কেন্দ্রীয় অধ্যয়ন ক্লাশে রিপোর্ট –ওয়াঙ হুঙ-ওয়েন (১৪ জানুয়ারি ১৯৭৪) [বাংলা রূপান্তর ৩য় (শেষ) পর্ব]

কেন্দ্রীয় অধ্যয়ন ক্লাশে রিপোর্ট

–ওয়াঙ হুঙ-ওয়েন

(১৪ জানুয়ারি ১৯৭৪)

 

ওয়াঙ হুঙ-ওয়েন

ওয়াঙ হুঙ-ওয়েন

বাংলা রূপান্তর ৩য় (শেষ) পর্ব

 

 revolutionarycommittee

আরেকটি দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে যা লিন পিয়াওয়ের সংশোধনবাদী লাইনকে সারবস্তুতে “অতিবাম” মনে করে। বস্তুত তার লাইন “অতিবাম” নয় বরং “অতি ডান”, আর যত ডান হওয়া যায়। কোন এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ একজন অতি সম্প্রতি বলল যে, “অতিবামকে যখন সমালোচনা করা হয়না, ডান ও ভুল গুলিয়ে যায়।” এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হিসেবে সে নিবেদেন করে যে সতের বছরের [সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আগের] দোষগুণ কেউই কখনো মূল্যায়ন করেনি।

তা মূল্যায়ন করা হয়েছে। মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবে বহু বৃহদাকার পোস্টার আর কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকা কর্মে প্রেরিত যুবদের শিক্ষা সম্মেলনের সারাংশে এই মূল্যায়ন করা হয়েছে। উপসংহার বলে যে সতের বছর যাবত শিক্ষা ফ্রন্ট মূলত সভাপতি মাওয়ের লাইন বাস্তবায়ন করেনি বরং সংশোধনবাদীদের একনায়কত্ব দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। চিয়াঙ চিঙের প্রতি পত্রে সভাপতি মাও বলেন, “পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় আর সিঙ হুয়া বিশ্ববিদ্যালন গভীর শিকরযুক্ত ভ্রান্ত ঘোঁট।“ এখন কেউ একজন বলল যে “সারাংশ” আর সঠিক নয় অথবা তা অতিবামের ফসল। আর এই মন্তব্য সর্বত্র ছড়ানো হয়েছে। কিছু লোকের কাছে অতিবাম ও লিন পিয়াওয়ের সমালোচনা হচ্ছে অবাস্তব আর তাদের সত্যিকার নিশানা হল মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব।

আমাদের উপসংহার হচ্ছে, “যখন অতিডানকে সমালোচনা করা হয়না, ডান ও ভুল গুলিয়ে যায়।” বর্তমান স্তরে, মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ফলগুলিকে সংহত করতে লিন পিয়াওয়ের সংশোধনবাদী লাইনের অতি ডান সারকে সমালোচনা করা প্রয়োজন। এটা করা ছাড়া মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের বিরাট ফল সংহত ও বিকশিত করা সম্ভব নয়। গত বছর একটা ইউনিট একটা নিবন্ধ লেখে, বলে যে ঐ ইউনিটের সবাই অতি ডান ছিল, আর তাদের সকলকে খারাপ বর্ণনা করে ইত্যাদি ইত্যাদি। যদি এটাই হয় ঘটনা, চীন বিপ্লবের আশা কোথায়? আমাদের সফল করতে আমরা কাদের উপর নির্ভর করতে পারি? প্রাদেশিক যুবলীগ কংগ্রেসের আহবানের অনুরোধ সংক্রান্ত প্রশ্নে কেন্দ্রীয় কমিটি নির্দেশনা দেয়ঃ অধিকাংশ তরুণই ভাল, অন্যথায় আমাদের বিপ্লবের কোন ভবিষ্যতই থাকবেনা অথবা তা হবে অন্ধকার। গুরুত্বের সাথে লক্ষনীয় যে কিছু এলাকায় প্রতিবিপ্লবী গুজব ছড়ানো হয়েছে যেমন “মন্দির পরিষ্কার কর, প্রকৃত ঈশ্বরকে আমন্ত্রণ জানাও, পুরোনো সেনাধ্যক্ষদের তাদের পদে ফেরত যেত হবে; ক্ষুদে সৈন্যদের তাদের ব্যারাকে ফিরে যেতে হবে।” সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে শেষের দুই লাইন “পুরোনো সেনাধ্যক্ষদের তাদের পদে ফিরে যেতে; ক্ষুদে সৈনিকদের ব্যারাকে ফিরে যেতে হবে।” তারা অর্থ করে যে লিউ শাউচিসহ সকল বেঈমান, শত্রু এজেন্ট ও পুঁজিবাদী পথিকরা তাদের পদে ফেরত যাবে আর মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের নবজাত জিনিসগুলি বিলুপ্ত হবে। এটা হচ্ছে পুরাতনের টিপিক্যাল পুনপ্রতিষ্ঠা, একটা পাল্টা আক্রমণ অথবা বিলোপ। এই গুজব সামরিক ইউনিটের দুই উচ্চ পদস্থ ক্যাডার প্রথম ছড়ায়। এই ধরণের জিনিস ছড়ানো খুবই ক্ষতিকর। আরেকটি উদাহারণ হচ্ছে কিয়াংসী প্রদেশের [কেডাররা] সভাপতি মাওয়ের নির্দেশনা প্রশ্নে লিউ শাউচির প্রতিবিপ্লবী গুজব গ্রহণ করে আর ক্যাডার সম্মেলনে কোটি কোটি মানুষের মধ্যে প্রচার করে। যাহোক, এটা আশ্চর্য নয়। আমাদের কোন কোন কেডারের মস্তিষ্ক হচ্ছে গুজবের বাজার। দ্রব্য পাওয়া মাত্রই তারা গুজব বিক্রী করে বাজারে। শ্রেণী দৃষ্টিকোণ থেকে এটা আশ্চর্য নয়।

