সিরাজ সিকদার রচনাঃ কোষ ও পাঠচক্র সদস্যপদের যোগ্যতা, তাদের করণীয়, শৃংখলা, পরিচালকের দায়িত্ব

 

সিরাজ সিকদার

সিরাজ সিকদার

 


পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলন কর্তৃক রচনা প্রকাশ ১৯৬৮

পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি কর্তৃক সংশোধিত আকারে সেপ্টেম্বর ১৯৭১-এ পার্টির খসড়া সংবিধানে পেশকৃত ও জানুয়ারী ১৯৭২-এ পার্টির প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে গৃহীত

পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি কর্তৃক কমরেড সিরাজ সিকদারের নির্বাচিত সাংগঠনিক রচনাবলীর সংকলনে এর প্রকাশ আগষ্ট ১৯৭৪

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বাংলাদেশ কর্তৃক সর্বহারা পথ (www.sarbaharapath.com) এর অনলাইন প্রকাশনা ৩ ডিসেম্বর ২০১২


পিডিএফ

সদস্যপদ

পূর্ববাংলার শ্রমিক, গরীব চাষী, নিম্ন মাঝারি চাষী, বিপ্লবী সৈনিক বা অন্যান্য বিপ্লবী ব্যক্তি যারা পার্টির সংবিধান স্বীকার করেন, পার্টির কোন একটি সংগঠনে যোগ দেন এবং সেখানে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন, পার্টি শৃংখলা মেনে চলেন, পার্টির চাঁদা দেন, তারা সকলেই পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সদস্য, প্রার্থী সদস্য হতে পারেন।

পার্টিতে ভর্তির নিয়মাবলী

পাঠচক্র, গেরিলা গ্রুপ বা পার্টির অধীন কোন গণসংগঠনে সাফল্যজনক কাজের পরিপ্রেক্ষিতে এবং পুংখানুপংখ কেডার ইতিহাস সংগ্রহ ও পর্যালোচনার ভিত্তিতে জেলা কমিটি কর্তৃক প্রার্থী সদস্যপদ প্রদান করতে হবে। প্রার্থী সদস্য পদের আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে, কমপক্ষে একজন সদস্য দ্বারা সুপারিশকৃত হতে হবে।

কমপক্ষে তিনমাস প্রার্থী সদস্য পদে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের পর সদস্যপদ প্রদান করতে হবে। প্রার্থী সদস্যপদ ও সদস্যপদ জেলা কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত হবে।

প্রার্থী সদস্যপদ বা সদস্যপদ যারা লাভ করেছেন তাদের মধ্যে তিন বা পাঁচজনকে নিয়ে একটি কোষ গঠিত হবে।

প্রতিটি কোষের একজন নেতা গণতান্ত্রিক পরামর্শের ভিত্তিতে পরিচালকের অনুমোদনসহ নির্বাচিত হবে।

মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওসেতুঙ চিন্তাধারা অধ্যয়ন ও প্রয়োগ করা এবং পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টিতে যোগদানে ইচ্ছুকদের নিয়ে প্রথমে পাঠচক্র গঠন করতে হবে।

পাঠচক্রে তিন বা পাঁচজন সদস্য থাকবে। তাদের মাঝ থেকে গণতান্ত্রিক পরামর্শের ভিত্তিতে একজন নেতা নির্বাচিত করতে হবে।

কোষ পাঠচক্রসমূহ তাদের সদস্যদের দায়িত্বসমূহ

১। প্রতিনিয়ত মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওসেতুঙ চিন্তাধারা সৃজনশীলভাবে অধ্যয়ন ও প্রয়োগ করা।

২। পূর্ববাংলা ও বিশ্বের বিরাট সংখ্যাধিক লোকের জন্য সর্বান্তঃকরণে কাজ করা।

৩। প্রতিনিয়ত শ্রমিক-কৃষকের (ক্ষেতমজুর, গরীব ও নিম্ন মাঝারি চাষী) সাথে একীভূত হতে হবে।

৪। পার্টির অভ্যন্তরে ও বাইরে বিভিন্ন আকৃতির সংশোধনবাদ, (আধুনিক সংশোধনবাদ, নয়া সংশোধনবাদ, ট্রটস্কি-চেবাদ ও অন্যান্য সকল বিকৃতি ও সংশোধন) ও তার প্রকাশ এবং ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শ ও তার প্রকাশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করা ও বর্জন করা।

৫। বিভিন্ন আকৃতির সংশোধনবাদ ও ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শপূর্ণ ব্যক্তিদের দ্বারা পার্টির ক্ষমতা দখল ও নীতি নির্ধারণ ঠেকানো।

৬। তাদের অবশ্যই বিনয়ী ও সতর্ক হতে হবে, অহংকার ও অসহিষ্ণুতার প্রতি সজাগ থাকতে হবে, আত্মসমালোচনার প্রেরণায় উদ্ভুদ্ধ হতে হবে। নিজেদের কাজের ভুলত্রুটি শোধরানোর জন্য সচেষ্ট হতে হবে। অন্যান্য কমরেডদের প্রতি যথাযথ সমালোচনা চালাতে সাহসী হতে হবে।

৭। তাদের অবশ্যই বিপুল সংখ্যাধিক লোকের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একত্রে কাজ করতে সক্ষম হতে হবে। কেবলমাত্র যারা তাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেন, সেই সব লোকের সাথে ঐক্যবদ্ধ হলেই চলবেনা বরং যারা তাদের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেন, সেইসব লোকের সঙ্গে, এমনকি পূর্বে যারা তাদের বিরোধিতা করেছিলেন এবং বাস্তব কাজে ভুল প্রমাণিত হয়েছেন এমনসব লোকের সঙ্গেও ঐক্যবদ্ধ হতে নিপুণ হতে হবে।

৮। তাদেরকে অবশ্যই গণসংগ্রামের এবং বিপ্লবের প্রবল ঝড় তরঙ্গে পরীক্ষিত হয়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠতে হবে।

৯। তাদেরকে অবশ্যই পার্টির গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা অনুসরণে আদর্শ হতে হবে। ‘জনসাধারণ থেকে আসা এবং জনসাধারনের নিকট যাওয়া’–এই নেতৃত্বের পদ্ধতিকে অবশ্যই আয়ত্ব করতে হবে এবং জনসাধারণের মতামত শুনতে নিপুণ হতে হবে। গণতান্ত্রিক রীতিকে আয়ত্ব করতে হবে।

১০। তাদেরকে অবশ্যই সর্বদা শ্রেণী বিশ্লেষণ ও শ্রেণী অনুসন্ধানের পদ্ধতি অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। অনুসন্ধান ব্যতিরেকে কথা বলা বন্ধ করতে হবে।

১১। তারা সমালোচনা, রিপোর্ট করা, পরিস্থিতির মূল্যায়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অন্যান্য সকল কাজে আত্মগতভাব, ভাসাভাসাভাব ও একতরফাবাদকে পরিহার করে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদী হবেন, একঘেঁয়ে লেখা পরিহার করবেন।

১২। এভাবে তারা সভাপতি মাও-এর কেডার চরিত্র অর্জন করবেন। ‘এই কেডার ও নেতারা অবশ্যই মার্কসবাদ-লেনিনবাদ বুঝেন, তারা রাজনীতিতে দূরদর্শী, কাজে দক্ষ, আত্মবলিদানের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ, স্বাধীনভাবে সমস্যা সমাধানে সক্ষম; বাধা বিপত্তিতে অবিচলিত এবং জাতি, শ্রেণী ও পার্টির জন্য নিষ্ঠার সাথে কর্মরত। … এই ধরণের স্বার্থপরতা থেকে ও হামবড়াভাবের সংকীর্ণতাবাদ থেকে মুক্ত হতে হবে, তাদের অবশ্যই নিঃস্বার্থ জাতীয় ও শ্রেণীর বীর হতে হবে’।

