সিরাজ সিকদার রচনাঃ প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির দশম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের ইশতেহার

সিরাজ সিকদার

সিরাজ সিকদার


পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি কর্তৃক রচনা ও প্রকাশ শেষার্ধ ১৯৭৩

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বাংলাদেশ কর্তৃক সর্বহারা পথ (www.sarbaharapath.com) এর অনলাইন প্রকাশনা ৩০ নভেম্বর ২০১৪


পিডিএফ

পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির দশম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন সাফল্যজনকভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি।

সভায় “মহান বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণ” এর অভিজ্ঞতার সারসংকলন করা হয়। বর্তমানের দায়িত্ব এবং ভবিষ্যতে শত্রুর রণনৈতিক আক্রমণ ও আমাদের রণনৈতিক আত্মরক্ষার দিকসমূহ নির্ণয় করা হয়।

১। মহান বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণ সংক্রান্তঃ

▬ বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের সিদ্ধান্ত পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির একটি ঐতিহাসিক সুদুরপ্রসারী তাৎপর্যসম্পন্ন, যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

▬ এ সিদ্ধান্ত আমাদের আত্মগত অবস্থা এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বস্তুগত অবস্থার সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ, এ কারণে এ সিদ্ধান্তের লক্ষ্যসমূহ সাফল্যের সাথে বাস্তবায়িত করা সম্ভবপর হয়।

▬ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সংগঠনের পরবর্তী বিকাশের জন্য একান্ত প্রয়োজন ছিল।

▬ বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন মার্কসবাদী সামরিক লাইন পূর্ববাংলার বিশেষ অবস্থায় প্রয়োগের চমৎকার নিদর্শন।

▬ এ পরিকল্পনা এবং এর সাফল্যজনক বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্টি বিপ্লবী যুদ্ধের নিয়মবিধি আরো অধিকতর রপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

▬ এ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন আরো প্রমাণ করছে যে পার্টি তত্ত্বগত এবং অনুশীলনের ক্ষেত্রে সামরিক লাইনে পূর্বেকার বহু সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠেছে এবং নতুন সমস্যার যথাযথ সমাধান করেছে।

▬ একনাগাড়ে বিস্তৃত অঞ্চলে কাজ।

▬ শহরে ও গ্রামে ভাল কাজ।

▬ কাজের প্রধান দিক গ্রাম।

▬ আক্রমণের এলাকা ও পশ্চাদবর্তী এলাকা (Rear Area)।

▬ বিপ্লবী সাহসকে প্রাধান্য দিয়ে শত্রুর ঘাঁটি দখল। এভাবে বিপ্লবী যুদ্ধকে নতুন পর্যায়ে উন্নীত করা। জাতীয় শত্রু খতম থেকে শত্রুর অবস্থান আক্রমণ ও দখলের পর্যায়) এবং পুরোপুরি নতুন রণকৌশলের সৃষ্টি করা।

▬ অর্থ, অস্ত্র সমস্যার সমাধান করা।

▬ ব্যাপকভাবে কর্মী সংগ্রহ করা।

▬ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করা।

▬ তথাকথিত মুসলিম বাংলা ও জাসদের প্রভাবকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা।

▬ পূর্ববাংলার জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবে সত্যিকার সর্বহারা বিপ্লবীদের নেতৃত্ব সৃষ্টির পথে বিরাট অগ্রগতি সাধন করা।

▬ সুসুংবদ্ধকরণের সাথে সশস্ত্র সংগ্রামের সম্পর্ক আবিষ্কার করা।

▬ পূর্ববাংলার সর্বস্তরের জনগণের মাঝে ব্যাপক প্রচার এবং গণভিত্তিক পার্টি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিরাট অগ্রগতি সাধন।

▬ পার্টি ও নেতৃত্বের প্রতি কর্মী, গেরিলা, সহানুভূতিশীল, সমর্থক ও জনগণের দৃঢ়তর আস্থা সৃষ্টি।

▬ বিশ্বাসঘাতক ফজলু চক্রের অবশিষ্টাংশ এবং বিভিন্ন আকৃতির সংশোধনবাদীদের প্রতি দাঁতভাঙ্গা জবাব প্রদান করা।

▬ সংশোধনবাদীদের প্রভাব কাটিয়ে ফেলা এবং তাদের পুরোপুরি ধ্বংসকে ত্বরান্বিত করা।

▬ আগামী সংগ্রামের জন্য বিরাট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা।

▬ বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্টি উপরোক্ত সাফল্যসমূহ অর্জন করেছে।

