ষিনপন্থীরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রকৃত মুক্তি পাক, অর্থাৎ, রাজনৈতিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে তারা সর্বহারা একনায়কত্বকে ভুস্বামী ও মুৎসুদ্দি পুঁজিপতি শ্রেণীসমূহের একনায়কত্ব আর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করতে চেয়েছে। পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য কঠিন পরিশ্রমের সাথে পার্টির ভেতরে বুর্জোয়াদের এজেন্ট হিসেবে লিন পিয়াও পার্টি বিরোধী চক্র পার্টি ও সর্বহারা একনায়কত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণে বন্য ছিল, এতটাই ছিল যে তারা গোপন এজেন্টদের এক সংগঠন গড়ে তোলে আর এক প্রতিবিপ্লবী সশস্ত্র কু দে’তার পরিকল্পনা করে। এই উন্মত্ততা হচ্ছে এই বাস্তবতার প্রতিফলন যে প্রতিক্রিয়াশীলরা যারা রাজনৈতিক ক্ষমতা ও উৎপাদনের উপায় হারিয়েছে তারা অনিবার্যভাবে শোষক শ্রেণীসমূহের হারানো অবস্থাকে পুনরুদ্ধারে সর্ববিধ প্রচেষ্টা চালাবে। আমরা দেখেছি, কিভাবে লিন পিয়াও, তার রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক দেউলিয়াত্বের পর এক দানে বাজি ধরে সর্বহারা শ্রেণীকে “গিলে খেতে” চেয়েছে পাঁকা জুয়ারীর মত, আর শেষে দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে শত্রুর আশ্রয়ে পালিয়ে গেছে; সভাপতি মাও ও পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির ধৈর্যশীল শিক্ষাদান, অপেক্ষা আর তাকে বাঁচানোর চেষ্টা সত্ত্বেও তার প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্র একটুও কমেনি। এসবই সর্বহারা আর বুর্জোয়া শ্রেণীর মধ্যকার জীবন মরণ সংগ্রামকে প্রতিফলিত করে, দুই প্রধান বৈর শ্রেণীর মধ্যে, সর্বহারা শ্রেণীর নেতৃত্বাধিন যে সংগ্রাম এক দীর্ঘ সময়কাল ব্যাপী চলবে। যতদিন উচ্ছেদকৃত প্রতিক্রিয়াশীল শ্রেণী অস্তিত্বমান থাকবে, পার্টি (ও সমাজের মধ্যো) এই সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকে যে বুর্জোয়াদের প্রতিনিধিরা পুনপ্রতিষ্ঠার আশাকে পুনপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় রূপান্তর ঘটাবে। তাই, আমাদের অতি অবশ্যই সতর্কতাকে উচ্চতর করতে হবে আর দেশে বিদেশে প্রতিক্রিয়াশীলদের যে কোন নীল নকশার বিরুদ্ধে পাহাড়া দিতে হবে, ধ্বংস করতে হবে আর কোনভাবেই আমরা আমাদের সতর্কতায় ঢিলে দিতে পারিনা। এই উপলব্ধি বিষয়টির সব দিককে স্পর্শ করেনা। লিন পিয়াও পার্টি বিরোধী চক্র উচ্ছেদকৃত ভুস্বামী আর পুঁজিপতি শ্রেণীসমূহের পুনপ্রতিষ্ঠার আশাকেই শুধু প্রতিনিধিত্ব করেনি, বরং সমাজতান্ত্রিক সমাজের ভেতরে জন্ম নেয়া নতুন বুর্জোয়া উপাদানগুলোর ক্ষমতা কুক্ষিগত করার আশাকেও। এই চক্রের সদস্যদের কিছু বৈশিষ্ট ছিল নতুন জন্ম নেয়া বুর্জোয়া উপাদানের, আর বস্তুত তাদের অনেকেই ছিল এমন উপাদান। তাদের কিছু শ্লোগান সেই সব বুর্জোয়া উপাদান ও তাদের চাহিদাকে পুরণ ও প্রতিফলিত করেছে যারা পুঁজিবাদের পথ গ্রহণ করতে চায় পুঁজিবাদ বিকাশের লক্ষ্যে। এই শেষের দিকটি মূর্তভাবে আমাদের আরো বিশ্লেষণের দাবী করে।

