সিরাজ সিকদার রচনাঃ ১নং ব্যুরোর আওতাধীন পরিচালকদের সাথে ষষ্ঠ বৈঠক শেষে ব্যুরো পরিচালক প্রদত্ত সিদ্ধান্তসমূহ

সিরাজ সিকদার

সিরাজ সিকদার

 


পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি কর্তৃক রচনা ও প্রকাশ ১৯৭৩ শেষাংশ

কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী কর্তৃক সর্বহারা পথ (www.sarbaharapath.com) এর অনলাইন প্রকাশনা ৪ ডিসেম্বর ২০১৪


পিডিএফ

১। পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির দশম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের ইশতেহার একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন দলিল।

এ দলিলের লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং আরো বিরাটাকার বিজয় আনয়ন করতে হবে।

২। এ ইস্তেহারে শীতকালীন রণনৈতিক আত্মরক্ষার সময় সাংগঠনিক সুসংবদ্ধকরণের সিদ্ধান্ত রয়েছে।

এ সুসংবদ্ধকরণের মাধ্যমে আমরা বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের সাফল্যসমূহ ধরে রাখতে সক্ষম হবো এবং পরবর্তী বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের জন্য চমৎকার প্রস্তুতি অর্জন করতে সক্ষম হবো।

এ কারণে এ সুসংবদ্ধকরণের সিদ্ধান্ত অতিমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ।

সাংগঠনিক সুসংবদ্ধকরণের জন্যও প্রথমে প্রয়োজন মতাদর্শগত সুসংবদ্ধকণ। এ মতাদর্শগত সুসংবদ্ধকরণের লক্ষ্য হচ্ছে অসর্বহারা বিশেষ করে ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শ ও তার বহিঃপ্রকাশসমুহ দূর করা, সর্বহারার মতাদর্শ দ্বারা কর্মীদের সুসজ্জিত করা।

বর্তমানে সংগঠনে অসর্বহারা মতাদর্শের বহিঃপ্রকাশ নিম্ন ক্ষেত্রসমূহে ঘটছেঃ

আন্ত-আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, উচ্চস্তর ও নিম্নস্তরের সম্পর্ক, গণতন্ত্র ও কেন্দ্রীকতা, এককেন্দ্র, কেন্দ্রীভূত নেতৃত্বের এবং শৃংখলার ক্ষেত্রে, কমরেড ও জনগণের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে, সমালোচনা-আত্মসমালোচনার ক্ষেত্রে।

উপরোক্ত বিষয়সমুহের ক্ষেত্রে যে সকল বিচ্যুতি প্রকাশ পায় তা ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বহিঃপ্রকাশ বিভেদপন্থীবাদ ও উপদলবাদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত।

এগুলো ব্যক্তিতাবাদেরই বহিঃপ্রকাশ।

এছাড়া সামরিক ক্ষেত্রে অতিবাম, অতি ডান-বিচ্যুতি, চিন্তা ও কর্মের ক্ষেত্রে আত্মগতভাব, একতরফাবাদ, ভাসাভাসাভাব, যান্ত্রিকতা (Mechanism) এবং অনমনীয়তা (Rigidity) [১] রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ডানে বামে দোদুল্যমানতা প্রভৃতি বহিঃপ্রকাশও কর্মীদের মাঝে রয়েছে।

ইহা ব্যতীত গোড়ামীবাদ ও সংকীর্ণ অভিজ্ঞতাবাদের বহিঃপ্রকাশও কর্মীদের মাঝে রয়েছে।

উপরোক্ত বিচ্যুতিসমুহ হচ্ছে ক্ষুদে বুর্জোয়া ব্যক্তিতাবাদী মতাদর্শের বিভিন্ন বহিঃপ্রকাশ।

উপরোক্ত মতাদর্শগত বিচ্যুতি সমূহের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও কঠোর সংগ্রাম পরিচালনার জন্য অতীতের অভিজ্ঞতাসমুহ কাজে লাগাতে হবে। সর্বস্তরে চক্রবিরোধী সংগ্রাম ও শুদ্ধি অভিযান, গোড়ামীবাদ বিরোধী সংগ্রাম, চিন্তাধারার পরিবর্তন ও কর্মরীতি সংশোধন এবং কমরেড সিরাজ সিকদারের নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। এছাড়াও বিশেষ বিশেষ বিচ্যুতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য সমস্যাভিত্তিক পড়াশুনা-সংগ্রাম-সমালোচনা ও রূপান্তরের আন্দোলন চালাতে হবে।

