আমরা কবিতা লেখলে তোমরা ডরাও কে? – আমান আলীর মি়ঞা কবিতা

এগুলোই যথার্থ কবিতা। যা শোষকদের কদর্য চেহারা আর শোষিতদের মানবিক চেহারা প্রতিফলিত করে। সংখ্যায় বেশি হলেও এই মানুষদের এতটুকু অহংকার নেই। তারা মানুষের মত মানুষ হয়ে বেঁচে থাকতে চায়, অন্য জাতির ক্ষতি করতে চায়না। এরাই সর্বহারা ও নিপীড়িত জনগণ!

আমরা কবিতা লেখলে তোমরা ডরাও কে?

 

মিঞা কবি আমান আলি

মিঞা কবি আমান আলি

 

আমরা কবিতা লেখলে তোমরা ডরাও কে?
যুগ যুগ ধইরা যুদ্ধ করতাছি
একমুঠ ভাত আর ইট্টু থাকার জায়গার নাইগা
আমাগো কবিতা তোমাগো বিরুদ্ধেনা
আমাগো কবিতা আমাগো ক্ষিদার বিরুদ্ধে।

আমাগো কবিতায় জানেনা রাষ্ট্রদ্রোহ
জানেনা মোল্লাগো রাজনীতি
আমাগো চোখে খালি ভাইস্যা থাকে ডিটেনশন ক্যাম্প
যেখানে আমাগো মা থাকে
সে মায়ের চোাখের পানি দিয়ে
আমরা কবিতা লিখি।

আমরা একমুঠো ভাত চাইলে
তোামাগো থালির ভাত কমবনা
আমরা একটা ফুলগাছ বুনলে
তোমাগো বাগানের ফুলগাছ কমবনা
আমরা একটা কবিতা লেখলে
তোমাগো কবিতার আদর কমবনা।

আমাগো কবিতায় জানেনা চামচাগিরি করতে
শিখেনাই প্রতিবাদ করতে
আমাগো পিঠে কাঁটাতারের দাগ বিছরিয়ে
কতবার রাজপথে কান ধরিয়ে রাখলা
তাও কোনদিন প্রতিবাদ করতে দেখছ?

নদীয়ে কতবার মাটিবাড়ী ভাইঙ্গা নিল
তাওকি কোনদিন কিছু কইতে শুনছো?

চোখের পানি ধুইয়ে নিয়ে কাম করবার গেছি গৌহাটি
জানিনা কিজন্যে পুলিশ দইরে দুই হাতের ছাপ্পা নিল
বাইত্তে আইয়া দেহি কোর্টের নোটিশ
তাওতো কোনদিন রাগ করিনাই
খালি দুইহাত তুইলে আল্লার কাছে কানছি।

একটা কবিতা লেখলে হাজার হাজার প্রশ্ন কর
কিয়ারে বুঝিনা
জন্মভুমিতে নাগরিকত্বের পরীক্ষা কত নিষ্ঠুর
তোমরাতো পরীক্ষায় না বইয়াও পাশ
লাঠি ভর কইরে চলা আমাগো দাদারে জিগাও.
অহন পর্যন্ত কতবার পরীক্ষা দিল।

খালি একটা কবিতা লেখলে তোমাগো সয়না
সময় পাইলে একদিন আমাগো দুঃখের ঘাটে আয়ে দেইখে যাও
নদীতে কেমন বাইস্যা যায় আমাগো লাশ।

যে ভাষায় আমরা কান্দি
এই ভাষায় কবিতা লেখলে তোমরা ডরাও কে?
তোমাগো আমাগো চোখের পানিতো একই
তোমাগো আমাগো দুঃখের ঠিকানাতো একটাই
তোমাগো আমাগো দেশও একটাই
যে দেশটা কাঁটাতারের ভেতর বন্দী।

বুকের যন্ত্রনার আগুন দিয়া আমরা এই মশালডা জ্বালাইছি
এই মশাল দেইখে তোমরা ডরাওকে?
এই আগুন কোনদিন তোমাগো বাড়ী পুড়বনা
আমাগো মিছিলের লক্ষ্য শুধু ঐ রাজার বাড়ী।।