লেখকঃ হোসেন নীল
এস আলম গ্রুপ বাংলাদেশের এক পুঁজিপতি গ্রুপ। এরা পুঁজি সঞ্চয় করতে করতে এখন কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী চীনের সেপকলি ইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন প্রায় পুরো টাকাটা দেবে আর এই কেন্দ্র নির্মাণ করে দেবে । বাংলাদেশের সরকার এদের মধ্যে সমন্বয় করে দিচ্ছে। এজন্য তাদের পরিবেশ সার্টিফিকেটও লাগেনি।
এস আলম গ্রুপ মিথ্যা প্রচার চালায় যে মাত্র ১৫০টি পরিবার আশেপাশে আছে, অথচ
দেখা গেল সেখানে ৭০০০ পরিবার আছে। তাদের ভিটা থেকে উচ্ছেদ করা শুরু হল। জনগণ আন্দোলন শুরু করে।
রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে সুন্দরবন ধ্বংস করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছে সরকার। সেটা ভারতের উদ্যোগ।
চট্রগ্রামের মানুষের এটা জানা আছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস হতে দিতে চাননা তারা, নিজেরাও উচ্ছেদ হতে চাননা তারা।
মার্চ ২৩, ২০১৬ ৩০০০০ জনগণ সমাবেশিত হয় প্রজেক্ট অন্য কোথাও সড়িয়ে নেয়া আর জমি ফেরত পাবার দাবিতে। তারপর এলাকায় পুলিশী সন্ত্রাস শুরু হয়। ৩ এপ্রিল পুলিশ প্রজেক্ট বাঁধাগ্রস্থ করার অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতার করে। ৪ এপ্রিল ১৫০০০
বিক্ষোভকারী ‘বসতবাড়ী রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে সমবেত হন, সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালালে ৫ জন নিহত হন আর আহত হন শতাধিক।
এ ঘটনার তাৎপর্যঃ
১। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র পরিবেশের ক্ষতি করে, উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল ধ্বংস করে এটা জনগণ জানেন। আর জীবজগত ধ্বংস হওয়ার সাথে মানুষের ধ্বংস জড়িত এটাও তারা জানেন। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতে গাছপালা, প্রাণি ও পরিবেশ ধ্বংস করে চরমভাবে নিন্দিত। চট্রগ্রামে এটা করা হলে সমুদ্রের প্রাণি মারা যাবে, মানুষের ফুসফুস কালো ধোঁয়া দ্বারা বিষাক্ত হবে, ভুগর্ভের পানিস্তর নীচে নেমে যাবে। লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরবাড়ী হারাবে যাদের পুনর্বাসন করা হবেনা, কৃষি জমি হারাবে, পেশা হারাবে।
২। বাংলাদেশের বুর্জোয়া শ্রেণী ও সরকার আর তার প্রভু ভারত সম্প্রসারণবাদ বা চীন সাম্রাজ্যবাদ এদেশের মানুষ, উদ্ভিদ, প্রাণি ও পরিবেশের ক্ষতি চায়।
৩। জনগণ বাঁচতে চান।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৩য় বার্ষিকী
আজ থেকে তিন বছর আগে রানা প্লাজা গার্মেন্ট গণহত্যা সংঘটিত হয়। তার বিচার
হয়নি। সমগ্র বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যায় কীভাবে পুঁজিপতিরা আর তাদের প্রভু সাম্রাজ্যবাদীরা
কত কষ্ট দিয়ে সহস্র সহস্র মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। আজো শ্রমিক ন্যুনতম কোন মজুরি শিল্পকারখানায় পায়না। যে মজুরি তারা পায় তা
দিয়ে তারা ঘর ভাড়াও দিতে পারেনা।
তাদের
ছেলেমেয়ে, বাবা মা কী খাবে, কী পড়বে তা তারা জানেননা।
সুতরাং বিদ্রোহ অপরিহার্য।
তবে বিদ্রোহ হোক এক সাম্যবাদী সমাজের লক্ষ্যে অনেক পরিকল্পিতভাবে।