কিছু লোক আছে যারা খারাপ নয়, কিন্তু ইতিমধ্যে মতাদর্শিকভাবে নিরস্ত্র হয়েছে আর বিষাক্ত আগাছা থেকে সুগন্ধী ফুল আলাদা করার ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করেছে নিজেকে। সভাপতি মাও এই প্রতিবিপ্লবী গুজবকে মারাত্মকভাবে সমালোচনা করেছেন, আর একে পরিবর্তন করে এভাবে পড়তে বলেছেনঃ “মন্দিরকে পরিষ্কার কর, প্রকৃত দেবতাকে আমন্ত্রণ কর; পুরোনো সেনাধ্যক্ষ্যরা লাইনে ফিরে এসো; ক্ষুদে সৈনিকেরা এগিয়ে যাও।” সভাপতি মাওয়ের নির্দশনাসমূহ ক্যাডার প্রশ্নে পর্যাপ্তভাবে বিপ্লবী লাইনকে প্রতিফলিত করে। পুরোনো প্রজন্মের সর্বহারা বিপ্লবীদের দক্ষতাকে ব্যবহার করা গুরুত্বপুর্ণ, আর একইসাথে এক দুই জন নয়, হাজার হাজার সর্বহারা উদ্যোগের উত্তরাধিকার প্রশিক্ষিত করে তোলার বিরাট প্রচেষ্টা দরকার। ভেটারান কেডারদের প্রতিভাকে কাজে না লাগানো ভুল হবে, আর এটাও ভুল হবে বাস্তব শ্রেণীসংগ্রামে কর্মতৎপরতা নির্বিশেষে অভিজ্ঞতা ও বয়সের ভিত্তিতে তাদের পদ নির্ধারণ করা। অতীতে উত্তর ও দক্ষিণে তাদের যুদ্ধ ক্ষমতা গুরুত্বপুর্ণ, কিন্তু তাদের সচেতনতা ও বাস্তব শেণীসংগ্রামে তাদের কর্মতৎপরতাও আমাদের দেখা উচিত। তাদের চিন্তা যদি সংশোধনবাদী হয়, তারা কি সর্বহারা শ্রেণীর জন্য লড়তে পারেন? আমরা বিশ্বাস করি, বিশেষত বর্তমান বিরাট মোড় ফেরায়, কেডারদের মূল্যায়ন কেবল ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে ও বর্তমান ঘটনা ব্যতীত করা উচিৎ নয়, বরং প্রাথমিক গুরুত্ব দিতে হবে লাইন সংগ্রামে তাদের সচেতনতার উপর। এটা স্থানীয়, সামরিক, পুরোনো অথবা নতুন নির্বিশেষে সকল কেডারদের প্রতি প্রযোজ্য হবে।