১৩। তিনি আরো বলেছেন, ‘একজন কমিউনিস্টের মুক্তমন, বিশ্বস্ত ও সক্রিয় হতে হবে। বিপ্লবের স্বার্থকে নিজের প্রাণের চেয়েও ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে এবং ব্যক্তিগত স্বার্থকে বিপ্লবের স্বার্থের বশে রাখতে হবে, তাকে সর্বদা এবং সর্বক্ষেত্রে সঠিক নীতিতে দৃঢ় থাকতে হবে এবং সমস্ত ভুল চিন্তাধারা ও আচরণের বিরুদ্ধে অক্লান্তভাবে সংগ্রাম করতে হবে, যাতে করে পার্টির যৌথ জীবনকে সুসংবদ্ধ এবং পার্টি ও জনসাধারণের মধ্যকার সংযোগকে সুদৃঢ় করা যায়; ব্যাক্তি বিশেষের চাইতে পার্টির ও জনসাধারণের সম্বন্ধে এবং নিজের চেয়ে অপরের সম্বন্ধে তাকে বেশি যত্নশীল হতে হবে।

১৪। তাদেরকে ‘তিনটি বৃহৎ শৃংখলা’, ’মনোযোগ দেবার আটটি ধারা’, ‘তিন-আট কর্মপদ্ধতি’ এবং ‘চার প্রথম’ রপ্ত করতে হবে।

তিনটি বৃহৎ শৃংখলা

১। সকল কার্যক্রিয়ায় আদেশ মেনে চলুন।

২। জনসাধারনের কাছ থেকে একটি সূচ কিংবা সূতোও নেবেননা।

৩। দখলকৃত সমস্ত জিনিস জমা দেবেন।

মনোযোগ দেবার আটটি ধারা

১। ভদ্রভাবে কথা বলুন।

২। ন্যায্যমূল্যে কেনাবেচা করুন।

৩। ধার করা প্রতিটি জিনিস ফেরত দিন।

৪। কোন জিনিস নষ্ট করলে তার ক্ষতিপূরণ করুন।

৫। লোককে মারবেননা, গাল দেবেননা।

৬। ফসল নষ্ট করবেননা।

৭। নারীদের সাথে অশোভন ব্যবহার করবেন না।

৮। বন্দী সৈন্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেননা।

তিনআট কর্মপদ্ধতি

দৃঢ়, সঠিক রাজনৈতিক লাইন অনুসরণ, একটি সহজ জীবনযাত্রা, কঠোর কাজ করার অভ্যাস, রণনীতি ও কৌশলে নমনীয়তা, সতর্কতা, মনোযোগিতা, সজীবতা।

চার প্রথম

১। মানুষ ও অস্ত্রের মধ্যে প্রথম স্থান দিতে হবে মানুষকে।

২। রাজনৈতিক কাজ ও অন্যান্য কাজের মধ্যে প্রথম স্থান দিতে হবে রাজনৈতিক কাজকে।

৩। দৈনিক নির্ধারিত রাজনৈতিক কাজ ও মতাদর্শগত কাজের মধ্যে প্রথম স্থান দিতে হবে মতদর্শগত কাজকে।

৪। মতাদর্শগত কাজের মধ্যে বই-এর চিন্তাধারার চাইতে মানুষের মনে যে সকল জীবিত ধারণা রয়েছে তাকে প্রথম স্থান দিতে হবে।

◦ অর্থাত মানুষকে, রাজনৈতিক কাজকে, মতাদর্শগত কাজকে এবং জীবিত ধারণাকে প্রথম স্থান দিতে হবে।

কোষ সদস্যদের নিম্নলিখিত শৃংখলা পালন করতে হবে

পার্টির সাংগঠনিক নীতি হচ্ছে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতা।

পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতৃস্থানীয় সংস্থাসমূহ গণতান্ত্রিক পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন।

