সিপিএমএলএম বাংলাদেশ দলিল
৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
দেশে রাজনৈতিক সংকট
প্রতিক্রিয়াশীলদের ক্ষমতা নিয়ে কামড়াকামড়িতে বিপর্যস্ত জনগণ
২০১৫ নতুন বছর শুরু হতে না হতেই বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক শক্তিসমূহের মধ্যে পুনরায় ক্ষমতা নিয়ে কামড়াকামড়ি শুরু হয়ে এক মাস চলছে। ইতিমধ্যে সত্তুর জনের মত নারী শিশুসহ সাধারণ মানুষ বাসে-ট্রেনে বোমা হামলায় দগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আহত অনেক। এসব দমনে সরকারী ক্রসফায়ারে ইতিমধ্যে বেশকিছু নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকতে চায় আর বিএনপি-জামাত জোট বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই হোক ক্ষমতায় আসতে চায়। এই দুই গ্রুপিংয়ের আগে পরের শাসন-শোষণ, দুর্নীতি, গণনির্যাতন, গণহত্যার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, বরং পার্থক্য শুধু এই যে তারা ভিন্ন ভিন্ন সাম্রাজ্যবাদ বা সম্প্রসারণবাদের স্বার্থরক্ষাকারী ভিন্ন ভিন্ন আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদী-সামন্তবাদী গ্রুপিং। উভয় গ্রুপের বারংবার শাসনে বাংলাদেশের মানুষ ভাত, কাপড়, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা পাওয়া দুরের কথা, বরং কৃষকেরা জমি থেকে উৎখাত হয়ে ভুমিহীন, গরীব কৃষক ও শ্রমিকে পরিণত হয়েছে, তাদের উৎপাদিত ফসল তাদের জীবন মান উন্নত করেনি, শ্রমিক ন্যুনতম বেঁচে থাকার মত মজুরি পায়নি, বরং দেশি বড় ধনীদের উন্নতি হয়েছে, আর বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী-সম্প্রসারণবাদীদের মুনাফা বেড়েছে বিরাট। দেশের তেল, গ্যাস, খনি চলে গেছে বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী-সম্প্রসারণবাদীদের হাতে। সুন্দরবনসহ পরিবেশ ধ্বংস হয়ে চলেছে অবিরাম।
জনগণ এদের হাত থেকে মুক্তি চায়।
ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের কর্তৃত্ব
আওয়ামী লীগ সরকারের পেছেনে আছে ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ। সে এখানে কর্তৃত্ব হারিয়েছিল ১৯৭০ দশকে কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সংগ্রামের ফলে তার দালালরা মাটি হারিয়েছিল বলে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করতে না পারার ফলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের দালালদের চালিত করেছিল ক্ষমতা দখলে। ভারত নিয়ন্ত্রণ হারায়। রাশিয়া হারায় বখরা।
বাংলাদেশে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের জন্য ভারতকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। স্বভাবতই সে এখন অন্য কাউকে সুযোগ দেবেনা। তাদের প্রয়োজন অন্য সাম্রাজ্যবাদী ও সম্প্রসারণবাদী গ্রুপিং গুলোর দালালদের ওপরও যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণ।
আওয়ামী লীগ ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। ১৯৯০ দশকের শেষে ভারত পার্বত্য চট্রগ্রামের সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদীদের বাংলাদেশ সরকারের কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। বিনিময়ে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলির বাংলাদেশস্থ ক্যাম্পগুলি ধ্বংস করে আর তাদের বহু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে ভারতে হস্তান্তর করে।