এগুলো অর্জন করা সম্ভব হয়েছে পার্টির সঠিক লাইন এবং তা বাস্তবায়নে কর্মীদের দৃঢ় প্রচেষ্টা, পার্টির মধ্যকার কঠোর শৃংখলা ও লৌহকঠিন ঐক্য, পার্টির মধ্যকার এককেন্দ্র ও তার প্রতি কর্মীদের অবিচল আস্থা, উপদলবাদ ও বাম এবং ডান বিচ্যুতি বিরোধী পার্টির দৃঢ় নীতি ভিত্তিক সংগ্রাম, অসর্বহারা মতাদর্শের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান এবং এর প্রক্রিয়ায় সুসংবদ্ধকরণের মাধ্যমে।

পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রদত্ত কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতিতে (১৯৭৩ সালের ৩রা জুন) যথাযথই উল্লেখ করা হয়েছিল “১৯৭২ ও ১৯৭৩ সাল এ দু’বছর পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির বিকাশের সুবর্ণকাল।”

পার্টি যে সকল ভবিষ্যতবাণী করেছে তা সকলই বাস্তবায়িত হয়েছে, এভাবে সঠিক ভবিষ্যতদ্রষ্টা হিসেবে পার্টি অধিকতর আস্থা অর্জন করেছে।

২। আমাদের সফলতা বিরাট, কিন্তু সফলতায় আত্মতুষ্টি এলে চলবে না, অহংকার, ঔদ্ধত্য ও মাতব্বরীর বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে, বিনয়ী ও পরিশ্রমী হতে হবে, পার্টির লক্ষ্য বাস্তবায়িত করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বোকা বুড়োর মত লেগে থাকতে হবে। শত্রুকে ছোট করে দেখা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে দেখা, অতি আশাবাদী মূল্যায়ণ প্রভৃতি থেকে হটকারী কার্যকলাপ করা, অসর্তকতা প্রভৃতি অবশ্যই পরিহার করতে হবে।

রণনীতিগতভাবে শত্রুকে কাগুজে বাঘ হিসেবে দেখতে হবে, কিন্তু বাস্তব লড়াইয়ে তাকে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

শত্রুর শীতকালীন রণনৈতিক আক্রমণজনিত অসুবিধা কাটিয়ে উঠতে হবে।

আরো বৃহত্তর সংগ্রামের প্রস্তুতি আগামী বর্ষার পূর্বেই সম্পন্ন করতে হবে।

বর্ষাকালের তাৎপর্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে। অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কেডারদের মানোন্নয়ন ও রক্ষা করতে হবে।

অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কেডার যারা নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে সক্ষম, এরূপ কেডাররাই হচ্ছে সংগঠনের জন্য নির্ণায়ক।

অর্থ না থাকলে বা যে কোন ধরণের প্রতিকূল অবস্থার উদ্ভব হলেও নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে সক্ষম এরূপ কেডার থাকলে পার্টির পক্ষে সকল বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করা বা সবকিছু গড়ে তোলা সম্ভব।

৩। শত্রুর শীতকালীন রণনৈতিক আক্রমণ ও আমাদের রণনৈতিক আত্মরক্ষা সংক্রান্তঃ

▬ শত্রু শীতকালীন আক্রমণ চালাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে, ইতিমধ্যেই কোথাও কোথাও আক্রমণ শুরু করেছে, অচিরেই তারা সমগ্র পূর্ববাংলায় শুরু করবে।

▬ শত্রুর রণনৈতিক আক্রমণের লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামসমূহ থেকে আমাদের উৎখাত করা, দালালদের পুনর্বাসন করা, তাদের প্রশাসন কায়েম করা।

▬ শত্রুর রণনৈতিক আক্রমণের সময় আমাদের রণনৈতিক আত্মরক্ষার লাইন গ্রহণ করতে হবে।

এই আত্মরক্ষা হবে সক্রিয় আত্মরক্ষা অর্থাৎ নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে শত্রুকে প্রতিআক্রমণ করা। নিষ্ক্রিয় প্রতিরক্ষা পলায়নবাদ বা সবজায়গায় শত্রুকে ঠেকাবার পদ্ধতি অনুসরণ করে নিজেদের ধ্বংস করা নয়।

▬ রণনৈতিক আত্মরক্ষার সময় আমাদেরকে সুসংবদ্ধকরণের কাজ করতে হবে। বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে, যে সকল স্থানে সুসংবদ্ধকরণের কাজ ভাল ছিল সেখানে সশস্ত্র সংগ্রামের কাজও ভাল বিকাশ লাভ করেছে।

পক্ষান্তরে যে সকল স্থানে সুসংবদ্ধকরণ ভাল ছিলনা, সে সকল স্থানে সশস্ত্র সংগ্রামও ভাল বিকাশ লাভ করেনি।

কাজেই আগামী বর্ষায় আরো বিরাটাকার সশস্ত্র সংগ্রামের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে যদি সংগঠনকে ভালভাবে সুসংবদ্ধ করা যায়।

