বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের উপর ধর্মবাদী নির্যাতন

দেশে ধর্মবাদী নির্যাতিতের তালিকায় যুক্ত হল আরেক নামঃ হৃদয় চন্দ্র মন্ডল। তিনি মুন্সিগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক। পূর্বপরিকল্পিতভাবে কতিপয় ছাত্র নামধারী, বিদ্যালয় ও এলাকার প্রতিক্রিয়াশীলরা মিলে এক ষড়যন্ত্র করে ২০ মার্চ ২০২২ শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের সময় ধর্ম ও

ধর্মবাদী নির্যাতনের শিকার মুন্সিগঞ্জের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল

ধর্মবাদী নির্যাতনের শিকার মুন্সিগঞ্জের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল

বিজ্ঞান বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করে। তিনি জবাব দেনঃ ধর্ম হল বিশ্বাসের বিষয় আর বিজ্ঞান হল প্রামাণ্য বিষয়। এটা ষড়যন্ত্রকারীরা রেকর্ড করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে যে তিনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছেন। এনিয়ে তারা এক উন্মত্ততা সৃষ্টি করে। তারপর ২২ মার্চ এজন্য হৃদয় চন্দ্রকে জেলে যেতে হয়। দীর্ঘ ১৯ দিন জেলে থাকার পর অনেক সংগ্রামের পর তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

বাংলাদেশে ধর্মবাদী নির্যাতন, নিপীড়ণ ও শোষণ নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। অজস্র মানুষকে প্রতিদিন প্রতি মুহুর্ত এই নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়। কুসংস্কার মানে কুআচার। বিজ্ঞান অধ্যয়ন ও বৈজ্ঞানিক চেতনা ধারণ করা ও তার অনুশীলন এখন বাংলাদেশের সমাজে কঠিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই প্রতিক্রিয়াশীলদের ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যদিও ব্যাপক অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী তা হতে পারেনা। কারণ তাদের বিজ্ঞান জানতে হবে ও তা প্রয়োগ করত হবে। প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষার্থী, প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষক, বিদ্যালয় কমিটি, থানা পুলিশ, আইন আদালত, সংসদ, সচিবালয় এরা সকলেই কু আচার প্রতিষ্ঠা করেছে। আর এ কু আচারের জন্য বিজ্ঞানমনষ্কদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এটা কোন ধরণের সমাজ? এটা এক আধা উপনিবেশিক আধা সামন্ততান্ত্রিক সমাজ। সামন্ততন্ত্রের পুরোনো জরাজীর্ণ সমাজে ফিরে যেতে চায় ধর্মবাদীরা। কিন্তু তারা সেখানে যেতে পারেনা। তারা উপনিবেশবাদীদের দ্বারা আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদের মাধ্যমে এক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তারা তাদেরকে গড়ে তোলে সমাজের প্রগতিশীল রূপান্তরকে ঠেকিয়ে রাখতে। এভাবে তারা ফ্যাসিবাদীতে রূপান্তরিত হয়। সমাজে অনেক ধরণের ফ্যাসিবাদ আছে, তার মধ্যে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ একটি। ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ ধর্ম বিশ্বাস করা না করা অথবা কোন নির্দিষ্ট ধর্ম বিশ্বাস করা বা না করাকে কেন্দ্র করে মানুষে মানুষে বিভেদ, শোষণ, নির্যাতন সৃষ্টি করে। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষ দেখে আসছেন কীভাবে ধর্মকে কেন্দ্র করে সমাজ বিভক্ত হয়, দেশ বিভক্ত হয়, উপমহাদেশ বিভক্ত হয়। তারপরও শান্তি হয়না। একই কর্মকাণ্ড চলতেই থাকে।

এ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ সাম্যবাদী সমাজের চূড়ান্ত লক্ষ্যে সর্বহারা বিপ্লবের আন্দোলন যা সকল ধরণের শোষণ থেকে মুক্তির পথ দেখাবে। এ বিষয়ে আমাদের মূর্ত কর্মসূচি হচ্ছেঃ ধর্ম বিশ্বাস করা ও না করার স্বাধীনতা। কেউ কারো উপর এজন্য অপমান, লাঞ্ছনা, অত্যাচার-নির্যাতন চালাতে পারবেনা।।