সমগ্র সংগঠনের অবশ্যই একক শৃংখলা মানতে হবে; ব্যক্তি সংগঠনের অধীন, সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরুর অধীন, নিম্নস্তর উচ্চস্তরের অধীন ও সমগ্র পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির অধীন থাকবে।

কংগ্রেস অথবা পার্টি-কর্মীদের সাধারণ সভায় পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতৃস্থানীয় সংস্থার নিজের কার্যাবলীর নিয়মিত রিপোর্ট পেশ করবে।

নেতৃস্থানীয় সংস্থাকে সর্বদা পার্টি-অভ্যন্তরের ও বাইরের জনসাধারণের মতামত শোনা ও তাদের তদারকি মেনে নিতে হবে।

পার্টির সংগঠনকে ও বিভিন্ন স্তরের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদেরকে সমালোচনা করার ও তাদের নিকট প্রস্তাব পেশ করার অধিকার পার্টি-সদস্যদের রয়েছে।

পার্টি-সংগঠনের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ সম্পর্কে পার্টি-সদস্যদের যদি ভিন্নমত থাকে, তাহলে সেটা সে পোষণ করতে পারে এবং তার এমন অধিকার রয়েছে যে স্তর অতিক্রম করে কেন্দ্রীয় কমিটি ও তার সভাপতির নিকট রিপোর্ট করতে পারবে।

এমন রাজনৈতিক পরিবেশের সৃষ্টি করা উচিত যার মধ্যে থাকবে যেমনি কেন্দ্রীকতা তেমনি গণতন্ত্র, যেমনি শৃংখলা তেমনি স্বাধীনতা, যেমনি একক সংকল্প তেমনি থাকবে ব্যক্তির মনের প্রফুল্লতা ও সজীবতা।

জাতীয় মুক্তিফৌজ এবং অন্যান্য বিপ্লবী গণসংগঠন সকলে অবশ্যই পার্টির নেতৃত্ব মানবে।

পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃস্থানীয় সংস্থা হচ্ছে জাতীয় কংগ্রেস ও তার দ্বারা নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটি। স্থানীয় সৈন্যবাহিনীর ও বিভিন্ন বিভাগগুলোর পার্টির নেতৃস্থানীয সংস্থা হচ্ছে তাদের সমস্তরের পার্টি-কংগ্রেস অথবা পার্টি-সদস্যদের সাধারণ সভা ও তার দ্বারা নির্বাচিত পার্টির কমিটি।

পার্টির বিভিন্ন স্তরের কংগ্রেস বিভিন্ন স্তরের পার্টি কমিটি কর্তৃক আহুত হয়।

স্থানীয় সৈন্যবাহিনীর পার্টির কংগ্রেস আহ্বান করাটা এবং নির্বাচিত পার্টি-কমিটির সদস্যদের অবশ্যই উচ্চতর স্তরের সংগঠনের অনুমোদিত হতে হবে।

একীভূত নেতৃত্ব, জনসাধারণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ও প্রশাসন ব্যবস্থা সহজতর করার নীতির ভিত্তিতে পার্টির বিভিন্ন স্তরের কমিটিগুলো প্রয়োজনীয় সংস্থা প্রতিষ্ঠিত করবে বা নিজেদের প্রতিনিধি সংস্থা প্রেরণ করবে।

সাংগঠনিক শৃংখলা ভঙ্গ করলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে

পার্টি-সদস্য পার্টির শৃংখলা লংঘন করলে পার্টির বিভিন্ন স্তরের সংগঠনের নিজেদের ক্ষমতার আওতাধীনে, বাস্তব অবস্থা অনুসারে পৃথক পৃথকভাবে শাস্তি দিতে হবে, সতর্ক করতে হবে, গুরুতরভাবে সতর্ক করতে হবে, গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে, পার্টির মাঝে যাচাই করে দেখতে হবে অথবা পার্টি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।