অতীতের সুসংবদ্ধকরণের ফলে আমরা যে বিকাশের লক্ষ্য অর্জন করেছি, পুনরায় এ বিকাশকে সুসংবদ্ধকরণ না করে অব্যাহত গতিতে বিকাশ চালিয়ে গেলে লাভের পরিবর্তে আমাদের ক্ষতি হবে, বিকাশের তুলনায় মান কম হবে, শৃংখলা দুর্বল হবে, ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শের বিভিন্ন প্রকাশ প্রাধান্য লাভ করবে এবং সুফল কুফলে রূপান্তরিত হবে এবং সংগঠন বিপর্যয়গ্রস্ত হবে।

আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতি পদক্ষেপেই সুসংবদ্ধ করে অগ্রসর হওয়া, তাহলে আমাদেরকে কেউই ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না।

এই রণনৈতিক আত্মরক্ষার সময় একতরফাবাদী ভুল এড়াতে হবে অর্থাৎ শুধুই আত্মরক্ষা আক্রমণ নয়, শুধুই আক্রমণ আত্মরক্ষা নয়, বা শুধুই মানোন্নয়ন লড়াই নয় অথবা শুধুই লড়াই মানোন্নয়ন নয়, এ ধরণের ঝোঁককে এড়াতে হবে।

সুসংবদ্ধকরণ ও লড়াইয়ের জন্য এলাকা, কর্মী এমনভাবে ভাগ করতে হবে যাতে সশস্ত্র সংগ্রাম বা মানোন্নয়ন কোনটাই পুরোপুরি ব্যাহত না হয়।

উদাহারণস্বরূপঃ

একটি অঞ্চলের মধ্যকার এক উপ অঞ্চলে মানোন্নয়ন ও সুসংবদ্ধকরণ চলল, তখন অন্য উপ অঞ্চলে যেখানে সুসংবদ্ধকরণ অপেক্ষাকৃত ভাল সেখানে লড়াই চলল।

অনুরূপভাবে কর্মীদের মধ্যকার এক অংশের মানোন্নয়ন ও সুসংবদ্ধকরণ চলল, আরেক অংশ লড়াই ও সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করল।

এভাবে পর্যায়ক্রমে সকল অঞ্চল ও কর্মীদের মানোন্নয়ন ও সুসংবদ্ধকরণ করা এবং একই সাথে লড়াইও চালিয়ে যাওয়া।

▬ এ সময়ে জিনিস-পত্র নিরাপদে রাখতে হবে;

▬ কর্মীদের নিরাপদে রাখতে হবে।

কর্মী স্থানান্তর ও পুনর্বন্টন করতে হবে (প্রয়োজন মত)।

৪। পার্টির সাধারণ লাইন হচ্ছে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া, জনগণকে জাগরিত ও সংগঠিত করা, পার্টির বিকাশ সাধন ও সুসংবদ্ধকরণ করা।

এ সাধারণ লাইন প্রতিটি কর্মীর অবশ্যই জানতে হবে, তা হলে কর্মীরা ভবিষ্যতের দিশা হারাবেন না, একই সঙ্গে পার্টির বিশেষ লাইনকেও রপ্ত করতে হবে, তাহলে বর্তমানের কাজ নির্ভুলভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

এভাবে আমরা বাস্তবনিষ্ঠ ও দুরদর্শী হতে পারব।

পার্টির বিশেষ লাইন হচ্ছেঃ

▬ পর্যায়ক্রমে সকল অঞ্চল ও কর্মীদের মানোন্নয়ন ও সুসংবদ্ধ করা, এভাবে সমগ্র পার্টিকে সুসংবদ্ধ করা;

▬ সুসংবদ্ধকরণের সাথে সাথে সামরিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া;

▬ আমাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাসমূহ সংগঠিত করা;

▬ গণসংগ্রাম পরিচালনা করা।

৫। গণসংগ্রাম পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের যে শুন্যতা রয়েছে তা যদি আমরা পুরণ করতে সক্ষম হই তবে—

▬ আমরা জনগণের সাথে পুরোপুরি একাত্ম হতে পারব;

জনগণকে ব্যাপকভাবে আমাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হবো;

জনগণকে সংগঠিত ও জাগরিত করতে হলে প্রকাশ্য রাজনৈতিক পার্টির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে অনেকের মাঝে যে ধারণা রয়েছে তা দূর করা। এভাবে আমাদের নেতৃত্বে পরিচালিত নয় এরূপ প্রকাশ্য সংগঠনসমূহের অস্তিত্বের বিলোপ করা।

▬ আমাদের বহু কেডারকে কাজে লাগানো;