সভাপতি মাও ব্যাখ্যা করেন, “‘লেনিন বলেন, ‘ক্ষুদে উৎপাদন অবিরত, প্রতি দিন, প্রতি ঘন্টায়, স্বতস্ফূর্তভাবে আর ব্যাপকভাবে পুঁজিবাদ ও বুর্জোয়ার জন্ম দেয়’। এটা শ্রমিকদের একটি অংশের মধ্য আর পার্টি সদস্যদের একটি অংশের মধ্যেও ঘটে। উভয়ত সর্বহারা শ্রেণীর সারিতে আর রাষ্ট্রের অঙ্গগুলির মধ্যে এমন লোক আছে যারা বুর্জোয়া স্টাইলের জীবন যাপন করেন।” লিন পিয়াও পার্টি-বিরোধী চক্রের কেউ কেউ ছিলেন এমন নতুন জন্ম নেয়া বুর্জোয়া ও পুঁজিবাদের প্রতিনিধি। তাদের মধ্যে লিন লি-কুও [লিন পিয়াওয়ের পুত্র] আর তার ক্ষুদ্র “যুদ্ধ জাহাজ” [তাদের গোপন সংগঠনের কোড নাম] ছিল হাড়ে মজ্জায় সমাজতন্ত্র বিরোধি বুর্জোয়া উপাদান এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজে জন্ম নেয়া প্রতিবিপ্লবী।

নতুন বুর্জোয়া উপাদানসমূহের রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক উৎস ছিল বুর্জোয়া প্রভাবের অস্তিত্ব এবং আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ ও সংশোধনবাদের প্রভাবের অস্তিত্ব, যেখানে তাদের অস্তিত্বের পরম অর্থনৈতিক ভিত্তি প্রদত্ত হয় বুর্জোয়া অধিকারের অস্তিত্ব দ্বারা।

লেনিন ব্যাখ্যা করেনঃকমিউনিস্ট সমাজের প্রথম পর্বে (সাধারণত যাকে সমাজতন্ত্র বলা হয়ে থাকে)-এ ‘বুর্জোয়া অধিকার’কে তার সমগ্রতায় বিলোপ করা হয় না, বরং অংশত, কেবল যতটুকু অর্থনৈতিক বিপ্লব এ পর্যন্ত অর্জিত হয় তার সমানুপাতে, অর্থাৎ উৎপাদনের উপায়ের দিক থেকে” “যাহোক, এর অন্য অংশগুলির কথা বলতে গেলে এটা অব্যাহতভাবে অস্তিত্বশীল হয়; উৎপন্নের বন্টন আর সমাজের সদস্যদের মধ্যে শ্রমের বন্টনের সঞ্চালক ক্ষমতা (নির্ধারক উপাদান)-এ এটা অব্যাহতভাবে অস্তিত্বশীল থাকে। ‘যে কাজ করেনা সে খেতে পায়না’ এই সমাজতান্ত্রিক নীতি ইতিমধ্যেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে; অন্য সমাজতান্ত্রিক নীতিঃ ‘শ্রম অনুযায়ী উৎপন্ন’ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু এটা এখনও কমিউনিজম নয় আর তা এখনও ‘বুর্জোয়া অধিকার’ বিলোপ করে না যা অসম পরিমাণ শ্রম (সত্যিই যা অসম)-এর বিনিময়ে সম পরিমাণ উৎপন্ন অসম ব্যক্তিকে দেয়।”

চেয়ারম্যান মাও ব্যাখ্যা করেনঃ “চীন একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ। মুক্তির আগে সে মোটামুটি একটা পুঁজিবাদের মত ছিল। এমনকি এখনও সে আট গ্রেড মজুরি প্রথা, কাজ অনুযায়ী বন্টন আর টাকার মাধ্যমে বিনিময় অনুশীলন করে যা পুরোনো সমাজের থেকে খুব বেশী পৃথক নয়। পার্থক্য হল এই যে মালিকানা ব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে।” “আমাদের দেশ বর্তমানে একটা পণ্য প্রথা অনুশীলন করে, আর মজুরী প্রথাও অসম, আট গ্রেড মজুরী প্রথা আছে। এসব সর্বহারা একনায়ত্বের অধীনে কেবল মাত্র বিধি নিষেধে আটকানো যায়।”