পার্টি-সদস্যকে পার্টির মাঝে রেখে যাচাই করার কাল খুব বেশী হলেও ছয় মাসের বেশী হতে পারে না, এই সময় তার ভোটদান, নির্বাচন করার ও নির্বাচিত হওয়ার অধিকার থাকবে না।

পার্টি-সদস্যদের মধ্যে যারা উৎসাহ-উদ্দীপনাহীন এবং শিক্ষাদানের পরেও পরিবর্তিত হয় না তাদেরকে পার্টি থেকে বেরিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া উচিত।

পার্টি-সদস্য পার্টি থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে পার্টিশাখার অনুমোদনক্রমে তার নাম কেটে দিতে হবে এবং পরবর্তী উচ্চস্তরে পার্টি-কমিটির কাছে রেকর্ড রাখার জন্য রিপোর্ট পেশ করতে হবে।

প্রয়োজন হলে ইহা সমগ্র সংগঠন ও জনসাধারণের নিকট জানাতে হবে।

অকাট্য প্রমাণের দ্বারা সিদ্ধ বিশ্বাসঘাতক, গুপ্তচর, একেবারে অনুশোচনাবিহীন পুঁজিবাদের পথগামী কর্তৃস্থানীয় ব্যক্তি, অধঃপতিত ব্যক্তি, শ্রেণীগতভাবে বৈরী ব্যক্তিদেরকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করতে হবে, এবং এদেরকে পার্র্টিতে পুনরায় যোগদান করতে অনুমোদন দেওয়া হবে না।

কোষ পাঠচক্র পরিচালকের দায়িত্ব

১। যিনি পাঠচক্র ও কোষ পরিচালনা করবেন তিনি পরিচালক নামে পরিচিত হবেন।

২। পরিচালক কোষ বা পাঠচক্রের নিকট ছদ্মনামে পরিচিত হবেন।

৩। পরিচালক কোষ বা পাঠচক্রের নিকট নিজের নাম, ঠিকানা, পেশা, সাংগঠনিক সম্পর্ক ও পরিচয় বা সংগঠনের অন্য কারো পরিচয় বা সাংগঠনিক কার্যাবলী (অপ্রয়োজনীয়ভাবে) প্রকাশ করবেন না।

৪। পরিচালক পাঠচক্র ও কোষের সভায় অপ্রয়োজনীয় কাউকে নিয়ে যাবেননা।

৫। তিনি অপ্রযোজনীয়ভাবে কোষ ও পাঠচক্রের সভার সময়, স্থান, তারিখ অন্য কারো নিকট প্রকাশ করবেন না।

৬। পরিচালক অপ্রয়োজনীয়ভাবে কোষ ও পাঠচক্রের সদস্যদের নাম, ঠিকানা বা অন্য কোন পরিচয় কারো নিকট প্রকাশ করবেন না বা এক কোষ, পাঠচক্রকে অন্য কোষ ও পাঠচক্রের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবেন না।

৭। তিনি পাঠচক্র ও কোষ এমনভাবে পরিচালনা করবেন যাতে এককোষ বা পাঠচক্র সদস্য অন্য কোষ বা পাঠচক্র সদস্যদের চিনতে সক্ষম না হয়।

৮। পরিচালক পাঠচক্রের নিজ পরিচালনাধীন অগ্রসর ব্যক্তি যারা সংগঠনের প্রার্থী সদস্য হওয়ার যোগ্য তাদের দ্বারা নির্দিষ্ট কমিটিতে কোষ সদস্য পদের জন্য আবেদন করাবেন। আবেদনপত্র কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হলে তিনি আবেদনকারীদের নিয়ে কোষ গঠন করবেন।

প্রার্থী সদস্যদের মাঝে যারা যথাযথভাবে প্রার্থী সদস্যপদের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং কমপক্ষে তিনমাস প্রার্থী সদস্য ছিলেন, তাদেরকে সদস্যপদ প্রদানের জন্য উপরস্থ কমিটির নিকট সুপারিশ করবেন।