প্রভৃতি লক্ষ্য অর্জন করতে আমরা সক্ষম হবো।

৬। সশস্ত্র সংগ্রাম, গণসংগ্রাম এবং মানোন্নয়ন ও সুসংবদ্ধকরণের লক্ষ্যসমূহ আমরা যদি অর্জন করতে পারি, তবে আমরা বিপ্লবের মূল পথে উপনীত হতে পারব। এর পরে প্রয়োজন হবে শুধু সেই পথ ধরে এগিয়ে চলা।

৭। শীতকালীন রণনৈতিক আত্মরক্ষার সময় নিম্নলিখিত অতিরিক্ত লক্ষ্যসমূহ অর্জন করতে হবেঃ

▬ পরিকল্পিতভাবে যে সকল স্থানে কাজ হয়নি সেখানে কর্মী প্রেরণ;

▬ ভাল পরিচালক, কেডার ও কমান্ডার গড়ে তোলা;

▬ শত্রুর যোগাযোগ পথের দুই পাশে ভাল কাজ গড়ে তোলা;

▬ সকল ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হওয়া;

▬ ভৌগলিক ফাঁকসমূহ দূর করা।

৮। বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের সময়কালীন পার্টির নেতৃত্বের ভুমিকা পর্যালোচনা করা হয়ঃ

▬ নেতৃত্ব সংগঠনের বাস্তব অবস্থার ভিত্তিতে বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের সাধারণ লাইন প্রণয়ন করেন;

▬ সাধারণ লাইন বিশেষ এলাকায় প্রয়োগ করেন;

▬ এভাবে বিন্দু ভেঙ্গে প্রবেশের মাধ্যমে সাধারণ লাইন বাস্তুবায়নে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন;

▬ এ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অন্যান্য অঞ্চলে সাধারণ লাইন বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ গাইডেন্স প্রদান করেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন;

এভাবে নীতি নির্ধারণ ও কেডারদের কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্ব সাফল্যের সাথে মার্কসবাদী নেতৃত্বের পদ্ধতি প্রয়োগ করেন।

৯। সভায় পার্টির অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়ঃ

▬ বর্তমানে অর্থনৈতিক সমস্যা পার্টির কেন্দ্রীয় সমস্যা নয়;

▬ গ্রামের সশস্ত্র তৎপরতাই অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের প্রকৃত উপায়;

▬ সশস্ত্র সংগ্রাম অব্যাহতভাবে চালিয়ে গেলে অর্থনৈতিক সমস্যার উদ্ভব হবে না।

১০। সভায় চমৎকার আন্তর্জাতিক বিপ্লবী পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হয়ঃ

▬ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সফল দশম কংগ্রেসকে পার্টি আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানায়।

কমরেড মাওসেতুঙ-এর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হিসেবে পুনঃনির্বাচনকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানায়।

লিন পিয়াও চক্রের ধ্বংস চীনা বিপ্লব ও বিশ্ববিপ্লবের মহান বিজয়।

▬ চিলির আলেন্দে সরকারকে উৎখাত করার জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে পার্টি নিন্দা জ্ঞাপন করছে;

▬ চিলির ঘটনাবলী প্রমাণ করেছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব পরিচালনা করা সম্ভব নয়;

চিলির জনগণ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার পদলেহী কুকুর ফ্যাসিস্ট জান্তা বিরোধী যে মহান, বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম পরিচালনা করছে পার্টি তাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।

পার্টি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে চিলির বীর জনগণ জাতীয় মুক্তি, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের জন্য অব্যাহতভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।

▬ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও সোভিয়েট সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ কর্তৃক মধ্যপ্রাচ্যের না যুদ্ধ না শান্তির অস্বস্তিকর পরিবেশ ও মধ্যপ্রাচ্যকে শোষণ ও লুন্ঠনের চক্রান্ত শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের জনগণ তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরাইলী আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে ন্যায়যুদ্ধ শুরু করেছে।

মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের এই ন্যায়যুদ্ধকে পার্টি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং তাদের বিজয় কামনা করে।

▬ গিনি বিসাউ প্রজাতন্ত্রের জন্মকে পার্টি স্বাগত জানায়।

১১। পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সংবিধান থেকে লিন পিয়াও সংক্রান্ত প্যারাগ্রাফটি পুরোপুরি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১২। সভায় কেন্দ্রীয় কমিটি ও তার সভাপতি কর্তৃক প্রকাশিত ও রচিত সকল দলিল, সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ গৃহীত হয়।

কমরেড শাহীন আলম প্রদত্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়।

১৩। সভায় সকল সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

১৪। সভায় সমালোচনা-আত্মসমালোচনা পরিচালনা করা হয় এবং পরবর্তী সভার সময় নির্ধারণ করে সভার কাজ সাফল্যজনকভাবে সমাপ্ত হয়