পুরোনো প্রবীণ (ভেটারান) আর তরুণ কেডারদের কৃত ভুল প্রশ্নে, “দেখা ও সাহায্য করা” গ্রহন করতে হবে আর কেডারদের তাদের ভুল সংশোধনে অনুমোদন দিতে হবে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে, পুরোনো প্রবীণ (ভেটারান) কেডারদের তাদের কৃত ভুল সংশোধনে সুযোগ দেয়া হয়েছে “লক্ষ্য রাখা ও সাহায্য করা”র মাধ্যমে, যেখানে তরুণ কেডাররা একবার ভুল করলেই শোচনীয় নিন্দা জানানো হচ্ছে। কেন ভুল করছে যে ভেটারান কেডাররা তারা শিক্ষিত হতে পারবে আর তরুণ কেডাররা পারবেনা? এটা ভাল নয়। এটা পার্টি ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর। সভাপতি মাও অনেক লোককে সমালোচনা করেছেন শিশুদের বাহিনীতে খাটো করে দেখানোর কারণে আর এই মন্তব্য করার কারণে যে “কীভাবে তোমরা কিশোর কিশোরীরা আর কুড়ি বছর বয়সীরা এত স্মার্ট হতে পারবে?” তরুন কেডারদের অবশ্যই বিনয়ী ও বিচক্ষণ হতে হবে, আত্ম অহংকার ও উদ্ধত স্বভাবের বিরুদ্ধে পাহাড়া দিতে হবে, ভেটারান কেডারদেরকে সম্মান করতে হবে ও তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। অপরদিকে ভেটারান কেডারদেরকে তরুন কেডারদের শিক্ষা, সাহায্য ও নেতৃত্ব দিতে হবে। তাদেরকে শিক্ষাদান, সাহায্য করা আর নেতৃত্বও প্রদান করার কথা মনে রাখতে হবে তরুন কেডারদের বোঝাপড়া করার সময়।

সর্বহারা বিপ্লবের উদ্যোগের কোটি কোটি উত্তরাধিকার জন্ম দেয়া হচ্ছে এক মহান রণনৈতিক মানদন্ড আর এক শতকের দীর্ঘ সময়সীমার পরিকল্পনা। আমাদেরকে এই মহান কাজকে আঁকড়ে ধরতে হবে আর বিবিধ স্তরে উত্তরাধিকার প্রশিক্ষিত করতে হবে। উত্তরাধিকার প্রশিক্ষণ স্থানীয় এলাকাসমূহে কিছু বাঁধাবিপত্তি মোকাবেলা করেছে কিন্তু সামরিক ক্ষেত্রে বেশি। আমি সবসময় এই পরামর্শ দেই যে বৃহৎ সামরিক এলাকাসমূহের জন্য ত্রিশের কোঠার বয়সী কিছু লোককে কমান্ডার বানানোর জন্য খুঁজে বের করা দরকার।

মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব—এটা কি ভাল না মন্দ? বিপ্লবের সমগ্র প্রক্রিয়া জুড়ে প্রশ্নটি বিতর্কিত হয়ে আসছে। পেঙ চেঙের ফেব্রুয়ারি রূপরেখা আর লিউ শাউচির বুর্জোয়া প্রতিক্রিয়াশীল লাইন সবই মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ধ্বংসের নকশা। সারবস্তুতে লিন পিয়াও লিউ শাউচির মত একই রকমের এক ঝাঁক সংশোধনবাদী লাইন তুলে ধরে। একটা বৈধ দৃষ্টিকোণের দ্বারা মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ওপর পালটা আক্রমণ ও তাকে বিলোপ করার এক প্রচেষ্টায় নবম কংগ্রেসের পূর্বে চেন পোতার সাথে মিলে এক রাজনৈতিক রিপোর্ট তৈরি করে, উৎপাদন প্রথম একথা তুলে ধরে লিন পিয়াও একথা বলে যে নবম কংগ্রেসের পর প্রথম কাজ হবে উৎপাদন বাড়ানো। সভাপতি মাও এই রাজনৈতিক রিপোর্টকে নেতিকরণ করেন আর ব্যক্তিগতভাবে সূত্রায়িত করেন নবম কংগ্রেসের লাইন যা সর্বহারা একনায়কত্বধীনে অব্যাহত বিপ্লবের আকারে টিকে থাকে। নবম কংগ্রেসের পর সভপতি মাওয়ের বিপ্লবী লাইনের পরিচালনাধীনে লিন পিয়াও পার্টিবিরোধী চক্রকে ধ্বংসের এক বিরাট বিজয় অর্জিত হয় আর সংগ্রাম-সমালোচনা-রূপান্তর অভিযানকে ক্রমান্বয়ে অধিকতর গভীরভাবে বিকশিত করা হয়। যাহোক, মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব খুব ভাল না মন্দ তা এখনো বিতর্কিত। কেন্দ্রীয় দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের পর এখানে সেখানে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে উদ্ভুত হয় এক ডানপন্থী জোয়ার। এই জোয়ারের সাথে জড়িত ছিল উদাহারণস্বরূপ সিং কিয়াঙের লুঙ শুন-চিন, সেচুয়ানের লিয়াঙ [লিয়াঙ সিংচু] ও চেন [চেন জেন-চি] আর হুনানের কেডাররা। মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের উপর পাল্টা আক্রমণ ও একে বিলোপের জন্য তারা লিন পিয়াওকে সমালোচনার সংগ্রামের সাধারণ ধারাকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা যা করছিল তা হচ্ছে দুই শ্রেণীর মধ্যে ও দুই লাইনের মধ্যে সংগ্রাম, সংগ্রামের এক ধারাবাহিকতা। ভবিষ্যতে এই সংগ্রাম পুনরায় আবির্ভূত হবে। সভাপতি মাও সম্প্রতি বলেন, “মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রশ্নে, আমাদের আরেক দশ বছরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ও দেখতে হবে।” এটা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমাদেরকে দীর্ঘ মেয়াদী সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কমরেডগণ, আপনারা নিশ্চয় লিন পিয়াও ও কনফুসিয়াসের ওপর সাম্প্রতিক সমালোচনামূলক প্রবন্ধসমূহ পড়েছেন। আর অবশ্যই জেনেছেন যে চিন শিহ উয়াঙ ২০০০ বছরের জন্য অভিশাপপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এক শোষণমূলক ব্যবস্থাকে আরেক শোষণমূলক ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিস্থাপন করার কারণে। আমাদের মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব কি অভিশাপ প্রাপ্ত হবে? নিশ্চিতভাবে কিছু লোক একে শাপ দেবে। আর এমনকি দশ বছর অথবা কয়েক দশক পরেও, কিছু লোক থাকবে যারা একে অভিশাপ দেবে আর লিউ শাউচি ও লিন পিয়াওয়ের ওপর সঠিক রায়কে উল্টিয়ে দিতে চেষ্টা করবে। কনফুসিয়াস মারা গেছে কয়েক হাজার বছর আগে, তথাপি কিছু লোক এখনো তাকে পুঁজা করে। কিন্তু চিন শিহ হুয়াঙ, যিনি একজন বিপ্লবী ছিলেন সেসময়, তিনি ২০০০ বছরের শাপ পেয়েছিলেন।

মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবকে বিরোধিতা করা মানে নবম ও দশম কংগ্রেসকে বিরোধিতা করা, কিন্তু এটা কোন সহজ সরল প্রশ্ন নয়। তা হচ্ছে পুঁজিবাদ পুনপ্রতিষ্ঠা করা ও সংশোধনবাদ অনুশীলন। আমার উপলব্ধি হচ্ছেঃ যারা মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব বিরোধিতা করে তাদেরকে অবশ্যই একটা পুঁজিবাদী একনায়কত্বের কথা বলতে হবে। কমরেডগণ, আমাদের মনে করা উচিত নয় যে, পুঁজিবাদের পথিক আর নেই, অথবা এমনকি পুঁজিবাদের পথিকদের ব্যাপারটা উল্লেখের প্রয়োজন নেই। কিছু এলাকা রাষ্ট্র ও পার্টির সংবিধান সংশোধন আলোচনায় “পুঁজিবাদের পথিক” শব্দ অন্তর্ভুক্ত করতে চায়নি। কী অদ্ভূত কথা! যতদিন শ্রেণীসংগ্রাম থাকবে বুর্জোয়ারা আমাদের পার্টিতে ছায়া বপন করবে আর পুঁজিবাদের পথিক আবির্ভূত হবে। যদি কোন পুঁজিবাদের পথিক না থাকতো অতীতের সকল অভিযানকেই নেতিকরণ করতে হতো। তিন বিরোধী ও পাঁচ বিরোধী অভিযান, ১৯৫৭র ডান বিরোধী অভিযান আর চার পরিষ্কারকরণ অভিযান সকলই নেতিকরণ করতে হতো। পার্টি সংবিধানে তাদের নিয়ে লেখার এটাই কারণ। এগুলো ছিল বিরাট ঘটনা, ছোট নয়। কিছু ব্যক্তি পুঁজিবাদের পথ গ্রহণ করার ভুল করেন, কিন্তু তাদেরকে আমাদের সহায়তা দ্বারা সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধন ভাল। যাহোক, আমরা বলতে পারিনা যে সংশোধনের পর পুঁজিবাদের পথিকরা আর অস্তিত্বশীল নয়। পুঁজিবাদের পথিকরা শুধু যে অতীতে অস্তিত্বশীল ছিল তাই নয়, ভবিষ্যতেও থাকবে। অল্প কিছু লোক এখনো জনগণের উপর বুর্জোয়া একনায়কত্ব অনুশীলন করছে অথবা এমনকি বলছে যে বিদ্রোহীদের মধ্যে কোন ভাল মানুষ নেই। তাদের মন্তব্য কোন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যের পরিচায়ক নয়। “মার্কসবাদে হাজারো সত্য রয়েছে, সেগুলোকে একটি বাক্যে সংক্ষেপিত করা যায়ঃ বিদ্রোহ করা ন্যায়সঙ্গত।” আমাদের পুরোনো পিতা মার্কস আমাদের বিদ্রোহে চালিত করেছেন। বিদ্রোহে জেগে ওঠার কারণে কিছু লোক আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত। বিদ্রোহ খারাপ কী? সভাপতি মাওয়ের নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মাধ্যমেই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যগণ বিপ্লবে বিজয় অর্জন করেন আর রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলে সফল হন। মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবে আমরা বুর্জোয়া ও সকল শোষক শ্রেণীসমূহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি আর সর্বহারা একনায়কত্বকে সংহত করি। এতে ভুল কোথায়? কিছু লোক অতীতে বিদ্রোহী ছিল, কিন্তু এখন বিদ্রোহীদের অভিশাপ দেয়। তারা প্রমাণ করে যে তাদের চিন্তা পরিবর্তিত হয়েছে আর তারা অতীত ভুলে গেছে। অতীতে যখন আমরা স্থানীয় ভদ্রলোকেদের অপসারণ করে ভুস্বামীদের জমি ভাগ করেছিলাম তা কি একটা বিদ্রোহ ছিলনা? আর চিয়াঙ কাইশেকের বিরুদ্ধে আমরা যখন লড়েছিলাম তা কি একটা বিদ্রোহ ছিলনা? কিছু লোক এগুলো ভুলে গেছে। অবশ্যই মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবে মাছও ঢুকে থাকবে ড্রাগনও ঢুকে থাকবে; কাঁদা ও বালি দুইই ঢুকে থাকবে। এটা আশ্চর্য নয় যে বিদ্রোহীদের মধ্যে কিছু খারাপ লোক অনুপ্রবেশ করে থাকবে। যখন আমরা প্রথম লাল ফৌজ গঠন করি, তখন আমাদের বাহিনী কি খুব খাঁটি ছিল? অসম্ভব। এটা একটা এড়ানোর অযোগ্য ব্যাপার। আমরা কিভাবে বলতে পারি যে বিদ্রোহীদের মধ্যে কোন ভাল মানুষ নেই? যে এই কথা বলে যে বিদ্রোহীদের মধ্যে কোন ভাল মানুষ নেই সে বস্তুত নিজেকে নেতিকরণ করছে। তিনি ভুলে গেছেন কে আমাদের বিদ্রোহে চালিতে করেছে আর ভুলে গেছেন বিদ্রোহীদের পুরোনো পিতাকে।

