নিরীশ্বরবাদী বিজ্ঞান লেখক জাফর ইকবালের উপর ধর্মবাদী হামলা

লেখকঃ হোসেন নীল

জাফর ইকবাল বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক। তিনি ব্যক্তিগতভাবে নিরীশ্বরবাদী। এজন্য ধর্মবাদীরা তাকে শত্রু বানিয়েছে। ধর্মবাদীরা তাকে অনেক আগে থেকেই

বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক জাফর ইকবাল

বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক জাফর ইকবাল

হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অতঃপর যে ধর্মবাদীরা গত শনিবার সন্ধ্যা বেলায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক জাফর ইকবালের উপর হামলা চালায় ও যাদের একজন শিক্ষার্থীদের হাতে ধরা পড়ে প্রহৃত হয় তারা নাকি কোন সংগঠনের নয়, বরং ইসলামবাদী মতাদর্শ থেকে এটা করেছে এমন পুলিশী বক্তব্য শোনা যায়। এছাড়া হাসিনা বলছে হামলাকারীরা ধর্মান্ধ।

ধর্মবাদীরা মতাদর্শ থেকেই সব কাজ করে। আর তারা স্বভাবতই ধর্মান্ধ। এটাই তাদের অহংকার। তারা সামন্তবাদী। তারা সমাজ সভ্যতার রথের চাকা পেছনে সুদূর অতীতে নিয়ে যেতে চায়–সামন্ততান্ত্রিক সমাজের দিকে যখন ভুমিদাস ও দাসদের উপর জমিদার ও দাসমালিকদের বর্ধিত শোষণ ও নিপীড়ণ বজায় ছিল। বর্তমানে একদিকে যেমন মজুরী দাসত্ব, অপরদিকে সামন্ত সমাজের বর্ধিত শোষণ ও নিপীড়ণও রয়ে গেছে। আর উক্ত সামন্ততান্ত্রিক মতাদর্শই ধর্মবাদের ভিত্তি।

সমাজ সভ্যতা যাতে বিপ্লবী পথে অগ্রসর হতে না পারে সেজন্য সাম্রাজ্যবাদের দালাল প্রতিক্রিয়াশীল সরকার বহুবিধ উপায়ে ধর্মবাদকে এগিয়ে নিচ্ছে। বিদ্যমান সমাজের শিক্ষাব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ধর্মবাদীদের

জাফর ইকবালের উপর হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদ হয়েছে। শাবিতে মানববন্ধন হয়েছে

জাফর ইকবালের উপর হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদ হয়েছে। শাবিতে মানববন্ধন হয়েছে

হাতে দেয়া হয়েছে। ফলে অবৈজ্ঞানিক কুসংস্কারের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব বইপুস্কত বিকৃত ও অন্ধ। একজন প্রগতিশীল ধরণের বুদ্ধিজীবি হিসেবে জাফর ইকবাল বরাবর এসব বিরোধিতা করেন, অপরিদকে তিনি প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রের সাথে আপোষও করে চলেন। আর এটাই হচ্ছে সমস্যা। দুই নৌকায় পা দেয়া যায়না। ফলে এরা জানেননা কী ষড়যন্ত্র তাদের জন্য অপেক্ষা করে থাকে।

জাফর ইকবাল বাংলাদেশের একজন বিরাট জ্ঞানসাধক। তিনি অত্যন্ত বিনয়ীও বটে। তিনি রক্ত দিয়ে আজকে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন ধর্মবাদীদের উৎস কোথায় নিহিত। কোথা থেকে তারা শক্তি পাচ্ছে আর এর সমাধানই বা কী। সাম্যবাদের বৈজ্ঞানিক মতবাদই সকল শোষণ ও নিপীড়ণের অবসান করবে। এটা সৎ ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবিদের উপলব্ধি করতে হবে আর সেইসাথে সাম্যবাদী পথে সমাজের বিপ্লবী রূপান্তরের প্রয়াস চালানো দরকার।■