ইতিমধ্যে সরকার ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছে। সুন্দরবন ও পরিবেশ বিধ্বংসী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে দিয়েছে। এছাড়া কুইক রেন্টালের নামে ভারতীয় কোম্পানীগুলি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের নদীগুলির উজানে বাঁধা নির্মান করে পানি প্রবাহ আটকে দেয় ভারত। এর ফলে বাংলাদেশ শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে খরা আর বর্ষাকালে বন্যায় তলিয়ে যায়। এর ফলে বাংলাদেশের বিরাট অংশের ফসল নষ্ট হয় প্রতি বছর। দীর্ঘমেয়াদী ভাবে মরুভূমিতে পরিণত হতে যাচ্ছে দেশের বিরাট অংশ। বৈধ-অবৈধ ভারতীয় মালামালের বিরাট বাজার বাংলাদেশ। চাল, গম, ভুট্রা, চিনি, লবণ, পেঁয়াজ, মশলা, ডাল, শাড়ী, কসমেটিক্স, পশু খাদ্য, গরুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিস ভারত থেকে বাংলাদেশ আসছে, যার অধিকাংশ দেশী জিনিস থেকে নিম্নমানের। ভারতীয় বাস, ট্রাক, সিএনজি চালিত অটো রিকশা, মোটর সাইকেল, ট্রেন, ট্রাকটর, বিদ্যুত, মেশিনারিজ বাংলাদেশ আমদানী করে। ভারতের ফেন্সিডিল ও মায়ানমারের ইয়াবা বাংলাদেশী তরুণ-তরুণিদের নেশাগ্রস্থ করছে। স্যাটেলাইট টিভির মাধ্যমে ভারতীয় সংস্কৃতি এখানে কর্তৃত্ব করছে। এছাড়া এখানে প্রেক্ষাগৃহগুলো ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শন শুরু করেছে। বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে বাংলাদেশের মোট আমদানীর অন্ততঃ শতকরা চল্লিশ ভাগ ভারত থেকে আসে।
রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশ সরকারের মিশাইল, বিমানসহ ব্যাপক অস্ত্র ক্রয় চুক্তি, রূপপুর পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন, কক্ষপথে উপগ্রহ স্থাপন চুক্তি, গাজপ্রমকে গ্যাসকূপ খনন কাজ প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে রাশিয়া মোটামুটিভাবে বাংলাদেশে পুনপ্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাশিয়ান ও চীনা ট্যাংক, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী রাশিয়ান মিগ দ্বারা গঠিত হয়েছে। রাশিয়ান ট্রাকটর বাংলাদেশে আমদানী হয়।
মার্কিনের এখানে টিকফা চুক্তি রয়েছে। অধিকাংশ গাসক্ষেত্রগুলি সেই লুটপাট করছে। যদিও গাজপ্রমের আগমণ তার জন্যও অশুভ সংকেত। গ্রামীন ব্যাংক মার্কিনের দালাল। এছাড়া বহু মার্কিন-পশ্চিম ইউরোপীয় দালাল এনজিও এখানে কার্যরত রয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বড় বাজার মার্কিন ও পশ্চিম ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদীরা। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে মার্কিন ট্রেনিং প্রদান করে থাকে। মার্কিন চায় বাংলাদেশে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন ও পুর্ণ নিয়ন্ত্রণ। মার্কিনের বাজারে পোশাক শিল্প পন্যের জিএসপি সুবিধা মার্কিন কর্তৃক বাতিল হওয়া এই ইংগিত বহন করে যে মার্কিন এখানে সুবিধা করতে পারছেনা।
চীন এখানে নির্মাণ কাজের অধিকাংশ পেয়েছে। যথা, পদ্মা ব্রীজ, গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণসহ বহু কাজ। চীনা ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর একচ্ছত্র বাজার বাংলাদেশ। বাংলাদেশ চীন থেকে অস্ত্র ক্রয় করে। ট্যাংক, ডুবোজাহাজ ও যুদ্ধ জাহাজ ক্রয় করছে। এছাড়া ট্রেন ও ব্যাটারী চালিত অটো বাইক, ট্রাক্টর, সেলাই মেশিন, মেশিনারি চীন থেকে আমদানী হয়।
বিভিন্ন নির্মাণ কাজে জাপান, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াও এখানে পুঁজি বিনিয়োগ করছে। ইউরোপ, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ান থেকে বিভিন্ন মেশিন বাংলাদেশে আসে।
ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্যান ইসলামিক গোষ্ঠীগুলির পুঁজিও এখানে ক্রিয়াশীল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে বাংলাদেশের বিরাট জনশক্তি সামান্য অর্থের বিনিময়ে কাজ করছে। সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে আরো বিশ লাখ লোক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের এক বাজার বাংলাদেশ। শিক্ষাক্ষেত্রে এরা ধর্ম যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এরা মাদ্রাসা ও মসজিদের নামে প্রচুর অর্থ বাংলাদেশে খাঁটায়। এরা সমাজে ধর্মীয় কুসংস্কার ও নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়েছে।
সভাপতি সিরাজ সিকদার ৭০ দশকে দেখিয়েছেন ভারত ভিন্ন অন্য কোন শক্তির পক্ষে এখানে ক্ষমতা দখল সম্ভব নয়। আর, কমিউনিস্টরা জনগণনির্ভর বলে তাদের ছাড়া অন্য কোন শক্তির পক্ষে এখানে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল সম্ভব নয়। সম্ভাবনাটা ছিল পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি কর্তৃক ক্ষমতা দখল। কিন্তু ২ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালে কমরেড সিরাজ সিকদার শত্রুর হাতে শহীদ হওয়ার কারণে পার্টি সংকটে পড়ে। পরবর্তী নেতারা সঠিক লাইন ও অনুশীলন গড়তে পারলেননা। ফলে পার্টি তার দিশা হারিয়ে ফেলল। ফলে ক্ষমতা শুন্যতার সুযোগ নিল মার্কিন দালালরা। তারা মুসলিম ধর্ম যে এখানে ভারতের নিয়ন্ত্রণের একটা বড় প্রতিবন্ধকতা তা উপলব্ধি করে তা কাজে লাগায়। ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ তিনদিক থেকে ভারতবেষ্টিত, সমুদ্রও তার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। বাংলাদেশের আশেপাশে কোন মুসলিম রাষ্ট্র নেই।
দীর্ঘদিনে ভারত তার দালালদের গুছিয়ে নেয়। ইতোমধ্যে সে সীমাহীন সীমান্ত সন্ত্রাস চালায়। বর্তমানেও চালাচ্ছে।
সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের পতনের পর সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের মধ্যে ভারসাম্য বদলে যায়, মার্কিন একচ্ছত্র আধিপত্য করে, ফলে বিভিন্ন দেশে সাম্রাজ্যবাদী ও সম্প্রসারণবাদী শক্তিগুলির দালালদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত কমে যায়, কিন্তু বর্তমানে রাশিয়ার পুনরায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে দাঁড়ানোর ফলে আর চীনের সাম্রাজ্যবাদে পরিণত হওয়ার ফলে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দালাল গ্রুপিং গুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নিচ্ছে।
কমরেড সিরাজ সিকদারের থিসিসটি ছিল সঠিক। পুনরায় একই পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। এখানে নতুন যে দিকটি যুক্ত হয়েছে তাহল ভারতে মাওবাদী গণযুদ্ধের উপস্থিতি।
যেমনটা সভাপতি সিরাজ সিকদার দেখিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মত একটি আধা-সামন্তবাদী আধা-ঔপনিবেশিক সমাজ আমলাতান্ত্রিক বুর্জোয়াদের দ্বারা শাসিত হয়।
এখানে ভারতের নিয়ন্ত্রণ সর্বাধিক। তাই সে তার দালাল বুর্জোয়াদের দ্বারা শাসনব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে চায় তার অনুকূলে। তাই তার দালালদের ক্ষমতা সংহতকরণের মাধ্যমে শ্রমিক, কৃষক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীগুলির উপর দেশী বিদেশী প্রতিক্রিয়াশীলদের শোষণ সংহত হবে, একটি নির্দিষ্ট ঔপনিবেশিক শক্তির প্রাধান্য নিশ্চিত হবে, সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ কে কতটুকু বখরা পাবে তা নির্দিষ্ট হবে।