একজন কমিউনিস্ট যদি পুঁজিবাদী পথিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করে তাহলে সে কী করবে? একজন কমিউনিস্টের ঐ ধরণের বিবৃতি দেয়া মানে কমিউনিজমের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা। আমদের কমিউনিস্টদের অবশ্যই বুর্জোয়াদের ও শোষক শ্রেণীসমূহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে হবে। যেসব লোকেরা প্রশ্নের সম্মুখীন তারা আমাদের আভ্যন্তরীণ সমস্যা বোঝাপড়া ও সেসব সমস্যা বিশ্লেষণ থেকে আবিষ্কৃত। সভাপতি মাওয়ের নির্দেশনাসমূহ ও দশ মহান ভাবমানস অধ্যয়ন করে তারা নিজেদের সংস্কার করতে পারেন। ইতিমধ্যে তাদের নিজেদের বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনের কথাও ভাবতে হবে, আর তাদের বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গীকে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ ও সভাপতি মাওয়ের চিন্তাধারার সাহায্যে রূপান্তর ঘটাতে হবে। অল্প কিছু লোক রূপান্তরিত না হতে পারে। দ্বন্দ্ব দুইভাবে পরিবর্তিত হতে পারেঃ কেউ ভালর জন্য পরিবর্তিত হবে আর কেউ খারাপের জন্য। কিছু পার্টি সদস্য সমস্যা থেকে শিক্ষা নিতে পারেন আর ভালর জন্য পরিবর্তিত হবেন অথবা পূর্ণাঙ্গভাবে পরিবর্তিত হবেন। এভাবে, শত্রু ও আমাদের মধ্যকার কিছু দ্বন্দ্ব জনগণের মধ্যকার দ্বন্দ্বে পরিবর্তিত হতে পারে; আর জনগণের মধ্যকার কিছু দ্বন্দ্ব শত্রু ও আমাদের মধ্যকার দ্বন্দ্বে পরিবর্তিত হতে পারে।

