সিপিএমএলএমবাংলাদেশ–এরবিবৃতি
শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা তরণ ব্লগার রাজীব হায়দারের হত্যাকাণ্ড
মুক্ত চিন্তার ওপর আঘাত
নিরীশ্বরবাদী ব্লগার রাজীবকে প্রতিক্রিয়াশীলরা হত্যা করেছে। আপামর জনসাধারণের সাথে আমরাও এতে শোকগ্রস্থ ও বিক্ষুব্ধ। শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধ শক্তি ইসলামিক মৌলবাদীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। এর সাথে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসেরও যোগসূত্র থাকতে পারে। রাজীব ছিলেন শাহবাগের তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা।
আওয়ামী লীগ সরকার গোপন আঁতাতের মাধ্যমে ’৭১-এর অন্যতম যুদ্ধপরাধী জামাত নেতাদের বাঁচিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে মধ্যবিত্ত শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা বিরাটাকারে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছেন, সারা দেশে এর সমর্থন দানা বেঁধে ওঠেছে। এই তরুণ প্রজন্ম ভোটের রাজনীতিতে মোহগ্রস্ত নন। বুর্জোয়াদের রাজনৈতিক ব্যবসার প্রতিও এদের আগ্রহ নেই। দীর্ঘ দীর্ঘ দিনের সামাজিক ও রাজনৈতিক ধর্মীয় নির্যাতনের স্বীকার হয়ে তারা মাঠে নেমে এসেছেন। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে এ এক প্রতিবাদ। তারা চান প্রগতিশীল এক সমাজ।
ব্লগার রাজীবের হত্যাকাণ্ড শিক্ষিত মধ্যবিত্ত তরুণ প্রজন্মের আশা আকাঙ্খার ওপর আঘাত। এটা মুক্ত চিন্তা ও প্রগতিমনষ্কতার ওপর আঘাত। তাই, মানুষ আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। জামাতের আজকের হরতাল সারাদেশে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবীও উঠে আসতে পারে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ধর্মের ব্যবহারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাও তারা চালু রেখেছে। প্রতিপক্ষ বুর্জোয়া দলগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে তারা ফতোয়া ও শরিয়া আইন চালু করলেও আশ্চর্যের কিছু থাকবেনা। তাই, ধর্মীয় রাজনৈতিক নিষিদ্ধ করলেই কি এদের চেহারার পরিবর্তন ঘটবে, যে চেহারা কাদের মোল্লার চেয়ে ভাল কিছু নয়? সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার এক আমূল পরিবর্তনই কেবল সত্যিকার প্রগতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। সে পথ সাম্যবাদের।
১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী–লেনিনবাদী–মাওবাদী