মহান মে দিবসে আন্তর্জাতিক যৌথ বিবৃতিঃ কমিউনিজমের সংগ্রামে দীর্ঘজীবী হোক সর্বহারা দিবস মে দিবস ! ( ১ মে ২০১৪)

মহান মে দিবসে আন্তর্জাতিক যৌথ বিবৃতি

( ১ মে ২০১৪)

 

কমিউনিজমের সংগ্রামে দীর্ঘজীবী হোক সর্বহারা দিবস মে দিবস !

আমরা ২০১৪ সালে বিশ্বে কি দেখছি? ইরাক, সিরিয়া, ইউক্রেন, লিবিয়া, মালি, আফগানিস্থান,মিশর … সহ বিভিন্ন দেশে সরকারকে অস্থিতিশীল করার প্রক্রিয়া চলছে, ক্ষমতাশীন এক শাসক চক্রকে উচ্ছেদ করে নতুন আরেকটা বসানোর প্রয়াস অব্যহত আছে। এর অর্থ হল – আমলাতান্ত্রিক বুর্জোয়ারাদের সরকার বদল, তবে যেন কোন ভাবে সামন্তবাদে কোন প্রভাব না পড়ে।

এর কারণ ও খুব সহজেই অনুমান করা যায় – পুঁজিবাদ তাঁর আভ্যন্তরীণ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারছেনা, কেননা মুনাফা লাভের নিয়ম অনুসারে তাঁদের লাভের হার কমছে, যার ফলশ্রুতিতে এটা একের পর এক সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপে অধিকতর তৎপর হবে, আরো আন্তসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে লিপ্ত হবে, যা তাদেরকে সরাসরি যুদ্বে জড়িত করে দেবে, আরো সদা দারিদ্র্য তৈরী করবে, আরো জাতিয় ও সামাজিক প্রতারনার রাজনীতি সৃজনের মাধ্যমে সৃষ্টি করবে ফ্যসিবাদ যা হচ্ছে “লগ্নী পুঁজির চরম প্রতিক্রিয়াশীল চরম উগ্র জাতিয়াতাবাদী ও সাম্রাজ্যাবদী উপাদানসমূহের প্রকাশ্য সন্ত্রাসী একনায়কত্ব”।

 এখন সত্যিকার অর্থে যা স্পষ্ট হচ্ছে তা হল, বর্বরতা আজ দিনে দিনে শক্তিশালী হচ্ছে। মানুষের মাঝে উপেক্ষার মনোভাব, আত্মকেন্দ্রীকতা, ব্যক্তি স্বার্থবাদ এবং প্রতিযোগিতাবাদ কে যৌক্তিক ও স্বাভাবিক মূল্যবোধ হিসাবে হাজির করার প্রায়স চলছে। পক্ষান্তরে, ধর্ম, যুক্তিহীনতা, পশ্চাদপদতার সংস্কৃতিতে পশ্চাদপসারণের সমর্থন তৈরী করা হচ্ছে। অধিক পুঁজি আহরনের জরুরীত্ব এবং পুঁজিবাদী বাজার সম্প্রসারনের লক্ষ্যেই আমাদের সংস্কৃতি ও সেইসাথে সারা দুনিয়ায় প্রকৃতির উপর অধিক থেকে অধিকতর আঘাত হানা হচ্ছে সমান তালে।

 যাইহোক, এটা হচ্ছে বাস্তবতার একটি দিক । আমরা এখন একটি বিশেষ সময়ে বসবাস করছি, এটা একদিকে যেমন পরিবর্তনশীল, পক্ষান্তরে, এ এক যুগ সন্দ্বিক্ষন কালও বটে। এটা “৫০ থেকে ১০০ বছরের যুগ”। কেননা ২১শতক হবে বিশ্ববিপ্লবের শতক। সভাপতি গনসালো আমাদেরকে শিক্ষা দেন যে, “বিশ্ববিপ্লবের প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর বুক থেকে সাম্রাজ্যবাদ ও প্রতিক্রিয়াকে ঝেটিয়ে বিদেয় করার তিনটি মুহুর্ত রয়েছেঃ

১ম, বিশ্ববিপ্লবের রণনৈতিক আত্মরক্ষা;