কিছু কমরেডের মনে মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব মুক্তির পর থেকে চলমান শ্রেণীসংগ্রামের ফল হিসেবে প্রতিভাত হয়না। বরং একে সকালের পরিষ্কার আকাশে এক বজ্র নির্ঘোষ হিসেবে দেখা হয়। কিছু লোক এমনকি একে এক বিরাট ভুল বোঝাবুঝি, খুবই প্রতিক্রিয়াশীল প্রকৃতির হিসেবে বর্ণনা করেন। তাদের একটা কথা আছেঃ “ভেটারান কেডাররা তাদের পদে ফেরত যাক, তরুন কেডাররা তাদের দপ্তরে ফেরত যাক, আর যারা বামেদের সমর্থন করে তারা ইউনিটে ফেরত যাক। মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব হচ্ছে একটা বিরাট ভুল বোঝাবুঝি।” এই বিচ্যুতি হচ্ছে এক মতাদর্শিক সমস্যা, চরিত্রগতভাবে ভাববাদকে প্রতিফলিত করে। যেহেতু মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবে তারা অস্তিত্বশীল প্রতিটি জিনিসের প্রতি অসন্তুষ্ট, উদ্বেগের সাথে অপেক্ষা করছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য। বিকাশকে একটা সর্পিল প্রকৃতির হিসেবে দেখার বদলে একে একটা বৃত্তের মধ্যে ঘুরপাক হিসেবে দেখে। কারখানায় তারা অনুশীলন করে নিয়ন্ত্রণ-বিধিনিষেধ-চাপ; বিদ্যালয়ে তারা বুদ্ধিবৃত্তিক শিক্ষাকে সামনে রাখে আর সবকিছুকে এক পুরোনো কাঠামোতে ঢুকিয়ে রাখে। কী এই মতাদর্শ? এটা হচ্ছে টিপিক্যাল বিবর্তনের স্থূল তত্ত্ব। মার্কসবাদী বস্তুবাদী দ্বন্দ্বতত্ত্ব অনুসারে, সব জিনিসই সামনের দিকে এগুচ্ছে আর অব্যাহতভাবে বিকশিত হচ্ছে। এসব লোকেরা পুরোনোর সাথে বাঁধা, মুখে দ্বন্দ্ববাদের সত্যতাকে স্বীকার করে কিন্তু কাজে বিরোধিতা করে। ব্যবসা প্রশাসনের ক্ষেত্রেও তারা পুরোনো নিয়ম কানুনের পুনপ্রতিষ্ঠা চায় যা জনগণ কর্তৃক বাতিল হয়েছে। তারা ঘন্টা হিসেবে মজুরি দিতে আর সময় হিসেবে পুরষ্কার দিতে আগ্রহী, একথা বলে যে এটা করার মাধ্যমে কাজকর্ম এগিয়ে যাবে। যাহোক, অতীত দশকগুলোতে বিপ্লবের জন্য যার ওপর আমরা নির্ভর করেছি তাকে তারা প্রতিফলন করেনা। আমরা কি আর্থিক পুরষ্কারের ওপর নির্ভর করেছি, ঘন্টা অথবা সময় ভিত্তিক মজুরির ওপর? না, আমরা সভাপতি মাওয়ের বিপ্লবী লাইনের ওপর নির্ভর করেছি, কোটি কোটি বিপ্লবী জনগণ, যব আর রাইফেলের উপর। বৈষয়িক প্রণোদনার কথা বলতে গেলে, সোভিয়েত সংশোধনবাদীরা সেগুলোকে জোরালোভাবে প্রয়োগ করেছে, কিন্তু তারা তাদের শিল্পকে স্থবিরতার দিকে ঠেলে দিয়েছে আর দেশে বিদেশে প্রতিকুলতা নিয়ে এসেছে। যদি সেগুলো কার্যকর হয়ে থাকে, লেনিনগ্রাদের শ্রমিকরা কেন বিদ্রোহ করতে চায়? মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব কি বৈষয়িক প্রনোদনার ওপর নির্ভর করেছে নাকি জনগণের সচেতনতার উপর? এটা কি সভাপতি মাওয়ের বিপ্লবী লাইনের উপর নির্ভর করেনি জনগণকে সমাবেশিতকরণে? নিশ্চিতভাবে, আমরা জনগণের জীবনকে নেতিকরণ করার অর্থ করিনা। কিন্তু জনগণের জীবনের যত্ন নেয়া এক জিনিস আর বৈষয়িক প্রণোদনার উপর জোর দেয়া অন্য জিনিস। শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে, আমাদেরকে প্রযুক্তিবিদ্যার নবরূপায়ন ও যান্ত্রিকীকরণের জন্য কিছু করতে হবে। জনগণের জীবনযাত্রাকে যথাযথভাবে উচ্চে উঠানো দরকার, কিন্তু আমরা যদি যাকে বলে ঘন্টা অনুযায়ী মজুরী আর আর্থিক পুরষ্কারকে অনুশীলন করি তা হবে শ্রমিকশ্রেণীর প্রতি এক বিরাট অপমান, জনগণের জীবনের জন্য কোন লাভ নয়। আমাদের রেলপথ বাহিনী অনেক রেলপথ নির্মাণ করেছে। আমরা কি ঘন্টা হিসেবে মজুরীর ওপর নির্ভর করেছি? সৈন্যবাহিনীর তালিকাভুক্ত লোকেরা প্রতিমাসে আট ইউয়ান পেত কোন বাড়তি আর্থিক পুরষ্কার ছাড়া। আমরা সমগ্রভাবে সভাপতি মাওয়ের চিন্তাধারার উপর নির্ভর করেছি। এই সমস্যাগুলি সবাইকে জড়িত করেনা। কেন্দ্রীয় কমিটির দুটি বিভাগ আছে যারা এই লাইনকে এগিয়ে নিয়েছে। তারা সাংহাইয়ে একটা পরীক্ষা চালিয়েছে কিন্তু শ্রমিকদের দ্বারা দূরীভূত হয়েছে। সমস্যাটি সরাসরি মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সাথে সম্পর্কিত। আজকে আমরা এখানে আলোচনা করছি এই আশায় যে অধ্যয়ন ক্লাশে আমাদের কমরেডরা তাদের ইউনিটে ফিরে গেলে এই সমস্যাকে দেখতে পাবেন আর সাহসের সাথে সংগ্রামে নিয়োযিত হবেন, অথবা অন্তত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি পরিস্থিতি রিপোর্ট করবেন। কিছু এলাকা প্রশ্ন করে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আগে গৃহীত নিয়মকানুন তারা অব্যাহত রাখবে কিনা। এক পরিকল্পনা কর্ম সম্মেলনে একজন শ্রমিক পরিষ্কার জবাব দিলেনঃ “না”। তিনি তিন শর্ত উল্লেখ করেনঃ প্রথম, আমরা নিয়ন্ত্রণ-বিধিনিষেধ-চাপ চাইনা; দ্বিতীয়ত আমরা মাসিক মজুরীর পূর্ণ প্রদান বিরোধিতা করি; তৃতীয়ত অতীতে যেগুলো সঠিক ছিল তা এখন হুবুহু প্রয়োগ করা যায়না কারণ আমাদের উৎপাদন এখন বৃদ্ধি পেয়েছে যেমন একজন বালক বড় হয়ে আর পুরোনো কাপড় পরতে পারেনা। শ্রমিকটির কথাবার্তা ছিল দ্বন্দ্ববাদী। তিনি সঠিকঃ সবকিছু বিকশিত হয়েছে, আর নেতাদের চিন্তাচেতনা নতুন পরিস্থিতির সাথে সাথে এগুনো দরকার। আমরা দৃঢ়ভাবে অতীতমুখী আন্দোলনকে বিরোধিতা করি। সভাপতি মাও আমাদের শিক্ষা দেনঃ “আমাদেরকে আবিষ্কার, উদ্ভাবন, সৃজনশীলতায় ও এগিয়ে যেতে সচেষ্ট হতে হবে। স্থবিরতা, হতাশাবাদ, ঔদ্ধত্য, আত্মপ্রসাদের চিন্তা–এসবকিছুই ভুল।“ লিনপিয়াওকে সমালোচনা আর কাজের রীতির শুদ্ধিকরণ অভিযানকে গভীরতর করতে হবে, লিন পিয়াও ও কনফুসিয়াসের সমালোচনার আন্দোলনকে গুরুত্বপুর্ণ করতে হবে এবং কনফুসিয়াসের ওপর সমালোচনাকে একীভূত করতে হবে।

