সারা দুনিয়ার সর্বহারা শ্রেণীর প্রতি মে দিবস ’১২তে যৌথ বার্তা-আসুন বিশ্ব সর্বহারা বিপ্লবের বিজয়ের জন্য লড়াই করি!

সারা দুনিয়ার সর্বহারা শ্রেণীর প্রতি মে দিবস ১২তে যৌথ বার্তা

 আসুন বিশ্ব সর্বহারা বিপ্লবের বিজয়ের জন্য লড়াই করি

 

প্রতি বছরের মতো এই মে দিবসেও সারা দুনিয়ার শ্রমিকশ্রেণী শিকাগোর শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান, সংহতির বন্ধনকে আরো জোরালো করেন, নিজেদের সারির পুনর্মূল্যায়ন করেন এবং বিশ্ব থেকে সকল ধরণের শোষণ ও নিপীড়ণের বিলোপের নিজেদের ল্যকে পুননিশ্চিত করেন। এই দিন বিশ্ব সর্বহারা বাহিনী ব্যাপক জনগণের সামনে রাস্তায় নেমে আসেন, সাম্রাজ্যবাদ ও প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এবং বিশ্ব জনগণের ও সকল দেশের তাদের ভাইবোনদের বিপ্লবী সংগ্রামের সমর্থনে তাদের মিলিত ধ্বনি ওঠে।

আর এর অন্যথা হতে পারেনা যেহেতু বিশ্ব পুঁজিবাদী সংকট সর্বত্র বিােভ জন্ম দিচ্ছে মেহনতী জনগণের জন্য ুধা ও দুর্দশার ভয়ানক দুঃখ কষ্ট আনয়ন করে, তাদের জন্য উপহার দিয়ে মৃত্যুর পথ, প্রকৃতির ধ্বংস এবং জনগণের জন্য হতাশা আর সাম্রাজ্যবাদীরা যার প্রস্তুতি নিচ্ছে সেই নতুন বিশ্বযুদ্ধের বিপদকে বাড়িয়ে দিয়ে যা সমাজ প্রগতির ভয়ানক বিরোধী এক যন্ত্রনাদায়ক ব্যবস্থার অবনতিকে বিশেষ গুরুত্বে তুলে ধরে।

নিপীড়িত দেশগুলিতে সাম্রাজ্যবাদী ও তার দালাল শাসকগোষ্ঠীগুলো তাদের নিজেদের বিলোপ ও অনিবার্য ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচার জন্য ছল চাতুরী করে সর্বহারা শ্রেনী ও জনগণের ওপর শোষণ ও নিপীড়ন তীব্র করছে যা বঞ্চিতদের প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বাড়িয়ে তুলছে।

অন্যের শ্রমের ওপর বেঁচে থাকা পরজীবি সংখ্যালঘুর লোভের সীমার দ্বারা শোচনীয় রূপ নেওয়া শোষক ও শোষিতদের মধ্যেকার, নিপীড়ক ও নিপীড়িতদের মধ্যেকার বৈর দ্বন্দ্ব সমাজের শক্তিসমূহকে বিশেষত সকল দেশের সর্বহারা শ্রেণীকে বিপ্লবের দিকে চালিত করছেঃ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির পেটের ভেতর শক্তিশালি বিােভ সমাবেশ ও ধর্মঘট, নিপীড়িত দেশগুলিতে সংকটের পরিণতির বিরুদ্ধে অগণিত উত্থান, এমনকি গণ অভ্যুত্থান, সাম্রাজ্যবাদ ও ভাড়াটে দালালদের বিরুদ্ধে ইরাক, আফগানিস্তান ও ফিলিস্তিনের জনগণের সশস্ত্র প্রতিরোধ…এমন ঘটনাসমূহ বিপ্লবী ঝড়ের অনস্বীকার্য চিন্হ।

যাহোক, শ্রমিকশ্রেণীর স্বতস্ফুর্ত সংগ্রাম ও বিদ্রোহসমূহ যথেষ্ট নয়, যথেষ্ট নয় অত্যাচারী আর শাসকদের উচ্ছেদ করতে, যথেষ্ট নয় দুর্দশার লাঘব করতে ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বন্ধ করতে। আমাদেরকে অতি অবশ্যই বিশ্বকে আমুল পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এটা স্বতস্ফুর্ত সংগ্রামকে সচেতন সংগ্রামে রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে, বিদ্রোহ থেকে বিপ্লবে যাওয়ার, জনগণের শত্র“দের মতাকে উচ্ছেদের লড়াই হাতে তুলে নেওয়ার, গনযুদ্ধের মাধ্যমে, জনগণের বিপ্লবী সহিংসতার মাধ্যমে শোষকদের পুরোনো প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার, এর ধ্বংসের ওপর শ্রমিক ও কৃষকদের নতুন রাষ্ট্র তথা সর্বহারা একনায়কত্ব  প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয়তা, যার চিত্র ভারত, তুরস্ক, পেরু ও ফিলিপাইনের জনগণ দেখতে পাচ্ছেন মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী কমিউনিস্টদের গনযুদ্ধের বিকাশ মারফত।

