সিরাজ সিকদার রচনাঃ প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির সার্কুলার নং ৪

 

সিরাজ সিকদার

সিরাজ সিকদার

 


পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি কর্তৃক রচনা ও প্রকাশ মার্চ ১৯৭২

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বাংলাদেশ কর্তৃক  সর্বহারা  পথ (www.sarbaharapath.com) এর অনলাইন প্রকাশনা ২৩ অক্টোবর ২০১৩


 

পিডিএফ

 

১। সশস্ত্র বাহিনী দিবস, আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস ও পার্টি দিবস উদযাপন করুন।

ক) ৩০শে এপ্রিল পূর্ববাংলার সর্বহারা শ্রেণীর ও জনগণের সশস্ত্র বাহিনী দিবস।

৩০শে এপ্রিল ১৯৭১ সালে বরিশালের পেয়ারা বাগানে পূর্ববাংলার ইতিহাসে সর্বপ্রথম সর্বহারা শ্রেণীর নেতৃত্বে জনগণের স্বার্থ রক্ষাকারী নিয়মিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে ওঠে।

খ) ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস উদযাপন করুন।

গ) ৩রা জুন পূর্ববাংলার সর্বহারা শ্রেণীর পার্টি দিবস। ৩রা জুন ১৯৭১ সালে পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়।

পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সকল স্তর, সর্বহারা পার্টির নেতৃত্বাধীন গেরিলা এবং অন্যান্যরা এ দিবসসমূহ উদযাপন করবেন, এ দিবসসমূহ উপলক্ষে লাল ঝাণ্ডার সম্পাদকীয়ের লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়িত করবেন।

২। পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির জন্য গুরুত্বের সাথে অর্থ সংগ্রহ করন।

পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির কেন্দ্রীয় ফান্ড প্রায় নিঃশেষ হয়ে এসেছে।

কাজেই বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিটি সমূহ অতিশয় গুরুত্ব দিয়ে অতিসত্তর অর্থ সংগ্রহ করবেন, নিজেরা আত্মনির্ভরশীল হবেন।

পার্টির প্রচার, সার্বক্ষণিক কর্মী রক্ষণাবেক্ষণ, যোগাযোগ, আঞ্চলিক কমিটিসমূহে সাহায্য, নিরাপত্তা এবং কেন্দ্রের কার্য পরিচালনার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন।

মারাত্মক আর্থিক সংকটের কারণে পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলনের বিকাশ দারুণভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকলে পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলন বিপ্লবের আরো ব্যাপক দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হতো।

কাজেই এ অবস্থার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা দূর করার জন্য গুরুত্ব দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে অতিসত্বর।

৩। পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সদস্য, প্রার্থী সদস্য এবং পাঠচক্র সদস্য প্রসঙ্গে।

পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সদস্য বা প্রার্থী সদস্য পদের জন্য নির্ধারিত আবেদন পত্রে কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট আবেদন করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে।

একজন সদস্যের সুপারিশ সংক্রান্ত স্থানে আবেদনকারীর পরিচালক সুপারিশ করবেন। আবেদনপত্র কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নিতে হবে।

পাঠচক্রের সদস্যপদের আবেদনপত্রে প্রদত্ত তথ্যাদি যাচাই করার পর পাঠচক্রের সদস্য করতে হবে, আগে নয়।

তথ্যাদি যাচাই করার প্রয়োজন, যাতে শত্রুচর ঢুকতে না পারে।

৪। আলতাফ ওরফে আবুল হাসান এবং তার চক্র প্রসঙ্গে।

আলতাফ মিয়া ওরফে আবুল হাসান, শান্তিলাল এবং তার ডাকাত চক্রের সাথে বা তাদের কার্যকলাপের সাথে পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির কোন সম্পর্ক নেই।

১৯৭১ সালের পঁচিশে মার্চের পর এ চক্র স্বরূপকাঠি এলাকায় নির্বিচারে ডাকাতি, লুট, হত্যা, নারী নির্যাতন প্রভৃতি জঘন্য অপরাধ করে।

এ সময়ে সে ও তার ডাকাত দল নিজেদেরকে পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলনের লোক বলে মিথ্যা পরিচয় দেয় এবং সংগঠনের বদনাম করে।

আবুল হাসান একজন ঠিকাদার। ঠিকাদারের শঠতা, প্রতারণা, বেপরোয়া অর্থ খরচের বদ অভ্যাস, নারীদের সাথে অবৈধ সম্পর্কের ইতিহাস তার ছিল।

পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলনের সাথে সে প্রথম দিকে যুক্ত ছিল, কিন্তু সংশোধিত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সংগঠন তার সাথে যোগাযোগ রাখা বন্ধ করে দেয় (১৯৭০ সালের প্রথম দিকে)।

এ সময় তার পরিচালনাধীন কিছু সংখ্যক সহানুভূতিশীল পার্টিকে বুঝিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে ব্যক্তিগত অর্থ লাভের জন্য সে রেখে দেয়।

পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলনের সাথে পঁচিশে মার্চের পর যোগাযোগ হলে অনুসন্ধানের ভিত্তিতে আবুল হাসান ও অন্যান্য অপরাধীদের নিরস্ত্র করা হয়। আরো অনুসন্ধান পরিচালনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

কিন্তু আবুল হাসান অনুসন্ধান পরিচালনার বিষয়ে সম্পূর্ণ অসহযোগিতা প্রদর্শন করে।

সম্প্রতি আবুল হাসান ও তার চক্র নিজেদের পার্টি কর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ডাকাত দল গঠন করে এবং সর্বহারা পার্টির বক্তব্য বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

পূর্ববাংলার জনগণ ও সর্বহারা বিপ্লবীরা অবশ্যই এ ডাকাত দলের চক্রান্ত নস্যাৎ করবেন।■