বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ও শোষকদের দৃষ্টিভংগী

চীনে ডিসেম্বর ২০১৯-এ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। চীনের উহান শহর এক সমাজতান্ত্রিক শহর ছিলঃ যেখানে মানবে-মানবে শুধু নয় মানবে-প্রকৃতিতে সাম্যবস্থা বজায় ছিল। জনসংখ্যা ছিল কয়েক মিলিয়ন। পুঁজিবাদের পুনরুত্থান ঘটিয়ে এই সাম্যাবস্থাকে ভেংগে দিল বুর্জোয়ারা। কয়েক কোটি জনসংখ্য়র শহর বানালো টাকা, লোভের ঝলমলে, বিরাট আকারে গ্রামগুলোকে ধ্বংস করে। বন্যপ্রাণীদের খাওয়ার জন্য

শ্রমিকদের প্রতি সরকারের মনোভাব পরিষ্কারঃ পায়ে হেঁটে, ট্রাকে, ফেরীতে গাদাগাদী করে আসো, গার্মেন্টসে গাদাগাদী করে কাজ কর, বুরশোয়াদের জন্য চাই মুনাফা! আর দিনমজুরগণ, তোমরা ঘরে বসে থাক, এক কেজি চালের রিলিফের গাড়ী রাস্তায় এলে ক্ষুধার্ত কাকের মত ঝাঁপিয়ে পড়! করোনা নিয়ে আমরা ফতোয়া তো দিচ্ছিই!

শ্রমিকদের প্রতি সরকারের মনোভাব পরিষ্কারঃ পায়ে হেঁটে, ট্রাকে, ফেরীতে গাদাগাদী করে আসো, গার্মেন্টসে গাদাগাদী করে কাজ কর, বুরশোয়াদের জন্য চাই মুনাফা! আর দিনমজুরগণ, তোমরা ঘরে বসে থাক, এক কেজি চালের রিলিফের গাড়ী রাস্তায় এলে ক্ষুধার্ত কাকের মত ঝাঁপিয়ে পড়! করোনা নিয়ে আমরা ফতোয়া তো দিচ্ছিই!

বানিজ্যিক খামারে আটকাল, ব্যাপক বনধ্বংস করল আর প্রাণী ও উদ্ভিদের জীনের বিকৃতি ঘটাল। চীনসমেত ইউরোপ আমেরিকা রাশিয়া কানাডা অস্ট্রেলিয়া মেট্রোপলগুলোতো একই ঘটনা। লোভে ভরা কৃত্রিম জীবন প্রকৃতিকে করেছে মূল্যহীন। কিন্তু প্রকৃতির পাল্টা আঘাত হানার ক্ষমতা অনেক বেশী। চীনা সাম্রাজ্যবাদ কঠোর লক ডাউনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনে। ৩ হাজারের কিছু বেশী লোক মারা যায় সরকারী হিসেবে। বাস্তবে সংখ্যটা দ্বিগুনও হতে পারে। চীনে শেষ হয়ে ভাইরাসটি ইউরোপের ইতালীতে তারপর স্পেন, বৃটেন, ফ্রান্স, আমেরিকায় প্রবেশ করে মার্চ ২০২০তেই বৈশ্বিক মহামারীতে পরিনত হয়। এতে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে আর লোক মারা গেছে প্রায় ১৩৭০০০। চীনে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটানোর পর বাংলাদেশে প্রায় ৯ লক্ষ লোক বিমান দিযে ঢুকেছে মার্চের শেষ পর্যন্ত। তারপর দেশের পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে গেলে বিমান চলাচল বন্ধ করা হয়। ইতিমধ্যে ভাইরাসটি বাংলাদেশে স্থান করে নিয়েছে। সরকার টাকা ও ব্যবসার লোভে সময়মত বিমান চলাচল সরকার বন্ধ করেনি। মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য স্কুল কলেজ বন্ধ করতে দেরী করে। সরকারী বেসরকারী দপ্তর চালু রাখে। তারপর করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু উন্মোচিত হতে থাকলে সরকার দুএকটি স্থান অঘোষিত লকডাউন ও সরকারী বেসরকারী দপ্তর ১ সপ্তাহের জন্য বন্ধ গোষণা করা হয়। করোনা মহামারীতে পরিণত হয় মার্চের মাঝামাঝিতেই। কিন্তু প্রতিদিন অনেক মৃত্যুর খবর আসে শ্বাসকষ্ট-জ্বরের, তা করোনা বলে স্বীকার করেনা সরকার। এদিকে সরকারি -বেসরকারী ধর্মবাদীরা ঘোষণা করে যে ইসলামে করোনা বা ছোঁয়াচে বলে কোন রোগ নেই, তাবলিক জামাতের মাধ্যমে, মসজিদে জামাাতে নামাজে বিশেষত জুমার নামাজের মাধ্যমে ও বিভিন্ন দোয়া-মাহফলের মাধ্যমেও করোনা ছড়ানো হয়। সম্প্রতি বেগতিক দেখে এগুলো সরকার বন্ধ করে। এপ্রিলে্র শুরু থেকেই সারাদেশে অঘোষিত লকডাউন করা হয়। কিন্তু পোশাক কারখানা ৫ তারিখে খোলার কথা বলে শোষক মালিকরা আবার বন্ধ করে দেয় বেতন না দিয়ে, শ্রমিকরা চাকরী রক্ষা্র তাগিদে শত কিলোমিটার হেঁটে ও বিভিন্ন যানবাহনে করে বহু টাকা খরচ করে আবার ফেরত যায়। এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে শ্রমিকরা