সমাজতান্ত্রিক সমাজে, তখনো দুই ধরণের সমাজতান্ত্রিক মালিকানা বিরাজ করে, যথা, সমগ্র সামাজিক জনগনের মালিকানা আর যৌথ মালিকানা। এটা নির্ধারণ করে যে চীন বর্তমানে একটা পন্য প্রথা অনুশীলন করছে। লেনিন ও সভাপতি মাও কৃত বিশ্লেষণ আমাদের বলে যে বুর্জোয়া অধিকার যা সমাজতান্ত্রিক প্রথার অধীনে বন্টন ও বিনিময়ের দিক থেকে অস্তিত্বমান হয়, তার উপর সর্বহারা একনায়ত্বাধীনে বিধি নিষেধ আরোপ করতে হবে যাতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় তিন বৃহৎ পার্থক্য যথাঃ শ্রমিক ও কৃষকের মধ্যে, শহর ও গ্রামের মধ্যে এবং কায়িক ও মানসিক শ্রমের মধ্যে পার্থক্যে ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা যায়, বিভিন্ন গ্রেডের মধ্যেকার বৈষম্যকে কমিয়ে আনা হবে আর এমন পার্থক্যসমূহ দূর করার বস্তুগত ও মতাদর্শিক পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে সৃষ্টি করা হবে। আমরা যদি এই প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং বুর্জোয়া অধিকারের সংহতকরণ, সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ করি আর সে যেসব বৈষম্য দাবী করে, তার ফল হবে মেরুকরণ, অর্থাৎ, বন্টনের প্রক্রিয়ায় অল্প কিছু লোক বর্ধিষ্ণু পন্য ও টাকা অধিকার করবে কিছু বৈধ ও অনেক অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে; এমন “বৈষয়িক প্রণোদনা” দ্বারা উদ্দীপিত হয়ে ধন সম্পদ অর্জনের পুঁজিবাদী ভাবধারা আর ব্যক্তিগত নাম আর অর্জনের জন্য লালায়িত হওয়া অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়বে; গণ মালিকানাকে ব্যক্তিগত মালিকানায় রূপান্তরের মত ঘটনা, গুজব, আত্মসাৎ ও দুর্নীতি, চৌর্যবৃত্তি ও ঘুষ বাড়বে; পন্য বিনিময়ের পুঁজিবাদী নীতি রাজনৈতিক জীবন ও পার্টি জীবনে ঢুকে পড়বে, সমাজতান্ত্রিক পরিকল্পিত অর্থনীতিকে খাটো করবে আর পন্য ও টাকার পুঁজিতে রূপান্তর আর শ্রম শক্তির পন্যে রূপান্তরের মত পুঁজিবাদী শোষণের কর্মকান্ডের জন্ম দেবে; কিছু কিছু বিভাগ ও ইউনিট যেগুলো সংশোধনবাদী লাইন অনুসরণ করছে সেখানে মালিকানা ব্যবস্থার চরিত্রের মধ্যে পরিবর্তন হবে; শ্রমজীবী জনগণের উপর নিপীড়ণ ও শোষণ চালানোর উদাহারণ পুনরায় ঘটবে। ফলে পার্টি সদস্য, শ্রমিক, স্বচ্ছল কৃষক আর রাষ্ট্রের অঙ্গগুলির লোকেদের মধ্যে থেকে জন্ম নেবে মুষ্টিমেয় সংখ্যক নতুন বুর্জোয়া উপাদান ও লুক্কায়িত যারা সর্বহারা শ্রেণী ও শ্রমজীবী জনগণের সাথে পুরোপুরি বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমাদের শ্রমিক কমরেডরা একে সুন্দরভাবে বলেছেনঃ “যদি বুর্জোয়া অধিকারকে বিধি নিষেধ দ্বারা আটকানো না হয়, সে সমাজতন্ত্রের বিকাশকে আটকাবে আর পুঁজিবাদের বৃদ্ধিতে সহযোগিতা দেবে।” যখন বুর্জোয়াদের অর্থনৈতিক সামর্থ একটা নির্দিষ্ট পরিমান বাড়ে, এর এজেন্টরা রাজনৈতিক শাসন দাবী করবে, সর্বহারা একনায়কত্ব ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উচ্ছেদের চেষ্টা করবে, সমাজতান্ত্রিক মালিকানাকে সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করবে আর প্রকাশ্যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠা ও বিকাশ করবে। ক্ষমতায় আসামাত্র নতুন বুর্জোয়ারা প্রথমেই জনগণের উপর রক্তাক্ত নির্যাতন চালাবে আর মতাদর্শ ও সংস্কৃতির সকল ক্ষেত্রসমেত উপরিকাঠামোতে পুঁজিবাদ পুনপ্রতিষ্ঠা করবে; তারপর তারা প্রত্যেকের যে অনুপাতে পুঁজি ও ক্ষমতা আছে সেই অনুপাতে বন্টন চালাবে, আর “প্রত্যেককে শ্রম অনুযায়ী” এই নীতি স্রেফ একটা ফাঁকা কথায় পরিনত হবে, উৎপাদনের উপায়কে যে মুষ্টিমেয় নয়া বুর্জোয়ারা একচেটিয়াভাবে দখল করেছে, তারা একইসাথে ভোগ্যপন্য ও অন্যান্য উৎপন্ন বন্টনের ক্ষমতাকেও একচেটিয়াভাবে কুক্ষিগত করবে। এমনই হচ্ছে পুনপ্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া যা ইতিমধ্যেই সোভিয়েত ইউনিয়নে সংঘটিত হয়েছে।

(বাংলা রূপান্তর একাধিক পর্বে সমাপ্য)