দেশে জ্বালানী তেলের দামের অতি বৃদ্ধিঃ সরকারী লুটেরা তেল ব্যবসা, জনগণের জীবনযাত্রার মানের চরম অবনতি ঘটার শংকা

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আওয়ামী লীগ সরকার গত ৪ নভেম্বর জ্বালানী তেলের দাম  শতকরা ২৩ ভাগ বৃদ্ধি করেছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় আর ভারতে তেল পাচার বন্ধের জন্য এই দাম বাড়ানো হয়েছে বলে সরকার দাবি করেছে। উল্লেখ্য রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা ছাড়া ভারতে তেল পাচার করা কঠিন। আর বিশ্ববাজারের সাথে সমন্বয়? গত দুই বছর সরকার ২০ টাকা লিটার অপরিশোধিত তেল কিনে বহু হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে, সেই মুনাফা তারা জনগণকে দেয়নি, দ্রব্যমূল্য ও পরিবহন ব্যয় কমায়নি। এখন বিশ্ববাজারে দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এই অজুহাতে বাজারে তেলের দাম বাড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে, পরিবহন মালিকরা বাসভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট করেছে, শ্রমিকদের ও জনগণের দাবি ছিল তেলের দাম না বাড়ানো আর বাস বা পরিবহন ভাড়া না বাড়ানো। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন গত সাত বছরে ৪৭ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে বিদেশ থেকে পরিশোধিত ও অপরিশধিত জ্বালানী তেল কিনে এনে। করোনার দুই বছরে তারা সর্বনিম্ন দামে তেল কিনেছে। তখন তাদের লাভ সর্বোচ্চ হয়েছে। মহামারীর সময় সর্বোচ্চ লাভ করা কোন দৃষ্টিভঙ্গী? আর জনগণকে লভ্যাংশ না দিয়ে বরং তারা অপেক্ষায় ছিল, কখন কোভিড কমে আসবে, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়বে আর দেশে তেলের দাম বাড়িয়ে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করা যাবে। তেলে বর্ধিত লাভ অব্যাহত রাখতে জনগণের উপর বর্ধিত দাম চাপিয়ে দিয়ে এক ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে সরকার যেখানে জনগণের জীবন যাত্রার মানের চরম অবনতি ঘটবে। অতিমারীতে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত জনগণের জীবনযাত্রার মানের চরম অবনতি ঘটবে এখন। চাল ডাল তেল সবজি আটা ফলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উতপাদন ব্যয় বাড়বে কারণ কৃষিতে অগভীর নলকূপ ও পাওয়ার টিলার ডিজেলে চলে,পরিবহন ব্যয় ইতিমধ্যে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে পঞ্চাশ শতাংস পর্যন্ত। কৃষকরা উতপাদন করে অনেক কম লাভ পাবেন আর জনগণকে বেশি দামে খাদ্য কিনতে হবে। বাস মালিকদের সাথে ষড়যন্ত্র করে ভাড়া আরো বেশি হারে বাড়ানো হয়েছে। যতটা তেলের দাম বেড়েছে তাতে তাদের দশ শতাংশের বেশি ভাড়া বাড়াতে হয়না কারণ তেলের খরচ তাদের সব খরচের ৪০ শতাংশের বেশি নয়। শিল্প কারখানায় তেলের ব্যবহারের কারণে সেখানে উতপাদন ব্যয় বাড়বে, ফলে জনগণকে বেশি দামে কাপড় কিনতে হবে। সেই সাথে বিদ্যুৎ উতপাদনে তেলের ব্যবহারের কারণে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। পরিবহন ব্যয় অনেক বেশি হওয়ায় মানুষ এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় স্থানান্তর অনেক বেশি ব্যয়বহুল হয়ে গেল।

সরকারী কোম্পানী বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানী। এই লাভ তারা জনগণের কাছে তেল বিক্রি করে করছে। বাংলাদেশ সরকার হচ্ছে শোষণমূলক প্রতিক্রিয়াশীল আমলাতান্ত্রিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরিচালনাকারী। তারা আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদ, সামন্তবাদ ও বিদেশী বড় পুঁজির সেবায় নিয়োযিত। সুতরাং জনগণকে তারা তেলের লভ্যাংশ দেয়নি বরং ভয়ংকর জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।।

এ সংক্রান্ত পূর্ববর্তী লেখাঃ Sarbaharapath | সরকারি লুটেরা তেল ব্যবসা, ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম পুনবৃদ্ধির পাঁয়তারা, ব্যাংকের টাকা চুরি আর আঙুলের ছাপ রেজিস্ট্রেশন