লিন পিয়াওয়ের বিষাক্ত প্রভাবকে সমালোচনা করতে আমাদেরকে অবশ্যই কনফুসীয় দোকানকে উচ্ছেদ করতে হবে। কনফুসিয়াস ছিল চীনা ইতিহাসের প্রথম চিন্তাবিদ যে সুব্যবস্থিতভাবে ও সমগ্রভাবে ভাববাদের কথা বলেন। পুরোনো সাথে জড়িত সবকিছুই তার মহিমা কীর্তন করে। লিন পিয়াও হচ্ছে আধুনিক যুগের কনফুসিয়াস। তাই লিন পিয়াওয়ের উপর সমালোচনা আর কনফুসিয়াসের ওপর সমালোচনাকে একীভূত করতে হবে আমাদের মন থেকে কনফুসিয়াসের দোকানকে উচ্ছেদ করতে। দাস ব্যবস্থা থেকে সামন্ত ব্যবস্থার উত্তরণের সময় কনফুসিয়াস বাস করত। সে সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনকে ঘৃণা করেছে, একগুঁয়েভাবে দাস ব্যবস্থাকে রক্ষা করেছে আর ইতিহাসের চাঁকাকে থামানোর প্রচেষ্টায় সামন্ত ব্যবস্থাকে বিরোধিতা করেছে। সে লু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সাত দিন পরেই একজন বিপ্লবী শাও চেঙ-মাওকে হত্যা করে। যখন সে দেখতে পেল জান ইউ নামের তার এক ছাত্র বিকাশের চিন্তাধারা গ্রহণ করছে, সে তার কিছু ছাত্রকে প্ররোচিত করে তার উপর আক্রমণ করতে। তাই, সভাপতি মাও বলেছেন, “কনফুসিয়াসের কাজের রীতির সাথে উৎপীড়ক আর ফ্যাসিবাদের কাজের রীতির খুব মিল।” তার বিকৃত কর্মকান্ডের কারণে, তার পদ থেকে তিন মাস পর সে নেমে যায়। যদিও সে দপ্তরে ছিলনা, কিন্তু পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য তার হৃদয় কখনো মরেনি। সে তার ভাবধারা সর্বত্র প্রচার করতে লাগলো আর যখনই সে দেখেছে পরিস্থিতি ভালর দিকে যাচ্ছে তখনই সে পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে চিৎকার করে উঠেঃ মালিকানা ধ্বংস হয়ে গেল! সংগীত ধ্বংস হয়ে গেল!” গতকাল পিপলস ডেইলি চে চুনের একটা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। নিবন্ধটি খুব সুন্দরভাবে রচিত। আশা করি আপনারা সবাই এটা যত্নসহ পড়বেন।