এ মতাদর্শগত সংগ্রাম চালাতে হবে কেডার সম্মেলনে, মানোন্নয়ন সভায়।

এ মতাদর্শগত সংগ্রাম শীতকালীন আত্মরক্ষাকালীন সময়ের মাঝেই শেষ করতে হবে।

৩। আন্ত-আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিকতাবাদের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়।

কোন কোন অঞ্চল নিজ আঞ্চলিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়, নিজ অঞ্চলকে উন্নত মনে করে, অন্যদের অনুন্নত-হেয় মনে করে, অন্যদের সম্পর্কে শুধু অভিযোগ করে।

এটা ব্যক্তিতাবাদের বহিঃপ্রকাশ। এতে ঐক্য বিনষ্ট হয়, বিপ্লবের ক্ষতি হয়, এবং সামগ্রিক স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে ক্ষুদ্র স্বার্থকে, অংশের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। আন্ত-আঞ্চলিক সম্পর্ক মার্কসবাদের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা উচিৎ। এজন্য নিজের চেয়ে অপরের প্রতি যত্নশীল হও’ এবং ‘শিক্ষা প্রদানে ও গ্রহণে অতৃপ্ত হও’ এ নীতি প্রয়োগ করতে হবে।

অর্থ, অস্ত্র, বৈষয়িক দ্রব্যাদি বন্টনে, মানোন্নয়নে, কেডার নিয়োগ প্রভৃতির ক্ষেত্রে প্রতি অঞ্চল অন্য অঞ্চলের প্রতি, নিজের চেয়ে অপরের প্রতি বেশী যত্নশীল হলে আন্ত-আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নত ও দৃঢ়তর হবে, আঞ্চলিকতাবাদ ও উপদলবাদ দূর হবে।

এক অঞ্চলের কর্মীদের নিম্নমান, আর্থিক সঙ্কট, বৈষয়িক অসুবিধার বিষয়ে অভিযোগ না এনে তা সমাধানের বিষয়ে সহায়তা করা উচিত।

এভাবে আন্ত-আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অভিযোগ কমে যাবে।

তবে প্রতিটি অঞ্চলের সচেষ্ট হতে হবে সকল বিষয়ে সাবলম্বী হওয়ার জন্য।

৪। উচ্চস্তর ও নিম্নস্তরের সম্পর্ক, গণতন্ত্র ও কেন্দ্রীকতা, এককেন্দ্র ও কেন্দ্রীভূত নেতৃত্ব এবং শৃঙ্খলা সংক্রান্তঃ

সংগঠনে সাধারণভাবে উচ্চস্তর ও নিম্নস্তরের সম্পর্ক ভাল, শৃঙ্খলা উন্নত, এককেন্দ্র শক্তিশালী, একীভূত নেতৃত্ব ভাল, গণতন্ত্র ও কেন্দ্রীকতা যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে।

কিন্তু তবুও কোন কোন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীকতাকে অবহেলা করা, শৃঙ্খলাকে ঢিলে দেওয়া হয় এবং উগ্র গণতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ রয়েছে।

আমাদেরকে শৃঙ্খলা উন্নত করতে হবে, গণতন্ত্র ও কেন্দ্রীকতার ধারাগুলো সর্বস্তরে পালন করতে হবে।

▬ সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরুর অধীন;

▬ নিম্নস্তর উচ্চস্তরের অধীন;

▬ সমগ্র সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির অধীন;

▬ ব্যক্তি সংগঠনের অধীন।

এ ছাড়াও তিনটি বৃহৎ শৃংখলা ও মনোযোগের আটটি ধারাও কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

তিনটি বৃহ শৃংখলা নিম্নরূপঃ

১। সকল কার্যক্রিয়ায় আদেশ মেনে চলুন;

২। জনসাধারণের কাছ থেকে একটি সূচ কিংবা সূতোও নেবেন না;

৩। দখলকৃত সমস্ত জিনিস জমা দিন।

মনোযোগ দেবার আটটি ধারা নিম্নরূপঃ

১। ভদ্র ভাবে কথা বলুন;

২। নায্যমূল্যে কেনাবেচা করুন;

৩। ধার করা প্রতিটি জিনিস ফেরত দিন;

৪। কোন জিনিস নষ্ট করলে তার ক্ষতিপূরণ করুন;

৫। লোককে মারবেন না, গাল দেবেন না;

৬। ফসল নষ্ট করবেন না;

৭। নারীদের সাথে অশোভন ব্যবহার করবেন না;

৮। বন্দী সৈন্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করবেন না।

উচ্চতর নিম্নস্তরের সম্পর্ক উন্নত ও সৌহার্দমূলক হতে হবে। উচ্চস্তর গণতন্ত্র ও কেন্দ্রীকতা প্রয়োগ নিপুণ হবে, নিম্নস্তরের অবস্থা অবগত হবে, তাদের মান্নোয়ন, সমস্যা সমাধানে, তদারকীতে ও পরিচালনায় নিপুণ হতে হবে।

নিম্নস্তর উচ্চস্তর প্রদত্ত দায়িত্ব ও নির্দেশ পালনে নিপুণ হবে; উচ্চস্তরকে সস্নেহে তত্ত্বাবধান করবে।

আমাদের উন্নত শৃংখলা এবং কর্মীদের ভাল ব্যবহার ইতিমধ্যেই জনগণের প্রশংসা পেয়েছে। তবে কোথাও কোথাও দখলকৃত দ্রব্যাদি আত্মসাৎ, অস্ত্রের অসৎ ব্যবহার হয়েছে।

এ সকল করলে কেন্দ্রীয় কমিটি উপরোক্ত শৃংখলা ভঙ্গের অপরাধ সংক্রান্ত শাস্তির ধারা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

ইতিমধ্যেই দু’ক্ষেত্রে পার্টি ও জনগণ বিরোধী পার্টি সম্পদ আত্মসাৎকারী, অন্যায়ভাবে অস্ত্র ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।

ইহা কর্মী ও জনগণের দাবীতে সার্কুলার মোতাবেক কার্যকরী হয়েছে। বৈষয়িক দ্রব্যাদি বন্টনের ক্ষেত্রে উগ্র গণতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার মাধ্যমে বুঝাতে হবে হবে যে, বৈষয়িক দ্রব্যাদি আত্মগত প্রয়োজন এবং বস্তুগত সামর্থ দ্বারা নির্ধারিত হয়, নিরঙ্কুশ সমানাধিকার এখানে কার্যকরী নয়।

অর্থনৈতিক ও বৈষয়িক দ্রব্যাদি বন্টনে ব্যক্তিগত কারণে উদার বা উচ্চস্তরের জন্য উদার কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে অনুদার এ ধরনের চক্রের অনুরূপ বৈশিষ্ট্য পরিহার করতে হবে।

এক কেন্দ্র এবং কেন্দ্রীভূত নেতৃত্বকে রক্ষা ও জোরদার করতে হবে। একে দুর্বল করা বা হেয় করার সকল কার্যকলাপ (জ্ঞাতে–অজ্ঞাতে) অবশ্যই দূর করতে হবে। উচ্চস্তরের সামনে তোষামোদ করা, পিছনে সমালোচনা করা, কান-কথা বলা, গুজব-অপবাদ রটনা করা প্রভৃতি চক্রের অনুরূপ কার্যকলাপ অবশ্যই পরিহার করতে হবে।

আমাদের সর্বদা মনে রাখতে হবে, যে কেউ শৃংখলা লংঘন করে সে-ই শত্রুকে সাহায্য করে।

কর্মীদের সাংস্কৃতিক ও ব্যবহারিক দিক এবং জনগণের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্ষুদে বুর্জোয়া-সামন্তবাদী ব্যক্তিতাবাদের ঝোঁক প্রকাশ পায়।

আমাদেরকে সর্বহারার উন্নত সংস্কৃতি ও ব্যবহার–রীতি রপ্ত করতে হবে, কেডার ও জনগণের সাথে উন্নত ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।

আমাদেরকে বিনয়ী, নম্র হতে হবে, নিজের চেয়ে অপরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে, আত্মসমালোচনা চালাতে সাহসী হতে হবে, আমলাতান্ত্রিক ব্যবহার, রুক্ষতা,  মেজাজ, আন্তরিকতার অভাব, ব্যক্তিস্বার্থের কারণে খারাপ ব্যবহার দূর করতে হবে।

নারী, শিশু, নবাগত, অসুস্থদের প্রতি যত্নশীল হবে হবে।

চলাফেরা, দৈনন্দিন জীবনে সুশৃংখল, নিয়মতান্ত্রিক ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

৫। সমালোচনা-আত্মসমালোচনার শুভ রীতি সংগঠনে নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে না। এক্ষেত্রে এখনো অশুভ রীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। সামনা সামনি তোষামোদ করা বা কিছু না বলে পিছনে সমালোচনা করা, কান কথা বলা,  গুজব ,বিদ্রুপ ছড়ানো, গুরুত্ব সহকারে আত্মসমালোচনা না করা, সংশোধনে ব্রতী হওয়ার পরিবর্তে হাল্কাভাবে বিষয়টি নেওয়ার অশুভ প্রবনতা দেখা যাচ্ছে।

সমালোচনা-আত্মসমালোচনা যথাযথ পদ্ধতিতে চালাতে হবে, একে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।

যারা সমালোচনা গ্রহণ করে না তারা হয় উদ্ধত।

যারা সমালোচনা গ্রহণ করে তারা হয় বিনয়ী।

যাদের মাঝে ব্যক্তিস্বার্থ রয়েছে, নিজেদেরকে যারা কেউকেটা মনে করে, বুর্জোয়া আত্মসম্মানবোধের কথা চিন্তা করে তারা সমালোচনা অপমানকর মনে করে; সমালোচনা এড়াতে চায়।

অসর্বহারা মতাদর্শ দূর করার পদ্ধতি হচ্ছে সমালোচনা-আত্মসমালোচনা এবং ত্রুটি শুধরে দেওয়া।

সমালোচনা-আত্মসমালোচনা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে করা উচিৎ।

সমালোচনা আহবানে, আত্মসমালোচনা পরিচালনায় এবং ত্রুটি সংশোধনে নির্ভিক হতে হবে।

প্রতিটি মানোন্নয়ন সভায়, কেডার সম্মেলনে সমালোচনা-আত্মসমালোচনা পরিচালনা করতে হবে।

সামনে তোষামোদ, পিছনে সমালোচনা, অসাংগঠনিক সমালোচনা, কান কথা প্রভৃতি পরিহার করতে হবে। এ ধরনের কাজ চক্রের অনুরূপ কাজ।

যারাই সর্বহারা হতে ইচ্ছুক তাদেরকেই সমালোচনা-আত্মসমালোচনা ও শোধরানোর পদ্ধতি রপ্ত করতে হবে।

৬। ইহা ব্যতীত অন্যান্য ব্যক্তিস্বার্থের বহিঃপ্রকাশও দূর করতে হবে। নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া, স্ত্রী/প্রেমিকার স্বার্থকে দেখা, তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়া, উচ্চস্তরের প্রতি যত্নশীল হওয়া কিন্তু অন্যের প্রতি যত্নশীল না হওয়া প্রভৃতি চক্রের অনুরূপ ব্যবহার অবশ্যই পরিহার করতে হবে।

৭। কর্মীদের বিশেষ করে পরিচালকদের বাস্তবনিষ্ঠ ও দূরদর্শী হতে হবে।

এর জন্য সাধারণ লাইন ও বিশেষ লাইন, রণনীতি ও রণকৌশল ভালভাবে রপ্ত করতে হবে।

রণকৌশল ও বিশেষ লাইন রপ্ত ও প্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তবনিষ্ঠতা আসবে।

কিন্তু সাধারণ লাইন ও রণনীতির ক্ষেত্রে অজ্ঞ হলে কর্মীরা ভবিশ্যতের দিশা হারিয়ে ফেলবে, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হবে না; অনিবার্যভাবেই তারা সংকীর্ণ অভিজ্ঞতাবাদের ভূল করবে।

আবার শুধু রণনীতি বা সাধারণ লাইন নিয়ে ব্যস্ত থাকা কিন্তু তা বাস্তবায়িত করার জন্য বিশেষ লাইন, রণকৌশল রপ্ত ও প্রয়োগ না করলে কর্মীরা গোড়ামীবাদের ভুল করবে।

আমাদেরকে রণনীতি ও রণকৌশলে, সাধারণ ও বিশেষ লাইনের সমন্বয় সাধন করতে হবে; গোড়ামীবাদ ও সংকীর্ণ অভিজ্ঞতাবাদ পরিহার করতে হবে, বাস্তবনিষ্ঠ ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হতে হবে।

বিপ্লবের মৌলিক সমস্যাই হচ্ছে প্রতিটি প্রশ্নে সঠিক রণনীতি ও রণকৌশল, সাধারণ ও বিশেষ লাইন নির্ধারণ এবং তার বাস্তবায়ন।

৮। বিপ্লবের প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ধাপ বা স্তরের বৈশিষ্ট্যসমূহ বের করতে হবে এবং তা সমাধান করতে হবে। এভাবে পরবর্তী স্তরে প্রবেশ করতে হবে।

স্তরগত সমস্যার সমাধান ব্যতীত পরবর্তী স্তরে প্রবেশ করা যায় না, গতি বন্ধ হয়ে যায়, স্থবিরতা আসে, সংগঠন ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং ধ্বংস হয়।

গতিই হচ্ছে জীবন, স্থবিরতা হচ্ছে মৃত্যু।

প্রতিটি স্তরগত প্রয়োজনের সাথে আমাদের মান খাপ খাওয়াতে হবে। অন্যথায় আমরা ঐ স্তরের অযোগ্য হয়ে পড়ব।

বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের পূর্বেকার সংগঠনের স্তরগত সমস্যা ছিল—

মতাদর্শগত ক্ষেত্রে চক্র বিরোধী সংগ্রাম ও শুদ্ধি অভিযান, সামরিক ক্ষেত্রে জাতীয় শত্রুর খতমের স্তর থেকে শত্রু অবস্থান দখল, অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান; সাংগঠনিক ক্ষেত্রে মানোন্নয়ন ও সুসংবদ্ধকরণ; রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্তরগত লাইন নির্ধারণ ইত্যাদি।

এ সকল স্তরগত বিশেষ সমস্যাবলীর সমাধানে পার্টি সক্ষম হয়েছে, যার ফলে পার্টি বর্তমানের স্তরে প্রবেশ করেছে।

এ স্তরের মতাদর্শগত সমস্যা হচ্ছে ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শের বহিঃপ্রকাশ দূর করা, সামরিক ক্ষেত্রে রণনৈতিক আত্মরক্ষা, অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বজায় রাখা, সাংগঠনিক ক্ষেত্রে মানোন্নয়ন ও সুসংবদ্ধকরণ এবং জনগণকে সংগঠিত করা; রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গণসংগ্রামের সুচনা ও জোরদার করা।

বিভিন্ন আকৃতির সংশোধনবাদী ও সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া, একই সাথে আন্তরিকভাবে সর্বহারা বিপ্লবীদের মধ্যকার ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রেণী ঐক্যের লাইনে অব্যাহতভাবে কার্য চালিয়ে যাওয়া।

ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ, সোভিয়েট সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ, মার্কিনের নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদ ও তাবেদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আরো তীব্রতর করা; একই সাথে সকল দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য জাতীয় ঐক্যের কাজ (জাতীয় মুক্তি ফ্রন্টের কাজ) জোরদার করা ইত্যাদি।

এভাবে সংগঠন পার্টি ও বিপ্লবের প্রতিটি স্তরের সমস্যার যথাযথ সমাধান দিয়ে অব্যাহত গতিতে বিকাশ লাভ করছে। এ কারণেই আমাদের সংগঠন হচ্ছে প্রাণবন্ত ও গতিশীল।

এ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিশেষত্ব চ্যাপ্টার অধ্যয়ন করতে হবে।

৯। বর্তমানে আমাদের শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য উন্নততর নেতৃত্ব ও কর্মপদ্ধতি প্রয়োজন। বর্তমানে আমাদের শ্লোগান হচ্ছে—আমাদের প্রথম প্রয়োজন উন্নত নেতৃত্ব, আমাদের দ্বিতীয় প্রয়োজন উন্নত নেতৃত্ব, আমাদের তৃতীয় প্রয়োজন উন্নত নেতৃত্ব।

পূর্ব বাংলার ক্ষুদে উৎপাদন ব্যবস্থায় নেতৃত্ব প্রদানের প্রয়োজন হয় না। এ কারণে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতাসম্পন্ন লোকেরও সংকট।

আমাদেরকে উন্নততর নেতৃত্ব সম্পর্কিত মার্কসবাদী পদ্ধতি প্রয়োগ করে উৎপাদন ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট নেতৃত্বস্বল্পতা দূর করতে হবে; নেতৃত্বের কলাকৌশল কর্মীদের বিশেষ করে সম্ভাবনাময়দের শিখাতে হবে। নেতৃত্ব সম্পর্কিত দলিলাদি পাঠ ও প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে নেতৃত্বের সংকট দূর করতে হবে।

উন্নততর নেতৃত্বের জন্য বুদ্ধি ও স্মরণশক্তির একান্ত প্রয়োজন।

বুদ্ধি হচ্ছে রণনীতি ও রণকৌশলের যথাযথ সমন্বয়, প্রধান ও গৌণ দ্বন্দ্বের যথাযথ সমন্বয় সাধন করা এবং চিন্তা ও কর্মের ক্ষেত্রে একতরফাবাদ, ভাসাভাসাভাব ও আত্মগতভাবের বহিঃপ্রকাশ না থাকা।

কাজেই উপরোক্ত পদ্ধতিতে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ সাধন করতে হবে।

স্মৃতিশক্তিকেও অনুশীলনের প্রক্রিয়ায় বাড়াতে হবে।

১০। পূর্ব বাংলার ক্ষুদ্র ভৌগলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সমবিকাশ, জনগনের সাংস্কৃতিক সমমান, চরিত্রগত মিল প্রভৃতি পূর্ব বাংলার বিপ্লবে কতগুলো বিশেষ বৈশিষ্ট্য আনয়ন করবে।

এর মাঝে একটি হবে সশস্ত্র সংগ্রামের সাথে উচ্চমানের গণসংগ্রামের সমন্বয়।

পূর্ব বাংলার এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য গণসংগ্রাম অভ্যূত্থানে রূপ নেবে।

পূর্ব বাংলার জনগণের আবেগ প্রবণতার দিককে নাড়া দিতে হবে, আমাদেরকে আবেগপূর্ণ লেখা ও বক্তৃতা দানে সক্ষম হতে হবে, জনগণের আবেগকে সঠিক পথে ব্যবহার করতে পারদর্শী হতে হবে।

১১। বিপ্লবের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য ও কষ্টসহিষ্ণুতা, ‘সবুরে মেওয়া ফলে’ এটা সর্বদাই মনে রাখতে হবে।

১২। কোন পদে নিয়োগের পূর্বে উক্ত পদের কাজ সংক্রান্ত ট্রেনিং দিয়ে নিয়োগ করতে হবে। দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্ধারণ করে দেওয়া, এগুলো কার্যকরী হচ্ছে কিনা তা সর্বদা তদারক করা। একটা নিদির্ষ্ট সময় অন্তর সারসংকলন, মানোন্নয়ন, ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করা।

১৩। কর্মীদেরকে পাঁচটি প্রবন্ধ, গণযুদ্ধ ও উদ্ধৃতি পাঠ করাতে হবে।

১৪। হরতাল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পার্টির একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। সর্বস্তর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে। হরতালকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সকল স্তরের প্রতি আহবান জানানো হচ্ছে।

হরতাল বাস্তবায়নের সময় সংগঠনের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

১৫। বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকা ‘প্রয়োজন সংক্রান্ত’ ফাইলে রাখতে হবে। জিনিসপত্র পেলে ফাইল অনুযায়ী বিতরণ করা।

১৬। নিরাপত্তা ফাইল রাখা। পরিচালক নিজে এ ফাইল রক্ষণাবেক্ষণ করবে। এর এক কপি উচ্চস্তরে পাঠাতে হবে। এ ফাইলে দলত্যাগী, সুবিধাবাদী, বৈর ব্যক্তি, সন্দেহজনক ব্যক্তি, শত্রুদের তালিকা ও কার্যকলাপের বিবরণ রাখা।

১৭। সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ১নং অঞ্চলের কাঠামো ও কর্মপদ্ধতি প্রয়োগ করা।

১নং অঞ্চলের কাঠামো

   পরিচালক


⇓                                ⇓                                          ⇓

সামরিক সহকারী              সাংগঠনিক সহকারী    মানোন্নয়ন ও অনুসন্ধানের সহকারী

উপঅঞ্চল এবং এলাকায়ও এ কাঠামো অনুযায়ী নেতৃত্ব সংস্থা গঠন করা যায়।

১৮। অনুসন্ধান সংক্রান্তঃ

অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে সার্বিক বাস্তব অবস্থা অবগত হওয়া এবং উচ্চস্তরকে তা জানানো।

ক্ষমতাপ্রাপ্ত অনুসন্ধানলব্ধ সমস্যাবলীর সমাধান প্রদান।

সার্বিক অবস্থা বলতে বুঝায় সাংগঠনিক, রাজনৈতিক, মতাদর্শগত, সামরিক, অর্থনৈতিক, ভৌগলিক, প্রেস-প্রিন্টিং, প্রচার, আশ্রয়স্থল, শত্রু-মিত্র ও জনগণের অবস্থা। অনুসন্ধান হলো এগুলোর বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন।

একজন কর্মীর ক্ষেত্রে বাস্তব অবস্থা কি?

▬ তার ইতিহাস

▬ সে কিভাবে পার্টিতে যোগ দিল

▬ কেন যোগ দিল

▬ কার মাধ্যমে

▬ শ্রেণী ভিত্তি

▬ পারিবারিক বৈশিষ্ট্যসমূহ ও পরিবেশ

▬ যোগদানের পরবর্তীকালে কোথায় কি কি কাজ করেছে

▬ কার কার সংস্পর্শে ছিল

▬ কি কি ধরনের দায়িত্ব পালন করেছে

▬ তার সম্পর্কে উচ্চস্তর, সমস্তর, নিম্নস্তর, সহানুভূতিশীল ও জনগণের মতামত

▬ তার বর্তমান অবস্থা।

▬ ভাল দিক, খারাপ দিক, সীমাবদ্ধতা এবং তার অন্যান্য মৌলিক দিকসমুহ

▬ তার মান, স্তর

▬ সদস্য/প্রার্থী সদস্য/পাঠচক্র না গ্রুপ

▬ শৃংখলা, নিরাপত্তা সংক্রান্ত তার অবস্থা।

এর সাথে কেডার ইতিহাস, অতিরিক্ত পয়েন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির সার্কুলার ভিত্তিক অনুসন্ধান যুক্ত করতে হবে।

এলাকা বা অঞ্চলের সার্বিক অবস্থা কি?

▬ ভৌগলিক অবস্থান

▬ পার্টি বিকাশের ইতিহাস

▬ কর্মীদের সংখ্যা ও মান

▬ কেন্দ্রীয় কমিটির সার্কুলার ভিত্তিক অন্যান্য তথ্যাবলী।

অনুসন্ধানকারীকে বাস্তবনিষ্ঠ ও বিনয়ী হতে হবে। হামবড়াভাব, আত্মপ্রচারবাদ, গোপনীয়তা ফাঁস করা, নিজেকে কেউকেটা, পণ্ডিত হিসেবে জাহির করা ইত্যাদি পরিহার করতে হবে। তাকে স্বজনপ্রীতি ও প্রতিশোধবাদ থেকে মুক্ত হতে হবে। তাকে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা ও তত্ত্ব জাহির থেকে বিরত থাকতে হবে, ভাবগম্ভীর ও প্রাণবন্ত হতে হবে।

অনুসন্ধানকারী সম্পর্কে ভাল ধারণা না হলে যে স্তর থেকে অনুসন্ধানকারী প্রেরিত হয়েছে সে স্তর সম্পর্কে ধারণা খারাপ হবে।

এ কারণে অনুসন্ধানকারী উচ্চস্তরের প্রতিনিধি বা সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই ভাল হতে হবে, এদের কারণে উচ্চস্তর সম্পর্কে নিম্নস্তরের সম্পর্কের অবনতি যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এদেরকে হতে হবে আদর্শস্থানীয়।

ব্যাপক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে যথাযথ কেডার ইতিহাস তৈরী ও যাচাই করতে হবে। নিয়মিত এ ধরনের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

প্রতিটি নতুন যোগাযোগের জন্য ফরম পূরণ করতে হবে এবং কেডার ইতিহাস রাখতে হবে।

উপরের পয়েন্টগুলোকে অতিমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করতে হবে।

এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে শত্রুচর, খারাপ লোকদের পার্টিতে অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাবে।

১৯। প্রতি অপারেশনে পতাকা উত্তোলন করতে হবে।

২০। সামরিক ক্ষেত্রে রক্ষণশীলতা (ডান বিচ্যুতি) ও দোদুল্যমানতা পরিত্যাগ করে সামরিক তৎপরতা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং উন্নততর পর্যায়ে উন্নীত করতে হবে।

২১। শীতের মৌসুমে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতা বজায় রাখতে হবে এবং যাদের স্বাবলম্বীতা নেই তাদেরকে স্বাবলম্বী হতে হবে।

২২। সামরিক রণনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসমুহে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে শক্তির ভারসাম্য আমাদের অনুকুলে আনতে হবে।

২৩। অপারেশনের পূর্বে গেরিলাদের নিকট আবেগপূর্ণ বক্তৃতা দিয়ে তাদেরকে বিপ্লবী প্রেরণায় উদ্ধুদ্ধ করতে হবে।

২৪। উচ্চস্তর প্রদত্ত দায়িত্বসমূহ যথাযথভাবে পালন করতে হবে। পরামর্শ, নির্দেশসমুহ যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে।

এর ফলে বহু বিপর্যয় ঠেকানো যাবে।

উচ্চস্তরের নির্দেশ-পরামর্শ যথাযথভাবে পালন করার ক্ষেত্রে কোন পক্ষ গড়িমসি করলে বা বাঁধা সৃষ্টি করলে সঙ্গে সঙ্গে ঐ বিষয় উচ্চস্তরকে অবহিত করা।

২৫। ভারী অস্ত্রাদি সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালানো।

২৬। সামরিক লক্ষ্যবস্তু নির্ণয়ের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পয়েন্টসমুহের প্রতি কঠোর দৃষ্টি রাখা-

এমন সাংগঠনিক কাজ থাকতে হবে যেখানে নিরাপদে গেরিলারা থাকতে পারে, চলাফেরা করা ও অনুসন্ধান চালাতে পারে।

আক্রমণের জন্য একত্রিত হওয়ার এবং শেষ মুহুর্তের অনুমতির স্থান থাকতে হবে।

অপারেশন শেষে আশ্রয় নেওয়ার স্থান থাকতে হবে।

প্রাপ্ত লাভসমুহ ধরে রাখার অবস্থা থাকতে হবে।

গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার সমস্যা নেই।

হামলার ক্ষেত্রে ক্রমান্বয়ে উন্নততর পর্যায়ে যাওয়া উচিৎ।

কেবল ফাঁড়ি বা থানা দখল নয়, সাথে সাথে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান, জাতীয় শত্রু উৎখাত অভিযান চালাতে হবে।

২৭। আন্ত-আঞ্চলিক বেতার সংযোগ স্থাপন করতে হবে।

২৮। সামরিক পরিকল্পনায় আমাদের ফায়ারিং লাইনে গেরিলা নিয়োগ না করা।

নোট

১। বস্তু গতিশীল, পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত বিকাশলাভ করছে এবং পরিবর্তিত হচ্ছে। এ কারণে গতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি ও কৌশল এবং কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। যান্ত্রিকতা ও অনমনীয়তা পরিহার করতে হবে। যান্ত্রিকতা ও অনমনীয়তা বস্তুর গতির সাথে খাপ খায়না, তাই তা ভুল। ইহা আত্মগতভাবেরই বহিঃপ্রকাশ।