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ভারতীয় প্রাধান্য ও কর্তৃত্ব পুনঃস্থাপিত হয়েছে-হচ্ছে। এতে বিএনপির মাধ্যমে মার্কিন বাঁধ সাধলেও সুবিধা করতে পারছেনা। জামাতের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যীয়-পাকিস্তান ও প্যান ইসলামিক সামন্তবাদী-পুঁজিবাদী গোষ্ঠীগুলো বাঁধ সাধলেও সুবিধা করতে পারছেনা। জাতিগত উৎসের দিক থেকে ভারতীয় উপমহাদেশীয় হওয়ায় বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব চীনের চেয়ে অনেক বেশী। মায়ানমার পর্যন্ত চীনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। মার্কিন, রাশিয়া, চীন, জাপান, সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যীয়, পাকিস্তান ও প্যান ইসলামিকদের বখরা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে, আইএস কর্তৃক গণহত্যা, পাকিস্তানে তালেবান কর্তৃক শিশুহত্যা, ইউরোপে ইসলামবাদী আক্রমণ ও পালটা মুসলিম বিরোধী নিপীড়ণ ইত্যাদির মাধ্যমে ধর্মবাদী প্রতিক্রিয়াশীল মতাদর্শের গণবিরোধী চরিত্র ও এইকেন্দ্রীক সাম্রাজ্যবাদী গণবিধ্বংসী পরিকল্পনা উন্মোচন করে দিচ্ছে।
যোগাযোগ পথে প্রতিক্রিয়াশীল হামলা ও সরকারী সন্ত্রাসের প্রেক্ষিতে জনগণের করণীয়
লক্ষ্যনীয় যে যোগাযোগ পথের ওপর প্রতিক্রিয়াশীলদের সমগ্র হামলার শিকারই হচ্ছে জনগণ। এটা প্রতিক্রিয়াশীলদের মতাদর্শের সাথে সম্পর্কিত। তাদের মতাদর্শ যেহেতু গণবিরোধী, তাই তাদের সকল হামলাই যায় জনগনের বিরুদ্ধে। অপরদিকে সরকার ক্রসফায়ার সন্ত্রাস নামিয়ে আনছে, তাও জনগণের বিরুদ্ধেই সাধারণত যায়।
উভয় ক্ষেত্রেই জনগণকে আশুভাবে নিজেদের রক্ষার পদক্ষেপ নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে, আর হাতের কাছে যা আছে তাই দিয়ে শত্রুকে মোকাবেলা করতে হবে।
দীর্ঘস্থায়ীভাবে, জনগনকে মালেমাবাদী কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে সমাজের বিপ্লবী রূপান্তরের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
প্রতিক্রিয়াশীল সংকট, শুন্যতা ও কমিউনিস্টদের করণীয়
কমিউনিস্টরা সামাজিক বিপ্লবের মাধ্যমে দেশী-বিদেশী শোষকদের উৎখাত করে সাম্যবাদী ধারার সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। একটি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি কেবল এখানে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে সফল হতে পারে। কেননা কেবল উক্ত পার্টিই জনগণের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করতে পারে ও জনসাধারণকে তার শ্রেণীস্বার্থের ভিত্তিতে মুক্তির কর্মসূচিতে জাগরিত করতে পারে, শ্রমিক, গরীব কৃষক, মধ্যবিত্ত শ্রেণীসমূহের হাতে জমি, কারখানা ও খনির মালিকানা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে, যে সংগ্রাম অনিবার্যত এক গণযুদ্ধ। পাশাপাশি, সে অবশ্যই বিশেষত ভারতের গণযুদ্ধের সাথে দৃঢ় মৈত্রী স্থাপন করবে। দুনিয়ার অন্য সকল গণযুদ্ধ তথা কমিউনিস্ট পার্টিসমূহের সাথে ঐক্যবদ্ধ হবে। আর এগিয়ে চলবে নয়াগণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের পথে।
বর্তমান ক্ষমতা সংকটে কমিউনিস্টরা খুব সহজেই একে কাজে লাগাতে পারতেন ও ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু কমিউনিস্টরা প্রস্তুত নন। তারা নিজেদের মতাদর্শিক রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত করছেন।
তবে বাংলাদেশে বুর্জোয়াদের এই ক্ষমতা সংকট স্থায়ী। এটা উত্তরোত্তর আরো বৃদ্ধি পাবে। এধরণের পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে একটি ক্ষুদ্র শক্তি দ্রুত বিরাট শক্তিতে পরিণত হতে পারে।
সুতরাং বিপ্লবী শক্তিকে মতাদর্শিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য প্রস্তুতি যথাসম্ভব দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে, আর সংগ্রামের উদোগ নিতে হবে।
বিপ্লব অনিবার্য।
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