২য়, রণনৈতিক ভারসাম্য; এবং

৩য়, রণনৈতিক আক্রমণ।

তিনি এই উপসংহারে পৌঁছেন বিপ্লবের ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বের নিয়ম প্রয়োগ করে, যেহেতু দ্বন্দ্ব সবকিছুর পরিচালক এবং সংগ্রামে সকল দ্বন্দ্বের দুটি দিক রয়েছে; এই ক্ষেত্রে বিপ্লব এবং প্রতিবিপ্লব।… আমাদের ধারণাগুলো হচ্ছে সাম্যবাদে পৌঁছার আস্থাসহকারে এক দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়ার, এমনকি যদি এর অর্থ হয় যে তা একঝাঁক বাঁক ও উল্টানোর মধ্য দিয়ে যাবে, যা আবশ্যিকভাবে ঘটবে।…কমিউনিস্ট হিসেবে আমাদের শুধু নির্দিষ্ট মুহুর্তকে দেখলে চলবেনা বরং আগামী অনেক বছরকে দেখতে হবে।”

(আন্তর্জাতিক লাইন, পেরুর কমিউনিস্ট পার্টি, ১৯৮৮)

এই দিক থেকে আমরা বলতে চাই যে, একটা প্রকৃত কমিউনিস্ট পার্টি কেবল যা ধারণ করতে পারে সেই সর্বহারার মতাদর্শ মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদের পতাকার নীচে গণযুদ্ধের বিজয় অবধি নিজ নিজ দেশের ইতিহাস জানা, গণতান্ত্রিক দিকগুলিকে রক্ষা করা ও বিপ্লবী দিকসমূহের সংশ্লেষন করা হছে ঐতিহাসিকভাবে প্রয়োজন একটা পথনির্দেশক চিন্তাধারা হিসেবে বিপ্লবের পথ উন্মুক্ত করে দিতে।

তাই, ধর্মীয় ভাবধারায় মোহাবিষ্ট হতে দেওয়া যাবেনা। এই সপ্তাহে পোপ জন ত্রয়োবিংশ এবং জন পল দ্বিতীয় আফগানিস্তানের নির্বাচনে কুসংস্কার মূলক প্রচারনা চালিয়েছেন উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থাকে আরো জোড়দার করার জন্য। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও রানা প্লাজা ধবংসের এক বছর পর আমরা দেখতে পাই যে, শ্রমজীবী মানুষের কাজের পরিবেশ উন্নত করার মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। আর, শাসকরা ক্ষমতার লোভে তার বুর্জোয়া বিরোধী দলবিহীনভাবে ও সহ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষভাবে এই প্রতিক্রিয়াশীলরা জনগণকে অধিক থেকে অধিকতর কুসংস্কার,পশ্চাদপদতা ও অন্ধত্বের দিকে জোর করে ঠেলে দিচ্ছে।

ইউরোপীয় পরবর্তী নির্বাচনসমূহের ক্ষেত্রেও একই কথা। বেলজিয়ামে রাডিক্যাল সংস্কারবাদিরা কিছু সফলতা পাবে আর ফ্রান্সে অতি ডানপন্থীরা নির্বাচনী বিজয় উৎসব পালন করবে।

এগুলো হচ্ছে স্রেফ প্রচলিত ব্যবস্থাকে ঠিকিয়ে রাখারই প্রচেষ্টা, যা এখন মৃত্যুশয্যায়, যা ইতোমধ্যেই ঐতিহাসিক ভাবে নিন্দিত হয়েছে।

অতএব, আমাদের আহবানঃ

দুনিয়ার সর্বহারা এবং নিপিড়িত জাতি ও জনগণ এক হও !

কমিউনিজম কায়েম না হওয়া পর্যন্ত গণযুদ্ব চলবে !

আফগানিস্তানের ওয়ার্কার্স অর্গানাইজেশন ( মার্কসবাদী-লেনিনবাদী- মাওবাদী,প্রধানতঃ মাওবাদী )

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বাংলাদেশ

মার্কসবাদী -লেনিনবাদী-মাওবাদী কেন্দ্র [ বেলজিয়াম ]

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী ফ্রান্স 

 ১ মে ২০১৪ ।