কিছু লোকের মার্কসবাদ-লেনিনবাদের প্রতি কোন দরদ নেই কিন্তু চরম দরদে তারা সংশোধনবাদের পেছনে ছোঁটে। তারা মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের নবজাত জিনিস দেখতে অভ্যস্ত নয়, বরং পুরোনো জিনিসের প্রতি লালায়িত।

সভাপতি মাও বলেছেন, “পুঁজিবাদ আর পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অস্তগামী সূর্য, সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করছে, আর যে কোন মুহুর্তে প্রাণ ত্যাগ করতে পারে।” অন্যদিকে কমিউনিজম ও কমিউনিস্ট সমাজ ব্যবস্থা সারা দুনিয়ায় বিস্তৃত হচ্ছে প্রবল ঢেউ ও বজ্রের মতো আর সজীবতার চমৎকার তারুণ্যে রয়েছে।“ কেন সাম্যবাদের লক্ষ্যযুক্ত একজন সাম্যবাদী পুরোনো জিনিসের প্রতি লালায়িত হয়? এটা একটা প্রশ্ন যা আজকে উপস্থিত সকল কমরেডকে যত্ন সহকারে অধ্যয়ন করতে হবে।

আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের কমরেডদের আহবান করা মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের শুরু থেকে সভাপতি মাও যে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাগুলি দিয়েছেন তা অধ্যয়ন করা, আর মার্কসবাদ অনুশীলন কর, সংশোধনবাদ নয়—এর তিন নীতিকে মনে রাখবেন। কেবল সম্প্রতি সভাপতি মাও আমাদের সতর্ক করেন, “কমরেডগণ, সতর্ক হোন! শীঘ্রই চীনে সংশোধনবাদ আবির্ভুত হবে।” তিনি আরো তুলে ধরেন যে কিছু লোক রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর জ্ঞান ছাড়াই রাজনীতিকে সমালোচনা করে, আর সামরিক কমিশন না সামরিক না রাজনীতি বুঝে। এই নির্দেশনা প্রযোজ্য সকল এলাকার সরকারী শ্রমিক, সৈনিক ও ছাত্রদের ওপর। তারা আমদের বলে প্রধান প্রধান ঘটনাগুলি অধ্যয়নের জন্য আঁকড়ে ধরতে। সংশোধনবাদ যদি ভবিষ্যতে দেখা যায় তা উপরিকাঠামোতে দৃশ্যমান হবে।

সভাপিত মাও সম্প্রতি এই নির্দেশনাও দিয়েছেন যে আমাদেরকে তিনটি বৃহৎ শৃংখলা ও মনোযোগ দেবার আটটি ধারার গান গাইতে হবে। প্রধানভাবে তিনি চান যে আমরা মনে রাখি যে কেবল ঐক্যই আমাদের বিজয়ে চালিত করতে পারে। সভাপতি মাওয়ের নির্দেশনার ওপর আমাদের একটা সঠিক উপলব্ধি ও ব্যাখ্যা থাকতে হবে যাতে “দশম কংগ্রেস”-এর ভাবমানস এগিয়ে নেয়া যায় আমরা আরো বৃহত্তর সংগ্রামের জন্য আরো ভালভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি।

(শেষ)