পোশাক শ্রমিকদের বেতনের দাবীতে বিক্ষোভ ১২ ০৪ ২০২০ পোশাক শ্রমিকরা বেতনের দাবীতে বিক্ষোভ করছেন বেশ কিছুদিন যাবত। শোষকরা বেতন দিতে বরাবরের মতই টালবাহানা করছে। প্রতিক্রিয়াশীল সরকার এই শোষকদেরই ভর্তুকি দিয়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছে!

পোশাক শ্রমিকদের বেতনের দাবীতে বিক্ষোভ ১২ ০৪ ২০২০। পোশাক শ্রমিকরা বেতনের দাবীতে বিক্ষোভ করছেন বেশ কিছুদিন যাবত। শোষকরা বেতন দিতে বরাবরের মতই টালবাহানা করছে। প্রতিক্রিয়াশীল সরকার এই শোষকদেরই ভর্তুকি দিয়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছে!

বিক্ষোভ করছেন বেতনে্র দাবীতে, মালিকরা বেতন দেয়নি। সরকার মালিকদের টাকা দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে, শ্রমিকদের নয়। দেশে প্রাতিষ্ঠানিক বেতনভোগী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি আর দিন আনে দিন খায় এমন শ্রমিকের সংখ্যা প্র্রায় ৫ কোটি যারা পরিবার নিয়ে ১ মাস যাবত না খেয়ে অথবা কোনরকম জীবিত আছেন। শোষকদের সরকার তাদের একমাস চলার টাকা দিয়ে লকডাউন করেনি। বরং সামান্য ১/২ কেজি চাল ডাল তেল কিছু লোককে দিয়েছে, বাকী চাল আলীগে্র লোকেরা-ইউপি চেয়ারম্যানরা আত্মসাত করে। এই চোরদের অনেকেই ধরাও পড়েছে। জামালপুরে কিছু অভুক্ত মানুষ চাউলের একটি ট্রাক দখল করে নিজেদের মধ্যে চাল বন্টন করে নিয়েছে। এদিকে করনার ভয়ে সব হাসপাতালের চিকিতসক ও নার্সরা পালিয়েছে সরকার ব্যক্তিগত সুরক্ষার পোশাক তাদের দেয়নি বলে। ফলে সাধারণ রোগীরা বিনা চিকিতসায় মারা যাচ্ছে অসংখ্য। আর যে গুটি কয়েক নিষ্ঠাবান চিকিতসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের অনেককে প্রতিক্রিয়াশীল সরকার করোনা আক্রান্ত হলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বঞ্চনার মাধ্যমে, যেমন ডাক্তার মইন ১৫ এপ্রিল ২০২০ মারা গেলেন। ক্ষুধার্ত মানুষ লক ডাউন মানবেনা এটাই স্বাভাবিক। সরকার তাদের খাদ্য দিচ্ছেনা, বুরশোয়াদের জন্য প্রনোদনা দিচ্ছে। পোশাক শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করে আর বেতন না দিয়ে বিক্ষোভ করতে বাধ্য করে

শোষিত মানুষ শোষকদের কাছ থেকে বলপ্রয়োগে প্রাপ্য দখল করবে এটাই স্বাভাবিক

শোষিত মানুষ শোষকদের কাছ থেকে বলপ্রয়োগে প্রাপ্য দখল করবে এটাই স্বাভাবিক

তাদের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে দিয়েছে। সরকার টেস্ট করছে অল্প। রোগী দেখাচ্ছে ১৫শর মত, আর মৃত্যু ৬০ আজ পর্যন্ত। কিন্তু বাস্তব সংখ্যা অনেক বেশী সকলেই জানে। বাংলাদেশে চিকিৎসা হচ্ছে ব্যবসা। এখানে স্বাস্থ্যসেবা বলে কিছু নেই। এখানে গরমের কারণে করোনা এমনিতেই মিলিয়ে গেলে তো মানুষ বেঁচে যাবে, না হলে ব্যাপক ক্ষযক্ষতি হবে। শোষণের পুঁজিবাদী সমাজ মানুষকে শোষণের পাশাপাশি নগরায়নের মাধ্যমে পরিবেশ-জীব ধ্বংস করছে; প্রকৃতিও প্রতিশোধ নেবে, তাই সত্বর শোষণের সমাজ ধ্বংস করে সাম্যবাদী সমাজ কায়েম করতে হবে যেখানে মানুষে-মানুষে এবং মানুষে-প্রকৃতিতে সাম্য অর্জিত হবে।।