উপরস্থ কমিটি কর্তৃক পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ প্রদত্ত হলে তিনি তা নির্দিষ্ট কর্মীদের জানিয়ে দেবেন।

৯। পরিচালক তার পরিচালনাধীন কোষ বা পাঠচক্র সদস্যদের সাথে গণতান্ত্রিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে নেতা নির্বাচিত করবেন।

১০। পরিচালক নেতার মাধ্যমে কোষ বা পাঠচক্রের সদস্যদের সভা আহ্বান করবেন।

১১। প্রয়োজনবোধে তিনি নিজে কোষ বা পাঠচক্রের সভা আহ্বান করবেন।

১২। প্রতি সভা শেষে পাঠচক্র ও কোষের কার্যাবলীর লিখিত রিপোর্ট তৈরী করে তা সংশ্লিষ্ট কমিটিতে নিয়মিত পেশ করবেন।

১৩। কোষের যে সকল সদস্য নিজে পাঠচক্র পরিচালনা করবেন তার কার্যাবলীর রিপোর্ট নিজ কোষের সভায় পেশ করবেন।

১৪। পরিচালক কোষ বা পাঠচক্রকে সংখ্যাভিত্তিক নামকরণ করবেন।

১৫। পরিচালক তার অধীন কোষ, পাঠচক্র এবং সহানুভূতিশীলদের নিকট থেকে নিয়মিত ফি ও চাঁদা সংগ্রহ করবেন।

১৬। পরিচালক তার অধীন কোষের নিকট সাংগঠনিক নির্দেশাবলী অতি দ্রুত পৌঁছে দেবেন এবং তা সভায় পুংখানুপুংখভাবে আলোচনার জন্য পেশ করবেন, যাতে সবাই এর তাৎপর্য বুঝতে পারেন এবং তা বাস্তবায়নের পন্থা নির্ণয় করতে পারেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন।

১৭। কোন কোষ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে তা নির্দিষ্ট স্তরের কমিটির মাধ্যমে করতে হবে।

১৮। কোষকে পুনর্গঠিত করলে তা কমিটির অনুমতি নিয়ে করতে হবে এবং পুনর্গঠিত করার পর কমিটিকে জানাতে হবে।

১৯। পরিচালক নিজের অবর্তমানে যিনি কোষ ও পাঠচক্রসমূহকে পরিচালনা করবেন তার নাম, ঠিকানা কোষ ও পাঠচক্রের কাছে দেবেন এবং উচ্চতর কমিটিকে জানাবেন।

২০। পরিচালক কোন প্রশ্নে বা বিষয়ে কোষ বা পাঠচক্রকে বুঝাতে অক্ষম হলে উচ্চতর স্তর থেকে জেনে নিয়ে বা অধ্যয়ন করে বুঝাবেন। কিন্তু অপ্রয়োজনীয়ভাবে উচ্চতর স্তরের কর্মীদের পাঠচক্রের সভায় নিয়ে আসবেন না।

২১। পরিচালক কোষ সদস্যদের এমনভাবে শিক্ষিত করবেন যাতে তারা প্রত্যেকে পাঠচক্র পরিচালনা করতে পারেন।

২২। পরিচালক তার পরিচালনাধীন কোষ ও পাঠচক্রের সমালোচনা, আত্মসমালোচনা, প্রস্তাব উচ্চস্তরে যথারীতি পাঠিয়ে দেবেন।

২৩। পরিচালক পাঠচক্র ভেঙ্গে দিতে চাইলে বা কোন পাঠচক্র সদস্যকে বাতিল করতে চাইলে উচ্চস্তরের অনুমতি লাগবে।

                                          পরিচালক

                                               ↓

এক বা একাধিক পাঠচক্র ——————  এক বা একাধিক কোষ

                                                                        ↓

কোষ সদস্য/পরিচালক

                                                                         ↓

পাঠচক্র ————— কোষ