বিপ্লবে যার শৃংখল ছাড়া হারাবার কিছু নেই, তাই বর্তমান যুগের সবচেয়ে বিপ্লবী শ্রেণী সেই সর্বহারা শ্রেনী প্রতিটি দিন শোষণ ও সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অধিক গুরুত্ব অর্জন করছে। আর ব্যাপক জনগণের বিপ্লবী সংগ্রামকে নেতৃত্ব দেওয়ার তার দায়িত্ব মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদীদের প্রচেষ্টাসমূহের মধ্যে সমর্থিত হয় যারা এক নতুন ধরণের কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের অংশ হিসেবে নিজ দেশে তার স্বাধীন রাজিৈনতক পার্টি নির্মানে নিয়োযিত, যা হচ্ছে বিশ্ব সর্বহারা বিপ্লবের বিজয়ের এক অপরিহার্য হাতিয়ার, সমগ্র সমাজের জন্য সাম্রাজ্যবাদ যে ধ্বংসযজ্ঞ বয়ে এনেছে তার একমাত্র সমাধান।

কিন্তু এই উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় কেবল শোষকদের নির্যাতন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদই নয় বরং সুবিধাবাদও যা হচ্ছে খোদ শ্রমিক আন্দোলনের মূল কেন্দ্রে বুর্জোয়া মতাদর্শ ও রাজনীতি যা সর্বহারা শ্রেণীকে বিচ্যুত করে সাম্রাজ্যবাদী পুঁজিবাদ জন্ম দেয়ার আকাংখায়।

এমনটাই হচ্ছে ট্রটস্কীবাদী ও হোজাবাদীদের বর্তমান ভূমিকা, যার মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের মার্কসবাদী-লেনিনবাদী এবং এমনকি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বলে থাকে, যাদের তত্ত্ব ও অনুশীলন, যেমনটা নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)-র েেত্র দেখা গেছে, বিপ্লবের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, সাম্রাজ্যবাদ ও দালাল শাসক শ্রেণীর প্রতি আত্মসমর্পন এবং নেপালের গণযুদ্ধ ও নেপালের বীর জনগণের গণ গেরিলা বাহিনীর নিরস্ত্রীকরণে চালিত করেছে, যে-নেপালের জনগণের সংগ্রামের অভিজ্ঞতা হবে পুরোনো পার্টি ও এর সংশোধনবাদী লাইনের সামগ্রিক পরাজিত করার মাধ্যমে একটি সঠিক লাইনের ভিত্তিতে একটি নতুন পার্টিতে পুনঃঐক্যবদ্ধ হওয়ার এক উর্বর জমি।

“এভাকিয়ানের নয়া সংশ্লেষণ” নামে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি দ্বারা সমর্থিত একটি আক্রমন বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদকে সামাজিক সংস্কারের বুর্জোয়া তত্ত্ব দ্বারা প্রতিস্থাপন করার ভণ্ডামীপূর্ণ প্রচেষ্টা চালায়। রিমের সদস্য এসব সংশোধনবাদী পার্টিসমূহের আক্রমণ এবং রিম কমিটির চক্রান্তকারী নীরবতা এই আন্দোলনকে বিশ্ব সর্বহারার ভ্রূণকেন্দ্র থেকে ধ্বংস করেছে।

আজকে যখন বিপ্লবী আন্তর্জাতিকতাবাদী আন্দোলনের অনস্বীকার্য পতন ঘটেছে, মধ্যপন্থী মতাবস্থান যা ষড়যন্ত্রকারী নীরবতাকে বৈধতা দেয়, আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের ঐক্যের জন্য যা প্রধান বিপদ সেই সংশোধনবাদকে গোপন করে, বিশ্ব সর্বহারার প্রতি এর বিশ্বাসঘাতকতাকে ও নেপালের জনগণের প্রতি এর ঘৃণাকে আড়াল করে, কমিউনিস্টদের মতাবস্থানকে ধোঁয়াশা করে দেয় এবং শ্রমিকশ্রেণীকে তার বিপ্লবের রাজনৈতিক প্রশ্নসমূহ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ায় অংশ নিয়ে তার রাজনৈতিক আন্দোলনের পরাজয়সমূহে সংশোধনবাদের ভূমিকাকে পরিষ্কারভাবে বোঝাকে প্রতিরোধ করে।

