সিপিএমএলএম বাংলাদেশ–এর দলিল
রোকেয়ার স্বপ্ন বনাম শফির ইসলামবাদ
ঊনিশ শতকের নারী জাগরেণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া স্বপ্ন দেখেছিলেন পুরুষতান্ত্রিক নিপীড়ণ থেকে বাঙালী মুসলিম নারীর মুক্তির। তিনি নারীর ওপর ইসলামবাদী অবরোধের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। কিন্তু আজকে ২১ শতকে বাঙালী মুসলমান নারীকে এক ইসলামবাদীর মুখোমুখি হতে হয়েছে যে কিনা বয়ান দিয়েছে যে নারীদের ঘরে থাকতে হবে, পঞ্চম শ্রেণীর ঊর্ধ্বে লেখা পড়া করা যাবেনা, পুরুষদের সেবা করে পুরুষ সন্তান উৎপাদন করতে হবে, গার্মেন্টসে কাজ করা মানে জেনা করা। নারীদের দেখে বৃদ্ধও যদি লালায়িত না হয় সে পুরুষই নয়। নারীরা হচ্ছে তেঁতুল ইত্যাদি।
নারী পুরুষ বিভিন্ন স্তরের জনগণ, মধ্যবিত্ত, এমনকি বুর্জোয়ারাও উত্তেজিত ক্ষুব্ধ হয়েছে শফিব বক্তব্যে। অনেকের কাছেই মনে হয়েছে এটা স্থূল। সরকারী বেসরকারী কালকে যারা শফির পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে নির্বাচনী আশির্বাদ নিয়েছে, ঢাকা শহরে ডেকে এনেছে, হেলিকপ্টারে করে ঘুরিয়েছে আজকে তারাই তার ওপর অসন্তুষ্ট।
কিন্তু আসলেই কি তা প্রলাপ?
এটাই কি রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে আরোপিত ইসলামবাদের প্রকৃত চেহারা নয় যা লজ্জায় ফেলে দিয়েছে ধনিক শ্রেণীর ভদ্রবেশীদেরও।
কিন্তু কারা শিক্ষা দিয়েছে? কারা ডেকে এনেছে? কারা লালন পালন করছে?
কারা ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে? কারা মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রেখেছে? কারা ইসলামী ব্যাংকের মতো বৃহৎ পুঁজি দেশে চলতে দিচ্ছে? শফিকেই বা কারা কওমী মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান বানিয়েছে?
শফি এই শিক্ষা কোথায় পেয়েছে?
শফির বক্তব্যের মূল পয়েন্ট হচ্ছেঃ
নারীরা হচ্ছে মাল। ভোগ্যবস্তু। পুরুষের যৌন দাসী ও সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র।
আর যুগ যুগ ধরে জনগণের ওপর শাসকশ্রেণী যে ইসলামবাদ আরোপ করেছে তার মূল বক্তব্য এটাই। আর এটা শাসক শ্রেণীর ভাবধারা। তাদের অন্যায় শাসন ও শোষণ বজায় রাখতে তারা একটা ন্যায্যকরণ চায়। সেটা তারা এক ‘ঐশ্বরিক নির্দেশ’ হিসেবে দেখাতে চায়।
জনগণের যুক্তি হচ্ছে এর বিপরীত। তারা সকল প্রকার শোষণ ও নিপীড়ণের থেকে মুক্তি চান। তারা এমন ইসলামবাদের সত্যিই বিরোধী!
২০ জুলাই ২০১৩
কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী