পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি কর্তৃক রচনা ও প্রকাশ মধ্য ১৯৭৩
কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বাংলাদেশ কর্তৃক সর্বহারা পথ (www.sarbaharapath.com) এর অনলাইন প্রকাশনা ৭ নভেম্বর ২০১৪
পিডিএফ
● পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতি ‘পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির বিজয় অনিবার্য’ দলিলটিতে পার্টির অতিশয় মূল্যবান অভিজ্ঞতার সারসকংকলন যথাযথভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
দলিলটির মাধ্যমে বর্ণিত অভিজ্ঞতা বাস্তবায়িত করার জন্য সকল কমরেডদের আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
● চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করা এবং কর্মরীতিকে সংশোধন করা আর কমরেড সিরাজ সিকদারের নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য একটি আন্দোলন পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে।
ইহা সমগ্র বর্ষাকালীন রণনৈতিক আক্রমণের সময়ে চালিয়ে যেতে হবে এবং বিরাটাকার বিজয় আনয়ন করতে হবে।
চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করা বলতে বুঝায় ক্ষুদে বুর্জোয়া ও অন্যান্য অসর্বহারা চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করা, সর্বহারার চিন্তাধারা রপ্ত করা।
কর্মপদ্ধতিকে সংশোধন করা বলতে বুঝায় ক্ষুদে বুর্জোয়া ও অন্যান্য অসর্বহারা কর্মপদ্ধতি সংশোধন করে সর্বহারার কর্মপদ্ধতি চালু করা।
কমরেড সিরাজ সিকদারেরে নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে মতাদর্শগত, রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও সামরিক ক্ষেত্রে।
চিন্তাধারার পরিবর্তন ও কর্মপদ্ধতি সংশোধনের আন্দোলন পরিচলনার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির অষ্টম ইশতেহারের ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শের বহিঃপ্রকাশ, মতাদর্শগত দলিলের ২য় প্রবন্ধ, কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতি, সভাপতি মাওয়ের উদ্ধৃতির চিন্তাধারার পদ্ধতি ও কর্মপদ্ধতি, দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে ইত্যাদি অধ্যয়ন করতে হবে।
কমরেড সিরাজ সিকদারের নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার আন্দোলন পরিচালনার জন্য ১নং লাল ঝাণ্ডার সম্পাদকীয়, ২নং, ৩নং লাল ঝাণ্ডা, পরিশিষ্ট ১, ২, চক্রের জবাব, কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতি—বিজয় অনিবার্য পাঠ করতে হবে।
● চিন্তাধারার পরিবর্তন ও কর্মপদ্ধতি সংশোধন করা গোড়ামীবাদ বিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পরবর্তী পদক্ষেপ। এ শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে গোড়ামীবাদ ও সংকীর্ণ অভিজ্ঞতাবাদ দূর করার প্রক্রিয়ায় চিন্তাধারাকে পরিবর্তন ও কর্মপদ্ধতি সংশোধন করা সম্ভব।
এ কারণে গোড়ামীবাদ বিরোধী শুদ্ধি অভিযান ভালভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
● গোড়ামীবাদ বিরোধী শুদ্ধি অভিযানের প্রাক্কালে সংকীর্ণ অভিজ্ঞতাবাদকে বিরোধিতা করতে হবে।
আমাদের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে সংকীর্ণ অভিজ্ঞতাবাদী নেতৃত্ব কোন অঞ্চলের কার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে না।
সংকীর্ণ অভিজ্ঞতাবাদী কমরেডরা অভিজ্ঞতাকে তত্ত্বের সাহায্যে সারসংকলন করে না, নিয়মবিধি বের করে সে অনুযায়ী কাজ করে না।
মস্তিষ্কহীন আনুষ্ঠানিকতা (brainless routinism), নিয়মকানুন, যান্ত্রিকতা দ্বারা পরিচালিত হয়, তারা নিজেদের ও কর্মীদের মানোন্নয়ন করতে পারে না। নতুন ও পুরাতন—এর মধ্যকার দ্বন্দ্বের মাঝে পুরাতনকে প্রাধান্য দেয়, এভাবে রক্ষণশীল হয়। তারা আংশিক আপেক্ষিক সত্যকে চিরন্তন ও সার্বজনীন সত্য বলে মনে করে, তারা দোষ স্বীকার ও আত্মসমালোচনা যথাযথভাবে করতে পারে না।
তারা গোড়ামীবাদের লেজুড়বৃত্তি করে বা তাদের ভয় করে, এড়িয়ে চলে।
● ক্ষুদে উৎপাদন ব্যবস্থায় সুদীর্ঘদিন কোন পরিবর্তন আসে না, এ কারণে মস্তিষ্ক পরিবর্তন না করার সাথে অভ্যস্থ হয়ে যায়। এ থেকে আসে রক্ষনশীলতা।
রক্ষণশীলতা হচ্ছে নতুন ও পুরাতনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের পুরাতনকে প্রাধান্য দেওয়া।
গতিশীলতা হচ্ছে নতুন দিককে প্রাধান্য দেওয়া।
পুরাতন ও নতুন দিকের সংগ্রাম, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতায় নতুন দিক প্রাধান্য পায়, এ কারণে বিকাশ ও গতি হয়, পরিবর্তন আসে।
প্রতিযোগিতা ও পরিবরতনই হচ্ছে জীবন। কাজেই নতুন ও পুরাতন দিকের মাঝে নতুন দিককে প্রাধান্য দেওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনা করা, গতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।
কর্মী, সহানুভূতিশীল, সমর্থক, অঞ্চল, নেতৃত্বের মাঝে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করা উচিত, অযোগ্যদের বাতিল করা উচিত।
অন্যথায় আমলাতন্ত্র ও স্থবিরতা ঢুকবে।
কোন কোন অঞ্চল এ তত্ত্ব প্রয়োগ করে ভাল ফল পাচ্ছে।
● বিকাশের সাথে সাথে শ্রম বিভাগ, আনুষ্ঠানিকতা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন।
একটি ছোট মুদি দোকানের মালিক নিজেই পণ্য ক্রয় করে আনে, বিক্রি করে এবং হিসেব রাখে। কিন্তু এ দোকানটিই একটি আধুনিক বড় দোকানে রূপান্তরিত হলে প্রয়োজন হবে একজন পণ্য কেনার দায়িত্বে নিযুক্ত লোক (Purchase Officer), হিসেব রক্ষক (Cashier), সেলসম্যান এবং পরিচালনার জন্য ম্যানেজার (এগুলো হচ্ছে শ্রমবিভাগ)। দোকান পরিচালনার জন্য প্রয়োজন কতগুলি নিয়মকানুন ও আনুষ্ঠানিকতা, স্বাক্ষর, অনুমতি (পত্র আনুষ্ঠানিকতা); উন্নততর ক্রয়-বিক্রয়ের ও পরিচালনার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
কাজেই আমাদের সংগঠনও যেভাবে বিকাশ লাভ করছে তার সাথে যুক্ত করতে হবে প্রয়োজনীয় শ্রমবিভাগ, আনুষ্ঠানিকতা; পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এগুলো কার্যকরী হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে।
● পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সদস্য/প্রার্থী সদস্যদের সর্বনিম্ন মান হচ্ছে সক্রিয় কর্মী।
● ক্ষুদে বুর্জোয়া মতাদর্শের বহিঃপ্রকাশসমূহ দূর না করলে নেতৃত্বে যোগ্যতা অর্জন, উন্নত মানবিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব নয়।
● উচ্চস্তরের সকল মৌখিক ও লিখিত নির্দেশ পরামর্শসমূহ অবশ্যই কঠোরভাবে কার্যকরী করতে হবে। মনে না থাকলে লিখে রাখতে হবে। এ ধরনের পরামর্শ, নির্দেশ যথযথভাবে কার্যকরী না করার ফলে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে, কোন কোন কর্মী নিজের, অন্য কমরেডদের ও অঞ্চলের বিপদ ডেকে এনেছে।
● কর্মী, সহানুভূতিশীল, সমর্থকদের দলিল প্রদানের সময় তাদের প্রয়োজন ও মান অনুযায়ী দলিল, পুস্তক দেওয়া এবং পড়ানো উচিত।
দলিল দেওয়া ও পড়ানোর সময় একটি পরিকল্পনা ও ক্রম অনুযায়ী অগ্রসর হওয়া উচিত, নীচু প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চস্তরে যাওয়া উচিত। এ পরিকল্পনা পরিচালকের ঠিক করে দেওয়া উচিত।
● কোন একটি শহরে প্রচার টিম সাফল্যজনক প্রচার তৎপরতা চালিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে প্রচার টিম চড়ুই পাখির মত হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রচার চালিয়ে সরে পড়তে পারে। এ ধরণের প্রচার টিম সকল শহরেই চালানো সম্ভব।
● পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির কর্মীদের বিশেষ করে সার্বক্ষণিক কর্মীদের শারীরিক ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
এ কারণে তাদেরকে স্বাস্থ্যরক্ষা করতে হবে, খাদ্য গ্রহণে খাদ্যপ্রাণ (Vitamin) এবং প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। [১]
সিগারেট খাওয়া কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া এবং শারীরিক ক্ষতির একটি অন্যতম কারণ। এ কারণে সিগারেট খাওয়া কমানো বা পরিহার করা উচিত।
● পূর্ববাংলার জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠন করার সিদ্ধান্ত খুবই সময়োপযোগী হয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে।
● জাতীয় মুক্তি ফ্রন্টের চাঁদার রশিদ পেশ করা হচ্ছে।
● পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সকল ইশতেহারসমূহ একসাথে প্রকাশ করার প্রস্তাব করা হচ্ছে।
● পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির অষ্টম ইশতেহার খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ইশতেহারের সকল সিদ্ধান্ত সকল অঞ্চল অবশ্যই বাস্তবায়িত করবে।
নোটঃ
১। নিম্নলিখিত খাদ্যপ্রাণ ও ঔষধ গ্রহণ করা উচিত—
প্রতিদিন ভোর দুপুর রাত
Vitamin B Complex ১ ১ ১
Vitamin A ১ X ১
Vitamin C ১ ১ ১
Iron Tab ১ X ১
or Multi Vitamin ১ X ১
কলেরা, টাইফয়েড, বসন্ত ভ্যাকসিন নেয়া।
শুধু ভাত, ডাল, রুটি, আলু যারা খান তারা দুটো ডিম, দু’ গ্লাস দুধ, যে কোন ধরণের মাংস, শাকের সিদ্ধ পানি খাবেন। গ্লাসে করে গরম পানি খাওয়া □