এখন, সর্বহারা শ্রেনীর শত্র“দের সাথে সেই আপোষের ভিত্তিতে মধ্যপন্থা তাদের কথিত “রিমের বর্ধিত সম্মেলন”-এর মাধ্যমে  বিপ্লবী আন্তর্জাতিকতাবাদী আন্দোলনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রস্তাব করছে নিজ জ্ঞানের দেউলিয়াপনার প্রতি চোখ বুঁজে, সংশোধনবাদী ল্েয এবং এভাবে বিপ্লবী কমিউনিস্টদের মধ্যে আরো বিভ্রান্তি, ছিন্নভিন্নতা ও অমতা বাড়িয়ে তুলে।

কিন্তু পুরোনো ও নয়া সংশোধনবাদীদের এবং সেই সাথে মধ্যপন্থী আপোষকারীদের সমন্বয়বাদের  এই অবিশ্বাস ও হতাশার বিপরীতে সাম্রাজ্যবাদের দ্বন্দ্বসমূহ তার নিপীড়ণের তীব্রতা দ্বারা সাম্রাজ্যবাদী পরজীবিতার বিরুদ্ধে বিশ্ব শক্তির কর্মযজ্ঞের স্ফুরন ঘটিয়েছে সর্বহারা শ্রেণীর আন্তর্জাতিক ঐক্যের জরুরী আহ্বান জানিয়ে।

সেই ঐক্য যাতে সর্বহারা বিপ্লবীরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ভূয়া সংশোধনবাদী তত্ত্বমালা ও মধ্যপন্থীদের সমন্বয়বাদী অবস্থানসমূহের ধ্বংসে। সেই ঐক্য যাকে অতি অবশ্যই  নিজেকে বাস্তবায়ন করতে হবে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাধারণ লাইনের জন্য এক প্রস্তাবে, যা মার্কসবাদ ও সুবিধাবাদের মধ্যে গভীর পার্থক্যরেখা অঙ্কন করে, এবং যা হচ্ছে নতুন আন্তর্জাতিক গড়ে তোলার  জন্য ঐক্যের এক দৃঢ় ভিত্তি যা সাম্রাজ্যবাদ ও তার সকল দালালদের বিরুদ্ধে বিশ্ব সর্বহারা বিপ্লবের মহাযুদ্ধে চালিত করবে ।

সাম্রাজ্যবাদ-মুমূর্ষু পুঁজিবাদের ফল হিসেবে আবির্ভূত শক্তিশালি বিপ্লবী শক্তিসমূহ সর্বহারা শ্রেণী ও কমিউনিস্টদের দিক নিদের্শনা দাবী করে। তাই, এই মে দিবসে, মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদীরা সব দেশের সর্বহারা শ্রেণীকে আহ্বান জানায় বিশ্ব সর্বহারা বিপ্লবের বিজয়ের জন্য লড়াই করার, সর্বহারা আন্তর্জাতিকতাবাদের ব্যানারে এগিয়ে চলার এবং তাদের রণহুঙ্কারসমূহ আর সমাজতন্ত্র ও কমিউনিজমের রাজনৈতিক সংগ্রামকে একতাবদ্ধ করার।

 

সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ও আধিপত্য নিপাত যাক!

বিশ্ব সর্বহারা বিপ্লব জিন্দাবাদ!

ভারত, পেরু, তুরস্ক ও ফিলিপাইনের গণযুদ্ধ জিন্দাবাদ!

সংশোধনবাদ ও মধ্যপন্থার বিরুদ্ধে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদ জিন্দাবাদ!

মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদের ভিত্তিতে একটি নতুন কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের জন্য আসুন এগিয়ে চলি!

মে দিবস, ২০১২

মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী কেন্দ্র বেলজিয়াম

কমিউনিস্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী) কলম্বিয়া

শ্রেনী ঘৃণা কালেক্টিভ স্পেন

পুনর্গঠন গ্রপ পেরু সিআরপিএম স্পেন

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বাংলাদেশ

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী ফ্রান্স

কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) পানামা